জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের অগ্রগতি প্রতিবেদন
মিলেছে বিদেশি সংশ্লিষ্টতার তথ্য-উপাত্ত, বিদ্রোহ উস্কে দিয়েছিল কিছু গণমাধ্যম
স্টাফ রিপোর্টার
পিলখানায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন তৃতীয় সংবাদ সম্মেলন করেছে। বুধবার রাজধানীর সাইন্সল্যাবে কমিশনের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় কমিশনের পক্ষে গণমাধ্যমের কাছে তদন্তের অগ্রগতি তুলে ধরেন জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতি বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান।
অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ছিল দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্রের ফল। সশস্ত্রবাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা ও গোয়েন্দা ব্যর্থতার বিষয়টিও প্রতীয়মান হয়েছে। এছাড়া বিদেশি সংশ্লিষ্টতার তথ্য-উপাত্ত এবং বিদ্রোহ উস্কে দিতে কিছু গণমাধ্যমের ভূমিকা ছিল বলেও তদন্তে প্রতীয়মান হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা সর্বশেষ অগ্রগতির পূর্ণাঙ্গ বিষয়টি তুলে ধরা হলো-
এখন পর্যন্ত কমিশনের ১১৪ কর্মদিবস অতিবাহিত হয়েছে। এ পর্যন্ত যে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
১। শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় ও সাক্ষ্য গ্রহণ
৬ জনের বিস্তারিত জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। সকল শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ২টি সম্মেলন করা হয়েছে। সেখানে পরিবারের সদস্যগণ তাঁদের অভিজ্ঞতা ও মতামত ব্যক্ত করেছেন। সম্মেলনে সকল ইচ্ছুক সদস্যদেরকে লিখিত বা কমিশনে উপস্থিত হয়ে বিস্তারিত জবানবন্দি দিতে অনুরোধ করা হয়েছে এবং অনেক শহীদ পরিবারের সদস্য ইতিমধ্যেই তা করেছেন।
২। বেঁচে ফিরে আসা অফিসারদের জবানবন্দি
১৫ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও ৫০ জন বেঁচে যাওয়া অফিসারদের লিখিত জবানবন্দি প্রদান করার জন্য সেনা সদরের মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে চিঠি দেয়া হয়েছে। ২টি সম্মেলনে তাদের সাথে সার্বিক বিষয়ে মতবিনিময় হয়েছে।
৩। পিলখানার অভ্যন্তরে সংঘটিত অপরাধের ধরণ
বেঁচে যাওয়া অফিসার ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জবানবন্দি থেকে পিলখানার অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া এক মর্মন্তুদ চিত্র পাওয়া গেছে। অফিসারদের খুঁজে খুঁজে হত্যা করা ছাড়াও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ওপর চালানো হয়েছে অমানবিক নির্যাতন। নারী ও শিশুদেরকে মারধর, সশস্ত্র অবস্থায় হুমকি প্রদান, বাড়িঘর ভাংচুর, অমানবিক পরিবেশে খাবার ও পানি ছাড়া কোয়ার্টার গার্ডে দীর্ঘসময় আটকে রাখা, রাষ্ট্রের এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধ্বংস সাধন, আলামত ধ্বংস, অগ্নিসংযোগ ছাড়াও নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য আরো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
৪। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সাক্ষ্য
৮ জন সংশ্লিষ্ট রাজনীতিবিদের জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জনের সাক্ষাৎকার কারাগারে নেয়া হয়েছে। ৩ জন উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ২ জন পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা ইমেইলে জবানবন্দি দিয়েছেন।
৫। সামরিক ব্যক্তিবর্গ
৫৫ জন সামরিক অফিসার যারা বিভিন্নভাবে পিলখানা ট্র্যাজেডির সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন বা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন তাদের জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক সাবেক সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী প্রধান, বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান ও অন্যান্য উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।
৬। অসামরিক ব্যক্তিবর্গ
২০ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক, আমলা ও পূর্বতন তদন্ত কমিটির সদস্যবৃন্দ।
৭। পুলিশ কর্মকর্তা
তৎকালীন আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার ও অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে।
৮। বেসরকারি ব্যক্তিবর্গ
৯ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী, টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তি যাদের কাছে ঘটনা সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত রয়েছে।
৯। কারাগারে দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ
কারাগারে দণ্ডপ্রাপ্ত ২৫ জন বিডিআর সদস্যের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। তারা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এবং ঘটনার সাথে কারা জড়িত সে সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য দিয়েছে যেগুলো এখন বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আরো সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।
