এম আর লিটন
বিশ্বায়নের যুগে কোনো রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব শুধু আবেগ দিয়ে রক্ষা করা যায় না। আগামীতে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হতে যাচ্ছে তথ্য আর প্রযুক্তি। যুদ্ধ মানে ভারী অস্ত্র আর সেনাবাহিনী নয়, যুদ্ধ হতে পারে অদৃশ্য। শত্রু হতে পারে সফটওয়্যার। তাই উন্নত প্রযুক্তিই আগামী দিনে হতে যাচ্ছে একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষাব্যবস্থা।
আগে সাম্রাজ্যবাদ মানে ছিল শারীরিকভাবে দখল। এখন এটি মানসিক দখল। আগে লড়াই হতো বন্দুক দিয়ে। এখন হয় ব্র্যান্ড দিয়ে। গ্লোবাল কোম্পানিগুলো এখন একেকটা রাষ্ট্র। তাদের আছে ডাটা, প্রযুক্তি যোগাযোগব্যবস্থা। তারা কী খাওয়াবে, কী পরাবে, কী ভাবাবেÑসব নিয়ন্ত্রণ করে। তারা ভাষা বদলায়। সংস্কৃতি বদলায়। ইতিহাস ভুলিয়ে দেয়। এটি নিঃশব্দ আগ্রাসন। তথ্য এখন বড় অস্ত্র। কে কত তথ্য নিয়ন্ত্রণ করে, কে কত তথ্যবিশ্লেষণ করতে পারে, তার ওপর নির্ভর করে ক্ষমতা ও শক্তি। যার কাছে যত বেশি তথ্য, এখন সে তত বেশি শক্তিশালী। বিশ্বে এখন ক্ষমতা চলে গেছে প্রযুক্তির হাতে। বড় কোম্পানির হাতে। তারা রাষ্ট্রের চেয়েও শক্তিশালী। মেটা, গুগল, অ্যাপল, আমাজন ও টিকটক তারা আমাদের জীবন জানে। তারা আমাদের চিন্তা জানে। তারা চাইলে আমাদের মনোভাব বদলে দিতে পারে। যারা তথ্যের ওপর দখল রাখে। তারা আসলে ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ করে।
১৯৫০-এর দশকে দক্ষিণ কোরিয়া ছিল এক ধ্বংসস্তূপ। যুদ্ধ শেষ হলেও কিছুই ছিল না। কিন্তু তারা থেমে থাকেনি। তারা শিক্ষা সংস্কার করেছে। প্রযুক্তি ও গবেষণায় বিনিয়োগ করেছে। তারা বলেছে, ‘আমরা শুধু ব্যবহার করব না, আমরা তৈরি করব।’ তাদের স্কুলে বিজ্ঞান শেখানো হয় হাতে-কলমে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা বাধ্যতামূলক। সরকার স্টার্টআপে উৎসাহ দেয়। আজ তারা তৈরি করেছে স্যামসাং, হুন্দাই, এলজি, যা শুধু পণ্য নয়, রাষ্ট্রীয় সক্ষমতার প্রতীক। তাদের ‘কে-পপ’ এখন বিশ্বের তরুণদের মন জয় করেছে। তাদের সিনেমা, ভাষা, পোশাক সব ছড়িয়ে পড়েছে। এটাই সফট পাওয়ার।
ইসরাইল ছোট দেশ। তারাও নিরাপত্তার বিষয়টি নতুনভাবে দেখেছে। তারা শুধু সেনাবাহিনীর ওপর নির্ভর করে না। তারা সাইবার প্রতিরক্ষা গড়েছে। তারা শিশুদের ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তি শেখায়। হ্যাকিং শেখায়। ডাটা বিশ্লেষণ শেখায়। তারা জানে, ভবিষ্যতের যুদ্ধ হবে সাইবারে। তাদের অনেক বড় স্টার্টআপ আছে। তাদের অনেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমেরিকা ও ইউরোপ। তারা জানে, অস্ত্রের চেয়ে বেশি কার্যকর তথ্য ও প্রযুক্তি।
আমরা এখনো বই মুখস্থ করি। পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেলে খুশি হই। গবেষণা করি না। চিন্তা করতে শেখাই না। আমাদের পাঠ্যবই পুরোনো। শিক্ষকরা নিজেরাও অনেক কিছু বোঝেন না। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত নয়। তরুণরা চাকরি খোঁজে। উদ্ভাবন করতে ভয় পায়। প্রযুক্তির ব্যবহার জানে, কিন্তু তৈরি করতে পারে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার নেই। নেই পর্যাপ্ত গবেষণা তহবিল। সরকারি বাজেটে গবেষণার জন্য বরাদ্দ খুবই কম। আমরা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি ব্যবহার করি, কিন্তু আমাদের নিজস্ব কিছু নেই। এই পরনির্ভরতা আমাদের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।
আমাদের সমাজে আমরা প্রায়ই দেখি, যেকোনো জাতীয় সংকট বা বৈশ্বিক ইস্যুতে আবেগপ্রবণ ফেসবুক পোস্ট, ইউটিউব ভিডিও কিংবা নানা রকম প্রচারণার ছড়াছড়ি। এগুলো মাঝে মাঝে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখলেও, বাস্তবিক অর্থে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তা কার্যকর নয়। কারণ আজকের পৃথিবীতে যুদ্ধে বিজয়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অর্থনৈতিক সক্ষমতা, প্রযুক্তিগত নিয়ন্ত্রণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনার দক্ষতা। আবেগ দিয়ে একসময় স্বাধীনতা অর্জন হয়। কিন্তু তা ধরে রাখতে চাই দক্ষতা। চাই প্রযুক্তি। চাই জ্ঞান। চাই তথ্যের ভান্ডার। যদি আমাদের সন্তানরা শুধু ভোক্তা হয়, তবে ভবিষ্যতে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। তারা অন্যের সিদ্ধান্ত মেনে চলবে।
