কাজী আনিস পরিবারের অর্থপাচার এবং সফট পাওয়ার কৌশলে হাসিনার লবিং

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪: ২২

দ্য ফিউচার ফোরামের আয়োজনে সিরিজ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের অংশ হিসেবে রোববার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ-তে ‘সফট পাওয়ার, হার্ড অ্যাবিউজ’: আওয়ামী লীগের মিডিয়া মাফিয়া’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন হয়।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা লিট ফেস্টের প্রতিষ্ঠাতা আহসান আকবার, সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশরাফ কায়সার প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে আহসান আকবার জানান, বাংলাদেশের মিডিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের একটি বিপজ্জনক অস্ত্র, ‘সফট পাওয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করেছে। ক্ষমতাচ্যুত সাবেক সরকার ‘সফট পাওয়ার’ ব্যবহার করে তাদের সহযোগীদের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে একটি নির্মম ও অগণতান্ত্রিক শাসনকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলো। স্থানীয় মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ ও ২০১৮ সালে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (পরবর্তীতে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট) প্রয়োগের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী সফট পাওয়ার প্রচারের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তের বাইরেও এই নেটওয়ার্ক আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক লবিস্ট নিয়োগ, মার্কিন কংগ্রেসের কিছু সন্দেহজনক সদস্যকে অর্থ প্রদান, পক্ষপাতমূলক মতামত প্রকাশ করা, সিআরআই (সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন) প্রতিষ্ঠা, পেন বাংলাদেশ দখল ও ঢাকা লিট ফেস্ট প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার এরই উদাহরণ।

এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ভুল তথ্য প্রচার ও অনেক মিথ্যা বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছিল যা মুসলিম-বিরোধী, হিন্দুত্ববাদী ও জায়নবাদী হিসেবেও পরিচিত।

সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই আন্তর্জাতিক ভাবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনকে লাখ লাখ ডলার প্রদান করা হয়েছিল, যা বাংলাদেশের আইনে অর্থপাচারের শামিল। এগুলো আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় সফট ন্যারেটিভ প্রচারের প্রচেষ্টা। বিদেশী একটি গণমাধ্যমে ২০২৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের জন্য ওয়াশিংটন ডিসিতে লিবার্টি সাউথ এশিয়া নামের লবিস্ট নিয়োগ করা হয় যার অর্থ প্রদান করা হয়েছিল দুবাইভিত্তিক গ্রিন পার্সপেক্টিভ নামের একটি কোম্পানির মাধ্যমে। কোম্পানিটি চা, কফি ও স্ন্যাকস বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধিত।

তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় স্ট্রাইক গ্লোবাল ডিপ্লোম্যাসি (এসজিডি) ও আওয়ামী লীগ সরকারের প্রাক্তন প্রধান সচিব আহমদ কায়কাউস মোরান গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিস (এমজিএস)-কে আন্তর্জাতিক প্রগাগন্ডা চালাতে অর্থ দিয়েছিলেন।

সিআরআই নামের যে প্রপাগান্ডা সংস্থাটি প্রাক্তন একনায়ক শেখ হাসিনার ভাগ্নের নেতৃত্বে ছিল, তা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রভাব বিস্তার করেছিল।

তিনি বলেন, জেমকন গ্রুপের সাবেক ব্যবসায়িক অংশীদার আহসান আকবারের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের মার্চ থেকে ২০২৫ সালের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে মামলা এবং আইনি হয়রানি করা হয়েছে। জেমকন গ্রুপ স্থানীয় ঋণের পরিমাণ ১ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

ইউনিভার্সিটি অব লিবারাল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)-এর সাম্প্রতিকালে ছাত্র প্রতিবাদও এক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ছাত্ররা ফ্যাসিবাদী শাসনের সমর্থক জেমকন গ্রুপের দুর্নীতিগ্রস্ত ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের বিরোধিতা করায় ‘জুলাই বিপ্লব’-এর ছাত্রদের সন্ত্রাসীর তকমা দেওয়া হয়। এই আন্দোলনে বর্তমানে পদ স্থগিত থাকা উপাচার্য ইমরান রহমানের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয় যিনি বোর্ডকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করছেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত