খন্দকার হাসনাত করিম পিন্টু
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অনেক দেরি হয়ে গেল। জুলাই থেকে জুলাই এক বছর হয়ে গেল। এখনো আলোচনা চলছে। এই সময় লাগার কারণ মূলত একটাই, আর তা হলো জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক বা দলীয় ব্যর্থতা। জুলাই গণবিপ্লবের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী জাতীয়তাবাদী দল কার্যত অনাগ্রহী। অন্য দলগুলোও দ্বিধাবিভক্ত। ইসলামি দলগুলো ও তরুণরাই শুধু অন্তরে জিইয়ে রেখেছে জুলাই আন্দোলনের মর্মবাণী। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এই ঐতিহাসিক সনদ বাস্তবায়নে চেষ্টা করে যাচ্ছে। হয়তো আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে দেশের সফল অভিভাবক নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসও। কিন্তু রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক ‘এস্টাবলিশমেন্টে’ চেপে বসে থাকা ভারতীয়, আওয়ামী, কম্যুনিস্ট ও বাম গোষ্ঠী এতটাই তৎপর এবং তাদের অপকর্ম এতই সীমাহীন যে পরিবর্তনকে দলিলি রূপ দেওয়া বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। অথচ জুলাই সনদই হবে আমাদের সাংবিধানিক ভিত্তি।
গত বছরের অক্টোবর মাসেই দেশের সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ কমিশনগুলো তাদের সুচিন্তিত সংস্কার প্রতিবেদনগুলো পেশ করে। পরে সংস্কার প্রসঙ্গে ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনটি। পরবর্তীকালে ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশকে দুভাগে ভাগ করে প্রথম অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ‘আশু বাস্তবায়নযোগ্য’ হিসেবে তফসিল করা হয়। পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নযোগ্য অবস্থায় থাকে বাকি ১৬৬টি সুপারিশ। তবে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রতার পেছনে কাজ করছে সিদ্ধান্তহীনতা, যা কিনা জুলাই-আগস্টের শাহাদতের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা এবং একই সঙ্গে আওয়ামী প্রত্যাবর্তনের ফন্দি, যে ফাঁদে স্বেচ্ছায় পা দিয়েছে বিএনপি। তাদের কথায় সেটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। তা না হলে এই জাতীয়তাবাদী-ইসলামী মূল্যবোধে গড়ে ওঠা দলের নেতারা আজ জাতিকে বিস্মিত করে ‘মৌলবাদ ও দক্ষিণপন্থিদের’ অভয়ারণ্যে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে কীভাবে, কোন যুক্তিতে?
ভারত-আওয়ামী-বাম অপশক্তির অপকৌশল বাস্তবায়নের জন্যই কি জুলাই হয়েছিল? ‘ভারত আমাদের বন্ধু দেশ, সবচেয়ে বড় বন্ধু’—এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে বিএনপি যে তাদের নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুঠারাঘাত করে জনপ্রিয়তাকে তলানিতে নামিয়ে ফেলছে, সে খবর কি রাখেন তারা? স্বৈরাচার নিষিদ্ধ করার আমরা কে? কিংবা সংস্কার করবে নির্বাচিত সরকার, অথবা তরুণ নেতারা ‘ফকিরনির বাচ্চা’ বলে আখ্যা দেওয়া এই নব্য আওয়ামী-বিএনপি যে দিন দিন অচেনা এক নতুন অপশক্তি হয়ে উঠছে, এটাই প্রমাণিত হবে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে এবং সেই উদগ্র বাসনা থেকেই সংস্কারে আজ এত নির্লিপ্ততা, এত নিরুৎসাহ! প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যেখানে জুলাইযোদ্ধাদের ‘দেশের শ্রেষ্ঠ বীর’ বলে সম্মানিত করছেন, সমগ্র জাতি যখন এই দেশপ্রেমিক জুলাইযোদ্ধাদের যথাযোগ্য সম্মান ও স্বীকৃতিতে ভাসিয়ে দিচ্ছে, তখন কারা, কোন মতলবে তাদের পোস্টার ছিঁড়েছে বা ‘ফকিরনির পুত’ বলে গালি দিচ্ছে, তা বুঝতে বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয় না। শঙ্কা করছি বাকশালের মতো তাদেরও করুণ পরিণতি সম্পর্কে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার দল আজ ভারত-বাকশালি কুচক্রীদের কোলে উঠে বসেছে—এটা দেখে যেকোনো বিবেকবান মানুষ বিচলিত হয়ে উঠবেন, এটাই রাজনীতির সরল পাঠ। এই নব্য বাকশালি অপশক্তির কারণেই কাঙ্ক্ষিত সংস্কার উদ্যোগ আজ বিঘ্নিত এবং পদে পদে বাধাগ্রস্ত। এদের সম্মিলিত উদ্যোগেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে সংস্কারের মহাকার্যক্রম।
সংস্কার প্রস্তাবগুলো কী পদ্ধতিতে বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়েও এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে জুলাই জাতীয় সনদের খসড়ায় বলা হয়েছে, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের পরবর্তী দুই বছরের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করার অঙ্গীকার করবে দলগুলো। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দলের এতে আপত্তি রয়েছে। তৃতীয় পর্বেও আলোচনার শুরুতে থাকবে সংস্কার বাস্তবায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ। এর আগে দুই পর্বে একমত হওয়া বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন পদ্ধতি ঠিক করা হবে। যে প্রস্তাব বা সুপারিশ অধ্যাদেশ জারি করে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেগুলোর ব্যাপারে আইন বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করা হবে। যে প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন সংবিধান সংশোধন সাপেক্ষ, সেগুলোর ব্যাপারে করণীয় সাব্যস্ত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তবে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে কোনো কোনো দলের ভিন্নমত থাকলে সেগুলোর বিষয়েও বিশেষজ্ঞদের কাছে মতামত চাওয়া হবে। তবে লক্ষ্য থাকবে ভিন্নমত কমিয়ে আনার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন ঘটানো। আপাতদৃষ্টিতে জুলাই সনদের খসড়াটি ক্ষেত্রবিশেষে অসম্পূর্ণ। কেননা এই সনদ প্রস্তাবনায় বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও বাকশালি স্বৈরতন্ত্র উৎখাতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সংঘটিত সফল পটপরিবর্তনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরা হয়নি।
লোহা পিটিয়ে হাতিয়ার বা তৈজস বানাতে হয়, যখন আগুনে পুড়ে লোহা নরম থাকে। সংস্কারের ব্যাপারটাও তাই। বিপ্লবের অব্যবহিত কালের মধ্যেই সংস্কারসাধন করতে হয়। সেই অর্থে জগৎকাঁপানো জুলাই বিপ্লবের পর একটি বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। আরো আগেই ‘সংস্কারের আশু কাজগুলো’ সম্পন্ন হওয়া বাঞ্ছিত ছিল। কথায় বলে, ‘Justice de-layed justice denied.’ বিলম্ব করা মানেই অবিচার করা। তেমনি সংস্কারকে দীর্ঘসূত্রী করা মানেই সংস্কারের প্রাসঙ্গিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং একে পূর্ণাঙ্গ রূপ প্রদান সাপেক্ষে জরুরি সংস্কারগুলোকে সম্পন্ন করতে আর মোটেই কালক্ষেপণ করা ঠিক হবে না। এমনিতেই বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা বা বংশী নদী দিয়ে অনেক পানি গত এক বছরে গড়িয়ে গেছে। নানা ফিকির-ফন্দিতে পতিত গুমখুনের স্বৈরাচার ফেরত আনার অপচেষ্টা জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। এটা একটা মহা অন্যায় ও বিশ্বাসঘাতকতা। দুই হাজার তাজা কচি প্রাণ এজন্য শাহাদাতবরণ করেনি। ৪০ হাজারের মতো সাধারণ মানুষ এখনো জখম ও পঙ্গুত্বেও অসহায় আর্তনাদে জাতির বিবেককে নিত্যপ্রহর দংশন করে চলেছে। তাদের প্রতি আমাদের যদি সামান্যতম সহানুভূতি থেকে থাকে, তাহলে আমাদের উচিত হবে জাতীয় ইস্যুগুলোয় সর্বোচ্চ জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন সাপেক্ষে জরুরি সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে জাতিকে দায়মুক্ত করা এবং ইতিহাসকে আপন ধারায় বহমান রাখা।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অনেক দেরি হয়ে গেল। জুলাই থেকে জুলাই এক বছর হয়ে গেল। এখনো আলোচনা চলছে। এই সময় লাগার কারণ মূলত একটাই, আর তা হলো জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক বা দলীয় ব্যর্থতা। জুলাই গণবিপ্লবের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী জাতীয়তাবাদী দল কার্যত অনাগ্রহী। অন্য দলগুলোও দ্বিধাবিভক্ত। ইসলামি দলগুলো ও তরুণরাই শুধু অন্তরে জিইয়ে রেখেছে জুলাই আন্দোলনের মর্মবাণী। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এই ঐতিহাসিক সনদ বাস্তবায়নে চেষ্টা করে যাচ্ছে। হয়তো আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে দেশের সফল অভিভাবক নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসও। কিন্তু রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক ‘এস্টাবলিশমেন্টে’ চেপে বসে থাকা ভারতীয়, আওয়ামী, কম্যুনিস্ট ও বাম গোষ্ঠী এতটাই তৎপর এবং তাদের অপকর্ম এতই সীমাহীন যে পরিবর্তনকে দলিলি রূপ দেওয়া বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। অথচ জুলাই সনদই হবে আমাদের সাংবিধানিক ভিত্তি।
গত বছরের অক্টোবর মাসেই দেশের সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ কমিশনগুলো তাদের সুচিন্তিত সংস্কার প্রতিবেদনগুলো পেশ করে। পরে সংস্কার প্রসঙ্গে ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনটি। পরবর্তীকালে ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশকে দুভাগে ভাগ করে প্রথম অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ‘আশু বাস্তবায়নযোগ্য’ হিসেবে তফসিল করা হয়। পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নযোগ্য অবস্থায় থাকে বাকি ১৬৬টি সুপারিশ। তবে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রতার পেছনে কাজ করছে সিদ্ধান্তহীনতা, যা কিনা জুলাই-আগস্টের শাহাদতের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা এবং একই সঙ্গে আওয়ামী প্রত্যাবর্তনের ফন্দি, যে ফাঁদে স্বেচ্ছায় পা দিয়েছে বিএনপি। তাদের কথায় সেটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। তা না হলে এই জাতীয়তাবাদী-ইসলামী মূল্যবোধে গড়ে ওঠা দলের নেতারা আজ জাতিকে বিস্মিত করে ‘মৌলবাদ ও দক্ষিণপন্থিদের’ অভয়ারণ্যে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে কীভাবে, কোন যুক্তিতে?
ভারত-আওয়ামী-বাম অপশক্তির অপকৌশল বাস্তবায়নের জন্যই কি জুলাই হয়েছিল? ‘ভারত আমাদের বন্ধু দেশ, সবচেয়ে বড় বন্ধু’—এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে বিএনপি যে তাদের নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুঠারাঘাত করে জনপ্রিয়তাকে তলানিতে নামিয়ে ফেলছে, সে খবর কি রাখেন তারা? স্বৈরাচার নিষিদ্ধ করার আমরা কে? কিংবা সংস্কার করবে নির্বাচিত সরকার, অথবা তরুণ নেতারা ‘ফকিরনির বাচ্চা’ বলে আখ্যা দেওয়া এই নব্য আওয়ামী-বিএনপি যে দিন দিন অচেনা এক নতুন অপশক্তি হয়ে উঠছে, এটাই প্রমাণিত হবে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে এবং সেই উদগ্র বাসনা থেকেই সংস্কারে আজ এত নির্লিপ্ততা, এত নিরুৎসাহ! প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যেখানে জুলাইযোদ্ধাদের ‘দেশের শ্রেষ্ঠ বীর’ বলে সম্মানিত করছেন, সমগ্র জাতি যখন এই দেশপ্রেমিক জুলাইযোদ্ধাদের যথাযোগ্য সম্মান ও স্বীকৃতিতে ভাসিয়ে দিচ্ছে, তখন কারা, কোন মতলবে তাদের পোস্টার ছিঁড়েছে বা ‘ফকিরনির পুত’ বলে গালি দিচ্ছে, তা বুঝতে বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয় না। শঙ্কা করছি বাকশালের মতো তাদেরও করুণ পরিণতি সম্পর্কে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার দল আজ ভারত-বাকশালি কুচক্রীদের কোলে উঠে বসেছে—এটা দেখে যেকোনো বিবেকবান মানুষ বিচলিত হয়ে উঠবেন, এটাই রাজনীতির সরল পাঠ। এই নব্য বাকশালি অপশক্তির কারণেই কাঙ্ক্ষিত সংস্কার উদ্যোগ আজ বিঘ্নিত এবং পদে পদে বাধাগ্রস্ত। এদের সম্মিলিত উদ্যোগেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে সংস্কারের মহাকার্যক্রম।