১০। বিডিআর সদস্যদের সাক্ষ্যগ্রহণ
২৯ জন কারামুক্ত বিডিআর সদস্যের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে।
১১। মোট সাক্ষ্য গ্রহণ
সর্বমোট ১৫৮ জনের সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে এবং আরো আনুমানিক ৫০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ বাকি আছে।
১২। বিদেশি সংস্থা ও দূতাবাস
৬টি দেশের দূতাবাস ও ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় থেকে তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
১৩। অন্যান্য সাক্ষ্য গ্রহণ
পিলখানা ট্র্যাজেডি সংক্রান্ত কোনো তথ্য আছে এইরূপ ব্যক্তিবর্গ/প্রতিষ্ঠান/গণমাধ্যমকে কমিশনের নিকট তথ্য প্রদান করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
১৪। প্রিন্ট মিডিয়া (সংবাদপত্র) থেকে প্রাপ্ত সংবাদ পর্যালোচনা
কমিশনের একটি টিম তৎকালীন সকল পত্র-পত্রিকা বিশ্লেষণ করেছে এবং সেখান থেকে এখন প্রাপ্ত তথ্য কমিশনের ইনভেস্টিগেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এ সংরক্ষণ করা হয়েছে।
১৫। ডিজিটাল এভিডেন্স (ভিডিও/সিসি টিভি ফুটেজ/ছবি)
কমিশন বিভিন্ন উৎস থেকে অসংখ্য ভিডিও ফুটেজ, ছবি ও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। এগুলো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ফরেনসিক অ্যানালাইসিস করার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থায় প্রেরণ করা হয়েছে।
১৬। প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন
কমিশন ইতোমধ্যে বিজিবির ঘটনাস্থল, ডিজিএফআই এবং র্যাব সদরদপ্তর পরিদর্শন করে নানাবিধ দলিল-দস্তাবেজ ও তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছে এবং করছে।
১৭। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পত্রের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য (মোট পত্রালাপের সংখ্যা)
২৫টি সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় কমিশন তথ্য সংগ্রহের জন্য ৩১৬টি পত্র প্রেরণ করেছে; যার মধ্যে ১০৯টির উত্তর পাওয়া গেছে। বাকিগুলোর উত্তর পাওয়ার জন্য কমিশন যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।
১৮। সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত কোর্ট অব ইনকোয়েরি (১১ জুন ২০০৯)
সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত কোর্ট অব ইনকোয়েরির মূল প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে এবং আরো তদন্ত চলমান রয়েছে। প্রতিবেদনটির আরো বিচার-বিশ্লেষণ চলছে।
১৯। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন (১১ মে ২০০৯)
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে।
২০। তৎকালীন বিডিআর কর্তৃক পরিচালিত কোর্ট অব ইনকোয়েরি
তৎকালীন বিডিআরের বিভিন্ন ইউনিট কর্তৃক পরিচালিত কোর্ট অব ইনকোয়েরির ৫৭টি তদন্ত প্রতিবেদন সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
২১। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য (ই-মেইল/জবানবন্দি/ভিডিও ক্লিপ)
যেকোনো ব্যক্তি কমিশনের ইমেইল অ্যাড্রেস এ তথ্য প্রেরণ করতে পারেন। কমিশন ইমেইলের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ১০৩৮টি তথ্য পেয়েছে যেগুলো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
২২। গ্রন্থ ও অন্যান্য দলিলাদি বিশ্লেষণ
i। Book: Coalition Years by Pronab Mukharjee,
ii। Book: India's Near East: A New History by Avinash Paliwal, More than Mutiny- India Today, Journalist Saurabh Shukla,
iii। জাতীয় সংসদ অধিবেশনের কার্যবিরণীর অনুলিপি (২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ০৩ মার্চ ২০০৯)
এগুলো ছাড়াও আরো সংশ্লিষ্ট গ্রন্থ ও দলিলাদি সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
খ) প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত থেকে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নানা মাত্রায় সংশ্লিষ্টতার যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং বর্তমানে তথ্য-প্রমাণ যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সালে পিলখানায় সংঘটিত এই হত্যাকান্ডটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্রের ফল হিসেবে কমিশনের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে।
গ) বিভিন্ন সাক্ষ্য হতে প্রতীয়মান যে, রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের নামে অযথা কালক্ষেপণ করায় এবং সশস্ত্র বাহিনী ও অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনী নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে বিদ্রোহীরা নির্বিঘ্নে হত্যাকান্ড এবং অন্যান্য অপরাধ সংঘটন করতে সমর্থ হয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকেই পিলখানার ভিতর থেকে আটকে পড়া অফিসার ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বারংবার অনুরোধ ও আকুতি সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
ঘ) এই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এটা বলা যায় যে, তৎকালীন সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ড ও আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো সময়মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি এবং অপরাধ সংঘটনের সময় তারা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় ছিল। যার ফলে তারা বিদ্রোহ ও হত্যাকান্ড প্রতিহত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
ঙ) তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা ও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে এই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে প্রতীয়মান। গোয়েন্দা ব্যর্থতার স্বরূপ ও কারণ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
চ) ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা এবং আলামত ধ্বংস করার প্রয়াস প্রতীয়মান হয়েছে। এর পিছনে দায়ী ব্যক্তি ও সংস্থাগুলোকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
ছ) পিলখানায় হত্যাযজ্ঞ চলাকালে কিছু গণমাধ্যম পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ প্রচার করার মাধ্যমে বিদ্রোহ উসকে দিয়েছে এবং একইসাথে পরিকল্পিতভাবে সামরিক অফিসারদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার প্রয়াস চালিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
জ) বিদেশি সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে যেগুলো যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
ঝ) এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী কমিশন মনে করে যে, সময়মত সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই নৃশংস হত্যাকান্ড ও অন্যান্য অপরাধ প্রতিরোধ করা যেত।
৪। তদন্তের স্বার্থে গৃহীত পদক্ষেপ
ক। দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা: প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ এবং তদন্ত কার্যক্রমে অধিকতর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য কমিশন ৩৩ জন ব্যক্তির দেশ ত্যাগের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
খ। বিশেষ বিজ্ঞপ্তি: পলাতক ব্যক্তিবর্গের সাক্ষ্য প্রদানের জন্য কমিশন তিনটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সর্বশেষ প্রকাশিত বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-সংযুক্ত।
৫। কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদন
ক। প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে কমিশন তদন্ত প্রতিবেদনের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করেছে; যা বর্তমানে কমিশন সদস্যগণ পর্যালচনা করছেন।
খ। কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ চলমান রয়েছে এবং প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের জন্য আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের পুনঃসাক্ষ্যগ্রহণ প্রয়োজন হবে।
৬। চ্যালেঞ্জ সমূহ
ক। কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দৈনিক পত্রিকায় একাধিক বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে।
খ। কিছু দেশি/বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে চাহিদাকৃত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য/দলিলাদি এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কমিশন উল্লিখিত তথ্যাদি অনতিবিলম্বে সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
৭। সময় বৃদ্ধি: ৫০ জনের বেশি ব্যক্তির সাক্ষ্যগ্রহণ এখনো বাকি আছে। এছাড়া কিছু সংখ্যক ব্যক্তির পুনঃসাক্ষ্য গ্রহণেরও প্রয়োজন হবে। গৃহীত সাক্ষ্যগুলোর পূর্ণাঙ্গ লিখিতরূপ প্রস্তুত, স্বাক্ষর গ্রহণ ও বিশ্লেষণের কাজ চলমান রয়েছে—এটি একটি সময়সাপেক্ষ কাজ। কিছু বিদেশি দূতাবাস ও সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে---যার জন্য কিছু সময় প্রয়োজন। এসব বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের মেয়াদ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
কমিশন মনে করে যে, সময়মত সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই নৃশংস হত্যাকান্ড ও অন্যান্য অপরাধ প্রতিরোধ করা যেত।
পিলখানায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন তৃতীয় সংবাদ সম্মেলন করেছে। বুধবার রাজধানীর সাইন্সল্যাবে কমিশনের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় কমিশনের পক্ষে গণমাধ্যমের কাছে তদন্তের অগ্রগতি তুলে ধরেন জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতি বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান।
অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ছিল দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্রের ফল। সশস্ত্রবাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা ও গোয়েন্দা ব্যর্থতার বিষয়টিও প্রতীয়মান হয়েছে। এছাড়া বিদেশি সংশ্লিষ্টতার তথ্য-উপাত্ত এবং বিদ্রোহ উস্কে দিতে কিছু গণমাধ্যমের ভূমিকা ছিল বলেও তদন্তে প্রতীয়মান হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা সর্বশেষ অগ্রগতির পূর্ণাঙ্গ বিষয়টি তুলে ধরা হলো-
এখন পর্যন্ত কমিশনের ১১৪ কর্মদিবস অতিবাহিত হয়েছে। এ পর্যন্ত যে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
১। শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় ও সাক্ষ্য গ্রহণ
৬ জনের বিস্তারিত জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। সকল শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ২টি সম্মেলন করা হয়েছে। সেখানে পরিবারের সদস্যগণ তাঁদের অভিজ্ঞতা ও মতামত ব্যক্ত করেছেন। সম্মেলনে সকল ইচ্ছুক সদস্যদেরকে লিখিত বা কমিশনে উপস্থিত হয়ে বিস্তারিত জবানবন্দি দিতে অনুরোধ করা হয়েছে এবং অনেক শহীদ পরিবারের সদস্য ইতিমধ্যেই তা করেছেন।
২। বেঁচে ফিরে আসা অফিসারদের জবানবন্দি
১৫ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও ৫০ জন বেঁচে যাওয়া অফিসারদের লিখিত জবানবন্দি প্রদান করার জন্য সেনা সদরের মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে চিঠি দেয়া হয়েছে। ২টি সম্মেলনে তাদের সাথে সার্বিক বিষয়ে মতবিনিময় হয়েছে।
৩। পিলখানার অভ্যন্তরে সংঘটিত অপরাধের ধরণ
বেঁচে যাওয়া অফিসার ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জবানবন্দি থেকে পিলখানার অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া এক মর্মন্তুদ চিত্র পাওয়া গেছে। অফিসারদের খুঁজে খুঁজে হত্যা করা ছাড়াও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ওপর চালানো হয়েছে অমানবিক নির্যাতন। নারী ও শিশুদেরকে মারধর, সশস্ত্র অবস্থায় হুমকি প্রদান, বাড়িঘর ভাংচুর, অমানবিক পরিবেশে খাবার ও পানি ছাড়া কোয়ার্টার গার্ডে দীর্ঘসময় আটকে রাখা, রাষ্ট্রের এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধ্বংস সাধন, আলামত ধ্বংস, অগ্নিসংযোগ ছাড়াও নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য আরো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
৪। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সাক্ষ্য
৮ জন সংশ্লিষ্ট রাজনীতিবিদের জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জনের সাক্ষাৎকার কারাগারে নেয়া হয়েছে। ৩ জন উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ২ জন পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা ইমেইলে জবানবন্দি দিয়েছেন।
৫। সামরিক ব্যক্তিবর্গ
৫৫ জন সামরিক অফিসার যারা বিভিন্নভাবে পিলখানা ট্র্যাজেডির সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন বা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন তাদের জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক সাবেক সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী প্রধান, বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান ও অন্যান্য উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।
৬। অসামরিক ব্যক্তিবর্গ
২০ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক, আমলা ও পূর্বতন তদন্ত কমিটির সদস্যবৃন্দ।
৭। পুলিশ কর্মকর্তা
তৎকালীন আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার ও অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে।
৮। বেসরকারি ব্যক্তিবর্গ
৯ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী, টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তি যাদের কাছে ঘটনা সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত রয়েছে।
৯। কারাগারে দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ
কারাগারে দণ্ডপ্রাপ্ত ২৫ জন বিডিআর সদস্যের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। তারা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এবং ঘটনার সাথে কারা জড়িত সে সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য দিয়েছে যেগুলো এখন বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আরো সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।
১০। বিডিআর সদস্যদের সাক্ষ্যগ্রহণ
২৯ জন কারামুক্ত বিডিআর সদস্যের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে।
১১। মোট সাক্ষ্য গ্রহণ
সর্বমোট ১৫৮ জনের সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে এবং আরো আনুমানিক ৫০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ বাকি আছে।
১২। বিদেশি সংস্থা ও দূতাবাস
৬টি দেশের দূতাবাস ও ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় থেকে তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
১৩। অন্যান্য সাক্ষ্য গ্রহণ
