চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল চেয়ে উপদেষ্টাদের কাছে কর্মচারীদের স্মারকলিপি

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৫, ১৭: ২৩

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবি জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন সচিবালয়ের কর্মচারীদের একাংশ। রোববার দুপুরে সচিবালয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা জিরওয়ানা হাসানের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

বিজ্ঞাপন

সোমবার তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূইঁয়া কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করবেন বলেও জানিয়েছেন কর্মচারীরা।

চাকরি অধ্যাদেশের বিষয়ে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘অধ্যাদেশটি আমি দেখেছি। ইতোমধ্যেই আমি বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজনের নজরে এনেছি। এখানে কিছু প্রভিশন আছে, যেগুলো অপপ্রয়োগের আশঙ্কা রয়েছে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমি প্রধান উপদেষ্টার কাছেও বিষয়টি তুলে ধরব। এই অধ্যাদেশটি রেখে কী কী সেফগার্ড করলে, এটি কর্মচারীদের কাছেও গ্রহণযোগ্য হবে তা ভেবে দেখার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ জানাবো।’

এ সময় সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম এবং কো-মহাসচিব নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দেন। তারা বলেন, ‘আমরা কেউই সরকারের প্রতিপক্ষ নই। আমরা চাই, এ অধ্যাদেশের মাধ্যমে নিরপরাধ ও নিরীহ কর্মচারীরা যাতে হয়রানি না হন। এ জন্যই আমরা আইনটি বাতিল চেয়েছি।’

‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর অধিকতর সংশোধন করে ‘সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নামে গত রোববার রাষ্ট্রপতির আদেশে আইন মন্ত্রণালয় এ অধ্যাদেশ জারি করে। অধ্যাদেশের খসড়াটি ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের শামিল বা যা অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে; অন্যান্য কর্মচারীর সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন; অন্য যেকোনো কর্মচারীকে তাঁর কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তাঁর কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন; এবং যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তাঁর কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন, তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন।

অভিযুক্ত কর্মচারীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে অধ্যাদেশে আরও বলা হয়, অভিযোগ গঠনের সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। আর অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে তাঁকে কেন দণ্ড আরোপ করা হবে না, সে বিষয়ে আরও সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। তার ভিত্তিতে দণ্ড আরোপ করা যাবে। এভাবে দণ্ড আরোপ করা হলে দোষী কর্মচারী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। তবে, রাষ্ট্রপতির দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না। যদিও আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারবেন।

এ অধ্যাদেশ জারির আগে থেকেই সচিবালয়ের কর্মচারীদের একাংশ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত