আবদুল লতিফ মাসুম
ব্যক্তি, পরিবার এমনকি রাষ্ট্রব্যবস্থায় এমন কিছু সংবেদনশীল বিষয়-আশয় থাকে, যা সবাই এড়িয়ে যেতে চায়। পারিবারিক পর্যায়ে এমন সব ঘটনা ঘটে, যা বললেও বিপদ না বললেও বিপদ। রাজনীতি এমনিতেই একটি জটিল ও কুটিল বিষয়, যদিও রাষ্ট্রচিন্তকরা একে ‘Art of Compromise’ বলে থাকেন। বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি এমন একটি বিষয়, যার পক্ষে হাজারো যুক্তি আছে। আবার বিপদ-আপদের কথাও আছে। বিচারপতি সাহাবুদ্দিন সম্ভবত বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্রের এমন এক কর্ণধার ছিলেন, যিনি সংবেদনশীলতা অথবা স্বার্থবুদ্ধি অতিক্রম করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে লালন করতে চেয়েছেন। তিনি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার কথা বলেছিলেন। যারা ছাত্রদের ক্ষমতার স্বার্থে অথবা আদর্শের নামে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চান, তখন তারা হা-হা করে উঠেছিলেন। তাদের ভাষায়—‘ছাত্ররা রাজনীতি না করলে অভাগা জাতির হবে কী?’ Bangladesh Institute of International Strategic Studies (BIISS) একটি জাতীয় সেমিনারের আয়োজন করেছিল। সেখানে প্রধান প্রধান ছাত্রসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা রাজি হননি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে। তবে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে তখনো বিষোদ্গার ছিল।
অপর একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছিল ওসমানী মিলনায়তনে। সেখানে স্বয়ং রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও উপাচার্যরাও ছিলেন। হলভর্তি ছাত্ররাও ছিল। সেখানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার পক্ষে ও বিপক্ষে জোরালো যুক্তিতর্ক চলছিল। যখন ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে যুক্তি দিতেন কেউ, তখন ছাত্ররা তুমুল করতালি দিয়ে তাকে সমর্থন দিত। তবে উপাচার্যরা কেউই ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে বলেননি, কারণ তাদের গদির টান আছে। অথচ ব্যক্তিগতভাবে তারা আমার কাছে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার পক্ষেই কথা বলেছিলেন।
আমি সেমিনারে বলেছিলাম, মানুষের দুটো সত্তা আছে—একটি হলো চেতন, আরেকটি অবচেতন। চেতন সত্তা হিসাবনিকাশ করে স্বার্থসুবিধা দেখে কথা বলে। আর অবচেতন সত্তা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মনের ভাব প্রকাশ করে। ছাত্ররা করতালি দেয় অবচেতন মনে তাদের মনের প্রকাশ হলো বলে। অপরদিকে উপাচার্যরা তাদের ক্যাম্পাস রাজনীতি, ছাত্র সংগঠনের অবস্থান ও সরকারের লেজুড়বৃত্তির হিসাবনিকাশ কষে ছাত্ররাজনীতির পক্ষেই থাকেন। রাষ্ট্রপতি আমার বক্তব্যের প্রশংসা করেছিলেন। স্মরণ করা যেতে পারে, বিচারপতি সাহাবুদ্দিন ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দেওয়ার পর আমি তার পক্ষে ক্যাম্পেইন শুরু করি। অনেক শিক্ষকের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে সংবাদপত্রে ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে একটি বিবৃতি দিই। সে কারণেই দুটো সেমিনারেই আমার ডাক পড়েছিল। আবারো বলি বিবৃতি সংগ্রহ করতে গিয়েও ওই চেতন আর অচেতনের সাক্ষাৎ পাই। যে শিক্ষক খুব শক্তভাবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে উচ্চবাচ্য করলেন, তিনিই আবার বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালেন। এই বৈপরীত্যের কারণ স্বার্থচিন্তা। ছাত্রনেতৃত্বের মুখোমুখি হতে অনেকেই রাজি নন। আবার মহৎ চিন্তা বা দেশপ্রেম এবং শিক্ষাপ্রেম দ্বারা তাড়িত অনেক শিক্ষক আছেন। এতদ্দেশের কালচার এই যে, বিবেকের তাড়নায় রায় হয় না। তারাই জিতে যায়, যারা সাড়ম্বরে সুবিধার পক্ষে অবস্থান নেন। সেবারে বিচারপতি সাহাবুদ্দিনের ওই মহৎ উদ্যোগ মাঠে মারা যায়। বিষয়টি তখন বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