পিলখানা ট্র্যাজেডি সংক্রান্ত কোনো তথ্য আছে এইরূপ ব্যক্তিবর্গ/প্রতিষ্ঠান/গণমাধ্যমকে কমিশনের নিকট তথ্য প্রদান করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
১৪। প্রিন্ট মিডিয়া (সংবাদপত্র) থেকে প্রাপ্ত সংবাদ পর্যালোচনা
কমিশনের একটি টিম তৎকালীন সকল পত্র-পত্রিকা বিশ্লেষণ করেছে এবং সেখান থেকে এখন প্রাপ্ত তথ্য কমিশনের ইনভেস্টিগেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এ সংরক্ষণ করা হয়েছে।
১৫। ডিজিটাল এভিডেন্স (ভিডিও/সিসি টিভি ফুটেজ/ছবি)
কমিশন বিভিন্ন উৎস থেকে অসংখ্য ভিডিও ফুটেজ, ছবি ও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। এগুলো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ফরেনসিক অ্যানালাইসিস করার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থায় প্রেরণ করা হয়েছে।
১৬। প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন
কমিশন ইতোমধ্যে বিজিবির ঘটনাস্থল, ডিজিএফআই এবং র্যাব সদরদপ্তর পরিদর্শন করে নানাবিধ দলিল-দস্তাবেজ ও তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছে এবং করছে।
১৭। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পত্রের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য (মোট পত্রালাপের সংখ্যা)
২৫টি সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় কমিশন তথ্য সংগ্রহের জন্য ৩১৬টি পত্র প্রেরণ করেছে; যার মধ্যে ১০৯টির উত্তর পাওয়া গেছে। বাকিগুলোর উত্তর পাওয়ার জন্য কমিশন যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।
১৮। সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত কোর্ট অব ইনকোয়েরি (১১ জুন ২০০৯)
সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত কোর্ট অব ইনকোয়েরির মূল প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে এবং আরো তদন্ত চলমান রয়েছে। প্রতিবেদনটির আরো বিচার-বিশ্লেষণ চলছে।
১৯। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন (১১ মে ২০০৯)
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে।
২০। তৎকালীন বিডিআর কর্তৃক পরিচালিত কোর্ট অব ইনকোয়েরি
তৎকালীন বিডিআরের বিভিন্ন ইউনিট কর্তৃক পরিচালিত কোর্ট অব ইনকোয়েরির ৫৭টি তদন্ত প্রতিবেদন সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
২১। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য (ই-মেইল/জবানবন্দি/ভিডিও ক্লিপ)
যেকোনো ব্যক্তি কমিশনের ইমেইল অ্যাড্রেস এ তথ্য প্রেরণ করতে পারেন। কমিশন ইমেইলের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ১০৩৮টি তথ্য পেয়েছে যেগুলো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
২২। গ্রন্থ ও অন্যান্য দলিলাদি বিশ্লেষণ
i। Book: Coalition Years by Pronab Mukharjee,
ii। Book: India's Near East: A New History by Avinash Paliwal, More than Mutiny- India Today, Journalist Saurabh Shukla,
iii। জাতীয় সংসদ অধিবেশনের কার্যবিরণীর অনুলিপি (২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ০৩ মার্চ ২০০৯)
এগুলো ছাড়াও আরো সংশ্লিষ্ট গ্রন্থ ও দলিলাদি সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
খ) প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত থেকে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নানা মাত্রায় সংশ্লিষ্টতার যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং বর্তমানে তথ্য-প্রমাণ যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সালে পিলখানায় সংঘটিত এই হত্যাকান্ডটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্রের ফল হিসেবে কমিশনের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে।
গ) বিভিন্ন সাক্ষ্য হতে প্রতীয়মান যে, রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের নামে অযথা কালক্ষেপণ করায় এবং সশস্ত্র বাহিনী ও অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনী নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে বিদ্রোহীরা নির্বিঘ্নে হত্যাকান্ড এবং অন্যান্য অপরাধ সংঘটন করতে সমর্থ হয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকেই পিলখানার ভিতর থেকে আটকে পড়া অফিসার ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বারংবার অনুরোধ ও আকুতি সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
ঘ) এই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এটা বলা যায় যে, তৎকালীন সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ড ও আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো সময়মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি এবং অপরাধ সংঘটনের সময় তারা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় ছিল। যার ফলে তারা বিদ্রোহ ও হত্যাকান্ড প্রতিহত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
ঙ) তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা ও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে এই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে প্রতীয়মান। গোয়েন্দা ব্যর্থতার স্বরূপ ও কারণ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
চ) ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা এবং আলামত ধ্বংস করার প্রয়াস প্রতীয়মান হয়েছে। এর পিছনে দায়ী ব্যক্তি ও সংস্থাগুলোকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
ছ) পিলখানায় হত্যাযজ্ঞ চলাকালে কিছু গণমাধ্যম পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ প্রচার করার মাধ্যমে বিদ্রোহ উসকে দিয়েছে এবং একইসাথে পরিকল্পিতভাবে সামরিক অফিসারদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার প্রয়াস চালিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
জ) বিদেশি সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে যেগুলো যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
ঝ) এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী কমিশন মনে করে যে, সময়মত সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই নৃশংস হত্যাকান্ড ও অন্যান্য অপরাধ প্রতিরোধ করা যেত।
৪। তদন্তের স্বার্থে গৃহীত পদক্ষেপ
ক। দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা: প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ এবং তদন্ত কার্যক্রমে অধিকতর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য কমিশন ৩৩ জন ব্যক্তির দেশ ত্যাগের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
খ। বিশেষ বিজ্ঞপ্তি: পলাতক ব্যক্তিবর্গের সাক্ষ্য প্রদানের জন্য কমিশন তিনটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সর্বশেষ প্রকাশিত বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-সংযুক্ত।
৫। কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদন
ক। প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে কমিশন তদন্ত প্রতিবেদনের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করেছে; যা বর্তমানে কমিশন সদস্যগণ পর্যালচনা করছেন।
খ। কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ চলমান রয়েছে এবং প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের জন্য আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের পুনঃসাক্ষ্যগ্রহণ প্রয়োজন হবে।
৬। চ্যালেঞ্জ সমূহ
ক। কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দৈনিক পত্রিকায় একাধিক বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে।
খ। কিছু দেশি/বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে চাহিদাকৃত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য/দলিলাদি এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কমিশন উল্লিখিত তথ্যাদি অনতিবিলম্বে সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
৭। সময় বৃদ্ধি: ৫০ জনের বেশি ব্যক্তির সাক্ষ্যগ্রহণ এখনো বাকি আছে। এছাড়া কিছু সংখ্যক ব্যক্তির পুনঃসাক্ষ্য গ্রহণেরও প্রয়োজন হবে। গৃহীত সাক্ষ্যগুলোর পূর্ণাঙ্গ লিখিতরূপ প্রস্তুত, স্বাক্ষর গ্রহণ ও বিশ্লেষণের কাজ চলমান রয়েছে—এটি একটি সময়সাপেক্ষ কাজ। কিছু বিদেশি দূতাবাস ও সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে---যার জন্য কিছু সময় প্রয়োজন। এসব বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের মেয়াদ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
কমিশন মনে করে যে, সময়মত সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই নৃশংস হত্যাকান্ড ও অন্যান্য অপরাধ প্রতিরোধ করা যেত।
পরে অন্য সিনিয়র রিপোর্টারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এ্যানি। এ সময় আমার দেশ-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, বার্তা সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন, ভারপ্রাপ্ত চিফ রিপোর্টার বাছির জামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
৭ মিনিট আগেসেন্টমার্টিন দ্বীপে নৌযান চলাচলের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হবে। বুধবার মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
১ ঘণ্টা আগেতিনি আরো বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় ও এসেম্বলিতে তামাকের ক্ষতিকারক দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। এছাড়া শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের সময়েও এ বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এ সময় উপদেষ্টা তামাকমুক্ত বিদ্যালয় ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
২ ঘণ্টা আগেআগামী শুক্র ও শনিবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের শুল্কায়ন কার্যক্রম পুরোদমে চলবে। এ জন্য ঢাকা কাস্টমস হাউসের সব শুল্ক দলের অফিস খোলা থাকবে। বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এসংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে।
৩ ঘণ্টা আগে