সংস্কার প্রস্তাবগুলো কী পদ্ধতিতে বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়েও এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে জুলাই জাতীয় সনদের খসড়ায় বলা হয়েছে, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের পরবর্তী দুই বছরের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করার অঙ্গীকার করবে দলগুলো। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দলের এতে আপত্তি রয়েছে। তৃতীয় পর্বেও আলোচনার শুরুতে থাকবে সংস্কার বাস্তবায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ। এর আগে দুই পর্বে একমত হওয়া বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন পদ্ধতি ঠিক করা হবে। যে প্রস্তাব বা সুপারিশ অধ্যাদেশ জারি করে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেগুলোর ব্যাপারে আইন বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করা হবে। যে প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন সংবিধান সংশোধন সাপেক্ষ, সেগুলোর ব্যাপারে করণীয় সাব্যস্ত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তবে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে কোনো কোনো দলের ভিন্নমত থাকলে সেগুলোর বিষয়েও বিশেষজ্ঞদের কাছে মতামত চাওয়া হবে। তবে লক্ষ্য থাকবে ভিন্নমত কমিয়ে আনার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন ঘটানো। আপাতদৃষ্টিতে জুলাই সনদের খসড়াটি ক্ষেত্রবিশেষে অসম্পূর্ণ। কেননা এই সনদ প্রস্তাবনায় বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও বাকশালি স্বৈরতন্ত্র উৎখাতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সংঘটিত সফল পটপরিবর্তনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরা হয়নি।
লোহা পিটিয়ে হাতিয়ার বা তৈজস বানাতে হয়, যখন আগুনে পুড়ে লোহা নরম থাকে। সংস্কারের ব্যাপারটাও তাই। বিপ্লবের অব্যবহিত কালের মধ্যেই সংস্কারসাধন করতে হয়। সেই অর্থে জগৎকাঁপানো জুলাই বিপ্লবের পর একটি বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। আরো আগেই ‘সংস্কারের আশু কাজগুলো’ সম্পন্ন হওয়া বাঞ্ছিত ছিল। কথায় বলে, ‘Justice de-layed justice denied.’ বিলম্ব করা মানেই অবিচার করা। তেমনি সংস্কারকে দীর্ঘসূত্রী করা মানেই সংস্কারের প্রাসঙ্গিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং একে পূর্ণাঙ্গ রূপ প্রদান সাপেক্ষে জরুরি সংস্কারগুলোকে সম্পন্ন করতে আর মোটেই কালক্ষেপণ করা ঠিক হবে না। এমনিতেই বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা বা বংশী নদী দিয়ে অনেক পানি গত এক বছরে গড়িয়ে গেছে। নানা ফিকির-ফন্দিতে পতিত গুমখুনের স্বৈরাচার ফেরত আনার অপচেষ্টা জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। এটা একটা মহা অন্যায় ও বিশ্বাসঘাতকতা। দুই হাজার তাজা কচি প্রাণ এজন্য শাহাদাতবরণ করেনি। ৪০ হাজারের মতো সাধারণ মানুষ এখনো জখম ও পঙ্গুত্বেও অসহায় আর্তনাদে জাতির বিবেককে নিত্যপ্রহর দংশন করে চলেছে। তাদের প্রতি আমাদের যদি সামান্যতম সহানুভূতি থেকে থাকে, তাহলে আমাদের উচিত হবে জাতীয় ইস্যুগুলোয় সর্বোচ্চ জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন সাপেক্ষে জরুরি সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে জাতিকে দায়মুক্ত করা এবং ইতিহাসকে আপন ধারায় বহমান রাখা।
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
১১ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
১১ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
১১ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১ দিন আগে