রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছয়জন আওয়ামীপন্থি ডিনের অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার বেলা ১২টায় ডিনস কমপ্লেক্সে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ডিনদের কার্যালয়ে এ তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় তারা ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম, সংগ্রাম’, ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ইনকিলাব, ইনকিলাব, জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ’, ‘আওয়ামী ডিনদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এ সময় রাকসুর সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক জায়িদ হাসান জোহা বলেন, আমরা চাইনা আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠুক, আবার আমাদের কাদে চড়ে বসুক। আমরা যারা এটা চাইনা তারা আজকে একত্রিত হয়েছি। আওয়ামীপন্থি যে ছয় জন ডিন রয়েছেন। আমরা যদি নৈতিকতার খাতিরে বলি তাহলে তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে আমরা কিছু বলিনি। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তারা কোনোভাবে এই পদগুলোতে থাকার যোগ্যতা রাখে না। এটা জুলাই বিপ্লবের সাথে গাদ্দারি, জুলাইয়ের রক্তের সাথে বেইমানি।
রাবি সিনেট সদস্য আকিল বিন তালেব বলেন, জুলাই পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাসে যে পরিবর্তন ও তথাকথিত বিপ্লবী প্রশাসন গঠিত হয়েছিল। তাদের কাছে আমরা বারবার আমাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো তুলে ধরেছি। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা সংকটসহ নানা সমস্যার কথা জানালেও জুলাইয়ের সেই চেতনা ও স্পিরিটকে বাস্তবে লালনের ক্ষেত্রে আমরা সঙ্গতিপূর্ণ উদ্যোগ দেখতে পাইনি। জুলাইয়ের অন্যতম শক্তি হাদি ভাইকে যেভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তা আমাদের গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। আমরা স্পষ্টভাবে দেখছি, এসব ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা জড়িত এবং তাদেরকে ভারতের ভেতরে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামীপন্থি ৬ ডিনসহ ১২ জনের মেয়াদ শেষ হয়। এরই প্রেক্ষিতে রেজিস্ট্রার বলেছিলেন যে সামনে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ডিনদের নির্বাচন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এক বছর যেহেতু রাখতে পেরেছি আর কিছুদিন রাখলেও সমস্যা হবে না। এই মন্তব্যের জেরে ক্ষোভে ফুসে উঠেন শিক্ষার্থীরা এবং রাকসু জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার তাদের পদত্যাগের জন্য আল্টিমেটাম দেন। এরই প্রেক্ষিতে আজ শিক্ষার্থীরা তাদের সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে আসেন।
এ বিষয়ে রাকসু জিএস সালাহউদ্দীন আম্মার এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, আওয়ামীপন্থি ৬ জন ডিনের কেউ ক্যাম্পাসে আসেনি। তাদের কল দেওয়া হয়েছিলো তখন তারা জানিয়েছেন, ভিসিকে জানানো হয়েছে তারা দায়িত্বে থাকবেন না। এখন দেখতে চাই ভিসি কি সিদ্ধান্ত নেন এবং আজ মোটামুটি সব দপ্তরে আওয়ামীপন্থিদের দপ্তরগুলো তালাবদ্ধ। আমিও এটাই চাই, বিচার না হওয়া পর্যন্ত তালাবদ্ধ থাকুক।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