ক্ষমতাসীন নেত্রী বললেন, বিরোধী নেতা যদি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধে রাজি হন, তা হলে তিনিও রাজি। ছাত্ররাজনীতির মোক্ষম সুবিধাটি হাতছাড়া করতে কেউই রাজি হননি। কে নিষিদ্ধ করে ছাত্রদের নিয়ে বিপাকে পড়বেন, আর ছাত্রদের ক্ষমতার বাহন হিসেবে ব্যবহারের সুবর্ণ সুযোগটি হারাবেন, সেই চিন্তা থেকে রাজনীতিবিদরা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে সায় দেননি। গত ১৫ বছরে ছাত্ররাজনীতির যে সর্বনাশ সাধিত হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে Second Thought দেওয়ার সময় হয়েছে। ২০২৪ সালের বিপ্লবের পর ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকেই স্বতঃস্ফূর্ত উক্তি এসেছে—‘We hate politics.’ তারপর সময়ান্তরে তারা সিদ্ধান্ত দিয়েছে ছাত্ররাজনীতি থাকবে, তবে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নয়।
এই দাবি বা সিদ্ধান্তটি এসেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরপরই। সে সময় তাদের সে দাবি ও ঘোষণার পক্ষে সতত ছাত্র সমর্থন দেখা গেছে। দিন যতই এগিয়েছে, ছাত্ররা ততই রাজনীতিপ্রবণ হয়েছে। একটি বিরাট অংশ আদর্শিক নির্দেশনার অভাবে বিপথগামী হয়েছে। কলেজ বনাম কলেজ তারিখ দিয়ে মারামারি করেছে তারা। বিক্ষোভ, ভাংচুর ও লুটতরাজের ঘটনা ঘটেছে কোথাও কোথাও। অন্যায্য দাবির ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য তারা অবরোধ, অনশন ও আন্দোলন করেছে। জনগণের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর দায়িত্ব এড়াতে পারে না। তবে এ কথাও সত্য, বিষয়টি সংবেদনশীল। মোকাবিলা করতে সাহস, দৃঢ়তা ও কৌশল প্রয়োজন। বিপ্লব-পরবর্তী ছাত্রদের অবাধ ও অবারিত শক্তিকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ও একাডেমিকভাবে পরিচালনার প্রয়োজন ছিল। সে ব্যর্থতার দায় আমাদের সবার।
অবশেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি একটি রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’তে একীভূত হয়েছে। নতুন রাজনৈতিক দলটির সমর্থনে নতুন ছাত্র সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ গঠিত হয়েছে। নীতিগতভাবে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠনের বিরোধিতাকারীরা যখন নিজেদের ছাত্র সংগঠন করেছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই আমার মনে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে—তা হলে তারা কি তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। দু-এক দিনেই আমার ভুল ভাবনার অবসান হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বে দেওয়া শিক্ষার্থীদের নবগঠিত স্বতন্ত্র সংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বিষয়টি পরিস্কার করেছেন। ছাত্ররাজনীতি নয়, বরং লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হোক, তা চেয়েছিলাম। তিনি বলেছেন, আমরা জুলাই অভ্যুত্থানে ৯ দফার সপ্তম দফায় লেজুড়বৃত্তির বিরোধিতা করেছি। সামনেও লেজুড়বৃত্তির বিপক্ষে থাকব। আমাদের রাজনীতিতে ছাত্ররাজনীতি হবে মধ্য পন্থার।
গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে পরিচিতি সভার সমাপনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন আবু বাকের মজুমদার। যেখানে জুলাইয়ের আগে সব ছাত্র সংগঠনের একসঙ্গে এক জায়গায় বসা ছিল অসম্ভব, সেখানে ওই অনুষ্ঠানে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী, ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী), ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র পক্ষ ও স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিগত দিনের ইতিহাস যেখানে ছাত্র সংগঠনগুলোর পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, কলহ ও মারামারির ঘটনায় আকীর্ণ, সেখানে নতুন ছাত্র সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’-এর সভায় সব পথের সব মতের উপস্থিতি একটি নতুন অধ্যায়। সংগঠনটি পরিষ্কার করে বলেছে, গণঅভ্যুত্থানের পর যে সহাবস্থানের রাজনীতি তৈরি হয়েছে, তার পক্ষে তাদের অবস্থান।
ছাত্ররাজনীতি, বিশেষত লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলে বিরাট ক্ষতি হবে ক্ষমতাশ্রয়ী রাজনৈতিক দলগুলোর। ক্ষমতার বাহন হিসেবে তারা ছাত্রদের বরাবরই ব্যবহার করে আসছে। ছাত্ররাও অতি উৎসাহে সেসব দলের সঙ্গে শামিল হয়েছে। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হলে ক্ষমতাশ্রয়ী রাজনৈতিক দলগুলো বিরাট ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এতদিন ধরে যাদের লালনপালন করেছে তারা, এখন যদি হয় তারা দলছাড়া, অতি অবশ্যই অখুশি হবে তারা। সহজে সস্তায় লাঠিয়াল বাহিনী অথবা হেলমেট বাহিনীর দ্বারা অন্যায় ও অপকর্ম করানোর সুযোগ হাতছাড়া হবে। দলীয় ছাত্ররাজনীতির যেসব উপসর্গ আমরা অতীতে লক্ষ করেছি, বর্তমানেও সে প্রবণতা বিদ্যমান।
এই কয়েক দিন আগে কুয়েটের ঘটনা তারই প্রমাণ। তবে এখানে একটি পরিস্কার সিদ্ধান্তে আশা যায়, গোটা ছাত্রসমাজ আর ছাত্ররাজনীতি পছন্দ করছে না। ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ ও আন্দোলন হয়েছে। এটা ভালো লক্ষণ। এখনই যদি লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়, তাহলে কিছু মতলববাজ বুদ্ধিজীবী বিবৃতি দিয়ে হয়তো বিরোধিতা করবেন। এরা অতি মাত্রায় রাজনীতি-আক্রান্ত। রাজনীতির বাইরে যে ছাত্ররা তাদের চিন্তাচেতনা শানিত করতে পারে, তা তারা ভাবতে রাজি নয়। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করে, আমাদের সন্তানেরা সত্য-মিথ্যার পার্থক্য করতে জানে। এটাও অপ্রিয় সত্য, ১৫ বছরের রাজনৈতিক প্রতারণা-প্রচারণায় আওয়ামী সরকার তাদের মগজ ধোলাই করতে পারেনি। আমরা যাদের ভেবেছি ফার্মের মুরগি, সেই বড়লোকদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সোনার ছেলেরা উজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছে। এখন সময় এসেছে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ছাত্ররাজনীতি সুশৃঙ্খলভাবে গড়ে তোলার। আবার বলছি, সর্বত্রই ছাত্ররাজনীতি থাকবে, তবে এখনকার মতো আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠন হিসেবে নয়।
তবে কীভাবে নির্ণীত হবে ছাত্ররাজনীতির সীমা-পরিসীমা, তা নির্ধারণের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য দরকার। আর ছাত্রদের তরফ থেকে তাদের লেজুড়বৃত্তির অবসানে সতর্কতা, সচেতনতা ও সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধে অবশ্যই সব শিক্ষার্থীকে প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করতে হবে। অতি সাম্প্রতিককালে শিক্ষাঙ্গনগুলোয় ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রভাব বলয়ের প্রতিযোগিতা যেভাবে প্রবল হয়েছে, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে সংগত কারণেই আধিপত্যের লড়াই বাড়বে। যথার্থভাবেই আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘নিজের ভাইদের যখন দেখি একে অন্যের রক্তের নেশায় মাতে, তখন সত্যিকারের ভয় লাগে, আতঙ্ক লাগে, সবচেয়ে বেশি হতাশ লাগে।’
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাই যথেষ্ট নয়। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধের আইনানুগ ব্যবস্থাটি অন্তর্বর্তী সরকারকেই করতে হবে। আমরা আগেই বলেছি, বিষয়টি সংবেদনশীল, ঝুঁকিপূর্ণ ও বিব্রতকর হওয়ার কারণে কোনো রাজনৈতিক সরকার এটা করতে চাইবে না। আমরা যদি এই জাতির ভবিষ্যৎ সন্তানদের নিরাপদ দেখতে চাই, নির্ভয় দেখতে চাই, তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিষয়টির আইনানুগ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আরো হোমওয়ার্ক প্রয়োজন। সর্বসম্মত ঘোষণা, প্রস্তাবনা ও অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করা যেতে পারে বলে শিক্ষানুরাগী মহল মনে করেন।
লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাবেক অধ্যাপক, সরকার রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
ব্যক্তি, পরিবার এমনকি রাষ্ট্রব্যবস্থায় এমন কিছু সংবেদনশীল বিষয়-আশয় থাকে, যা সবাই এড়িয়ে যেতে চায়। পারিবারিক পর্যায়ে এমন সব ঘটনা ঘটে, যা বললেও বিপদ না বললেও বিপদ। রাজনীতি এমনিতেই একটি জটিল ও কুটিল বিষয়, যদিও রাষ্ট্রচিন্তকরা একে ‘Art of Compromise’ বলে থাকেন। বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি এমন একটি বিষয়, যার পক্ষে হাজারো যুক্তি আছে। আবার বিপদ-আপদের কথাও আছে। বিচারপতি সাহাবুদ্দিন সম্ভবত বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্রের এমন এক কর্ণধার ছিলেন, যিনি সংবেদনশীলতা অথবা স্বার্থবুদ্ধি অতিক্রম করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে লালন করতে চেয়েছেন। তিনি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার কথা বলেছিলেন। যারা ছাত্রদের ক্ষমতার স্বার্থে অথবা আদর্শের নামে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চান, তখন তারা হা-হা করে উঠেছিলেন। তাদের ভাষায়—‘ছাত্ররা রাজনীতি না করলে অভাগা জাতির হবে কী?’ Bangladesh Institute of International Strategic Studies (BIISS) একটি জাতীয় সেমিনারের আয়োজন করেছিল। সেখানে প্রধান প্রধান ছাত্রসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা রাজি হননি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে। তবে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে তখনো বিষোদ্গার ছিল।
অপর একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছিল ওসমানী মিলনায়তনে। সেখানে স্বয়ং রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও উপাচার্যরাও ছিলেন। হলভর্তি ছাত্ররাও ছিল। সেখানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার পক্ষে ও বিপক্ষে জোরালো যুক্তিতর্ক চলছিল। যখন ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে যুক্তি দিতেন কেউ, তখন ছাত্ররা তুমুল করতালি দিয়ে তাকে সমর্থন দিত। তবে উপাচার্যরা কেউই ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে বলেননি, কারণ তাদের গদির টান আছে। অথচ ব্যক্তিগতভাবে তারা আমার কাছে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার পক্ষেই কথা বলেছিলেন।
আমি সেমিনারে বলেছিলাম, মানুষের দুটো সত্তা আছে—একটি হলো চেতন, আরেকটি অবচেতন। চেতন সত্তা হিসাবনিকাশ করে স্বার্থসুবিধা দেখে কথা বলে। আর অবচেতন সত্তা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মনের ভাব প্রকাশ করে। ছাত্ররা করতালি দেয় অবচেতন মনে তাদের মনের প্রকাশ হলো বলে। অপরদিকে উপাচার্যরা তাদের ক্যাম্পাস রাজনীতি, ছাত্র সংগঠনের অবস্থান ও সরকারের লেজুড়বৃত্তির হিসাবনিকাশ কষে ছাত্ররাজনীতির পক্ষেই থাকেন। রাষ্ট্রপতি আমার বক্তব্যের প্রশংসা করেছিলেন। স্মরণ করা যেতে পারে, বিচারপতি সাহাবুদ্দিন ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দেওয়ার পর আমি তার পক্ষে ক্যাম্পেইন শুরু করি। অনেক শিক্ষকের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে সংবাদপত্রে ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে একটি বিবৃতি দিই। সে কারণেই দুটো সেমিনারেই আমার ডাক পড়েছিল। আবারো বলি বিবৃতি সংগ্রহ করতে গিয়েও ওই চেতন আর অচেতনের সাক্ষাৎ পাই। যে শিক্ষক খুব শক্তভাবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে উচ্চবাচ্য করলেন, তিনিই আবার বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালেন। এই বৈপরীত্যের কারণ স্বার্থচিন্তা। ছাত্রনেতৃত্বের মুখোমুখি হতে অনেকেই রাজি নন। আবার মহৎ চিন্তা বা দেশপ্রেম এবং শিক্ষাপ্রেম দ্বারা তাড়িত অনেক শিক্ষক আছেন। এতদ্দেশের কালচার এই যে, বিবেকের তাড়নায় রায় হয় না। তারাই জিতে যায়, যারা সাড়ম্বরে সুবিধার পক্ষে অবস্থান নেন। সেবারে বিচারপতি সাহাবুদ্দিনের ওই মহৎ উদ্যোগ মাঠে মারা যায়। বিষয়টি তখন বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
ক্ষমতাসীন নেত্রী বললেন, বিরোধী নেতা যদি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধে রাজি হন, তা হলে তিনিও রাজি। ছাত্ররাজনীতির মোক্ষম সুবিধাটি হাতছাড়া করতে কেউই রাজি হননি। কে নিষিদ্ধ করে ছাত্রদের নিয়ে বিপাকে পড়বেন, আর ছাত্রদের ক্ষমতার বাহন হিসেবে ব্যবহারের সুবর্ণ সুযোগটি হারাবেন, সেই চিন্তা থেকে রাজনীতিবিদরা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে সায় দেননি। গত ১৫ বছরে ছাত্ররাজনীতির যে সর্বনাশ সাধিত হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে Second Thought দেওয়ার সময় হয়েছে। ২০২৪ সালের বিপ্লবের পর ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকেই স্বতঃস্ফূর্ত উক্তি এসেছে—‘We hate politics.’ তারপর সময়ান্তরে তারা সিদ্ধান্ত দিয়েছে ছাত্ররাজনীতি থাকবে, তবে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নয়।
এই দাবি বা সিদ্ধান্তটি এসেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরপরই। সে সময় তাদের সে দাবি ও ঘোষণার পক্ষে সতত ছাত্র সমর্থন দেখা গেছে। দিন যতই এগিয়েছে, ছাত্ররা ততই রাজনীতিপ্রবণ হয়েছে। একটি বিরাট অংশ আদর্শিক নির্দেশনার অভাবে বিপথগামী হয়েছে। কলেজ বনাম কলেজ তারিখ দিয়ে মারামারি করেছে তারা। বিক্ষোভ, ভাংচুর ও লুটতরাজের ঘটনা ঘটেছে কোথাও কোথাও। অন্যায্য দাবির ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য তারা অবরোধ, অনশন ও আন্দোলন করেছে। জনগণের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর দায়িত্ব এড়াতে পারে না। তবে এ কথাও সত্য, বিষয়টি সংবেদনশীল। মোকাবিলা করতে সাহস, দৃঢ়তা ও কৌশল প্রয়োজন। বিপ্লব-পরবর্তী ছাত্রদের অবাধ ও অবারিত শক্তিকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ও একাডেমিকভাবে পরিচালনার প্রয়োজন ছিল। সে ব্যর্থতার দায় আমাদের সবার।
অবশেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি একটি রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’তে একীভূত হয়েছে। নতুন রাজনৈতিক দলটির সমর্থনে নতুন ছাত্র সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ গঠিত হয়েছে। নীতিগতভাবে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠনের বিরোধিতাকারীরা যখন নিজেদের ছাত্র সংগঠন করেছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই আমার মনে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে—তা হলে তারা কি তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। দু-এক দিনেই আমার ভুল ভাবনার অবসান হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বে দেওয়া শিক্ষার্থীদের নবগঠিত স্বতন্ত্র সংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বিষয়টি পরিস্কার করেছেন। ছাত্ররাজনীতি নয়, বরং লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হোক, তা চেয়েছিলাম। তিনি বলেছেন, আমরা জুলাই অভ্যুত্থানে ৯ দফার সপ্তম দফায় লেজুড়বৃত্তির বিরোধিতা করেছি। সামনেও লেজুড়বৃত্তির বিপক্ষে থাকব। আমাদের রাজনীতিতে ছাত্ররাজনীতি হবে মধ্য পন্থার।
গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে পরিচিতি সভার সমাপনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন আবু বাকের মজুমদার। যেখানে জুলাইয়ের আগে সব ছাত্র সংগঠনের একসঙ্গে এক জায়গায় বসা ছিল অসম্ভব, সেখানে ওই অনুষ্ঠানে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী, ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী), ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র পক্ষ ও স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিগত দিনের ইতিহাস যেখানে ছাত্র সংগঠনগুলোর পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, কলহ ও মারামারির ঘটনায় আকীর্ণ, সেখানে নতুন ছাত্র সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’-এর সভায় সব পথের সব মতের উপস্থিতি একটি নতুন অধ্যায়। সংগঠনটি পরিষ্কার করে বলেছে, গণঅভ্যুত্থানের পর যে সহাবস্থানের রাজনীতি তৈরি হয়েছে, তার পক্ষে তাদের অবস্থান।
ছাত্ররাজনীতি, বিশেষত লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলে বিরাট ক্ষতি হবে ক্ষমতাশ্রয়ী রাজনৈতিক দলগুলোর। ক্ষমতার বাহন হিসেবে তারা ছাত্রদের বরাবরই ব্যবহার করে আসছে। ছাত্ররাও অতি উৎসাহে সেসব দলের সঙ্গে শামিল হয়েছে। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হলে ক্ষমতাশ্রয়ী রাজনৈতিক দলগুলো বিরাট ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এতদিন ধরে যাদের লালনপালন করেছে তারা, এখন যদি হয় তারা দলছাড়া, অতি অবশ্যই অখুশি হবে তারা। সহজে সস্তায় লাঠিয়াল বাহিনী অথবা হেলমেট বাহিনীর দ্বারা অন্যায় ও অপকর্ম করানোর সুযোগ হাতছাড়া হবে। দলীয় ছাত্ররাজনীতির যেসব উপসর্গ আমরা অতীতে লক্ষ করেছি, বর্তমানেও সে প্রবণতা বিদ্যমান।
এই কয়েক দিন আগে কুয়েটের ঘটনা তারই প্রমাণ। তবে এখানে একটি পরিস্কার সিদ্ধান্তে আশা যায়, গোটা ছাত্রসমাজ আর ছাত্ররাজনীতি পছন্দ করছে না। ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ ও আন্দোলন হয়েছে। এটা ভালো লক্ষণ। এখনই যদি লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়, তাহলে কিছু মতলববাজ বুদ্ধিজীবী বিবৃতি দিয়ে হয়তো বিরোধিতা করবেন। এরা অতি মাত্রায় রাজনীতি-আক্রান্ত। রাজনীতির বাইরে যে ছাত্ররা তাদের চিন্তাচেতনা শানিত করতে পারে, তা তারা ভাবতে রাজি নয়। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করে, আমাদের সন্তানেরা সত্য-মিথ্যার পার্থক্য করতে জানে। এটাও অপ্রিয় সত্য, ১৫ বছরের রাজনৈতিক প্রতারণা-প্রচারণায় আওয়ামী সরকার তাদের মগজ ধোলাই করতে পারেনি। আমরা যাদের ভেবেছি ফার্মের মুরগি, সেই বড়লোকদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সোনার ছেলেরা উজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছে। এখন সময় এসেছে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ছাত্ররাজনীতি সুশৃঙ্খলভাবে গড়ে তোলার। আবার বলছি, সর্বত্রই ছাত্ররাজনীতি থাকবে, তবে এখনকার মতো আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠন হিসেবে নয়।
তবে কীভাবে নির্ণীত হবে ছাত্ররাজনীতির সীমা-পরিসীমা, তা নির্ধারণের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য দরকার। আর ছাত্রদের তরফ থেকে তাদের লেজুড়বৃত্তির অবসানে সতর্কতা, সচেতনতা ও সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধে অবশ্যই সব শিক্ষার্থীকে প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করতে হবে। অতি সাম্প্রতিককালে শিক্ষাঙ্গনগুলোয় ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রভাব বলয়ের প্রতিযোগিতা যেভাবে প্রবল হয়েছে, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে সংগত কারণেই আধিপত্যের লড়াই বাড়বে। যথার্থভাবেই আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘নিজের ভাইদের যখন দেখি একে অন্যের রক্তের নেশায় মাতে, তখন সত্যিকারের ভয় লাগে, আতঙ্ক লাগে, সবচেয়ে বেশি হতাশ লাগে।’
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাই যথেষ্ট নয়। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধের আইনানুগ ব্যবস্থাটি অন্তর্বর্তী সরকারকেই করতে হবে। আমরা আগেই বলেছি, বিষয়টি সংবেদনশীল, ঝুঁকিপূর্ণ ও বিব্রতকর হওয়ার কারণে কোনো রাজনৈতিক সরকার এটা করতে চাইবে না। আমরা যদি এই জাতির ভবিষ্যৎ সন্তানদের নিরাপদ দেখতে চাই, নির্ভয় দেখতে চাই, তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিষয়টির আইনানুগ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আরো হোমওয়ার্ক প্রয়োজন। সর্বসম্মত ঘোষণা, প্রস্তাবনা ও অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করা যেতে পারে বলে শিক্ষানুরাগী মহল মনে করেন।
লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাবেক অধ্যাপক, সরকার রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
১০ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
১০ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
১০ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১ দিন আগে