এ অবস্থায় আমাদের সর্বপ্রথম আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন জরুরি। হাতে-কলমে শিক্ষা, প্রকল্পভিত্তিক পাঠদান চালু করতে হবে। গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে উদ্ভাবন উৎসাহিত করতে হবে। প্রযুক্তি খাতে স্টার্টআপ গড়ে তুলতে হবে। তরুণদের জন্য প্রণোদনা দিতে হবে। সাইবার নিরাপত্তায় দক্ষতা বাড়াতে হবে। তথ্য সুরক্ষা ছাড়া স্বাধীনতা টিকবে না। জাতীয় তথ্যভিত্তিক নীতিমালা দরকার। বিদেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করব, কিন্তু তার ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকবে নিজের হাতে। মাধ্যমিক স্তর থেকেই কোড শেখানো উচিত। বিজ্ঞান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিকসÑএসব বিষয়ে আগ্রহ তৈরি করতে হবে। নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ভিডিও প্ল্যাটফরম তৈরি করা দরকার। এতে তথ্য নিয়ন্ত্রণ নিজ হাতে থাকবে।
আগামী দিনের যুদ্ধ হবে অদৃশ্য। সেখানে শত্রু মানে শুধু সেনাবাহিনী নয়। শত্রু হতে পারে সফটওয়্যার, হতে পারে ভুয়া খবর, হতে পারে ম্যালওয়্যার। আমরা যদি প্রস্তুত না হই, তাহলে প্রযুক্তিই আমাদের বিপদে ফেলবে। আবার প্রযুক্তিই পারে আমাদের রক্ষা করতে। তাই আমাদের দরকার নিজের তৈরি সফটওয়্যার, নিজের তৈরি হার্ডওয়্যার, নিজের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আমাদের সন্তানদের বইয়ের পাশাপাশি ল্যাপটপ দিতে হবে। তাদের শুধু কবিতা নয়, কোডও শিখতে হবে। শুধু সাহিত্য নয়, সায়েন্সও ভালোবাসতে হবে।
স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব মানে শুধু পতাকা নয়। এটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা। যদি সেই ক্ষমতা অন্যের হাতে যায়, তবে স্বাধীনতা কাগুজে থাকে। আমরা যদি প্রযুক্তির মালিক না হই, তথ্যের দখলে না থাকি, তাহলে অন্যরা আমাদের চালাবে। ভবিষ্যৎ লড়াই হবে স্মার্ট, দ্রুত আর নীরব। সেখানে আগে প্রস্তুতি নেওয়াই হবে বুদ্ধিমত্তা।
একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শক্তি তার জনগণ। আর জনগণের সবচেয়ে বড় শক্তি জ্ঞান, দক্ষতা ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা। আমরা যদি শুধু আবেগে থাকি, বাস্তবতা না বুঝি, তাহলে একদিন হারিয়ে যাব। কিন্তু যদি আমরা জ্ঞানকে শক্তি করি, প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করি, তাহলে কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না।
লেখক : সাংবাদিক
বিশ্বায়নের যুগে কোনো রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব শুধু আবেগ দিয়ে রক্ষা করা যায় না। আগামীতে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হতে যাচ্ছে তথ্য আর প্রযুক্তি। যুদ্ধ মানে ভারী অস্ত্র আর সেনাবাহিনী নয়, যুদ্ধ হতে পারে অদৃশ্য। শত্রু হতে পারে সফটওয়্যার। তাই উন্নত প্রযুক্তিই আগামী দিনে হতে যাচ্ছে একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষাব্যবস্থা।
আগে সাম্রাজ্যবাদ মানে ছিল শারীরিকভাবে দখল। এখন এটি মানসিক দখল। আগে লড়াই হতো বন্দুক দিয়ে। এখন হয় ব্র্যান্ড দিয়ে। গ্লোবাল কোম্পানিগুলো এখন একেকটা রাষ্ট্র। তাদের আছে ডাটা, প্রযুক্তি যোগাযোগব্যবস্থা। তারা কী খাওয়াবে, কী পরাবে, কী ভাবাবেÑসব নিয়ন্ত্রণ করে। তারা ভাষা বদলায়। সংস্কৃতি বদলায়। ইতিহাস ভুলিয়ে দেয়। এটি নিঃশব্দ আগ্রাসন। তথ্য এখন বড় অস্ত্র। কে কত তথ্য নিয়ন্ত্রণ করে, কে কত তথ্যবিশ্লেষণ করতে পারে, তার ওপর নির্ভর করে ক্ষমতা ও শক্তি। যার কাছে যত বেশি তথ্য, এখন সে তত বেশি শক্তিশালী। বিশ্বে এখন ক্ষমতা চলে গেছে প্রযুক্তির হাতে। বড় কোম্পানির হাতে। তারা রাষ্ট্রের চেয়েও শক্তিশালী। মেটা, গুগল, অ্যাপল, আমাজন ও টিকটক তারা আমাদের জীবন জানে। তারা আমাদের চিন্তা জানে। তারা চাইলে আমাদের মনোভাব বদলে দিতে পারে। যারা তথ্যের ওপর দখল রাখে। তারা আসলে ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ করে।
১৯৫০-এর দশকে দক্ষিণ কোরিয়া ছিল এক ধ্বংসস্তূপ। যুদ্ধ শেষ হলেও কিছুই ছিল না। কিন্তু তারা থেমে থাকেনি। তারা শিক্ষা সংস্কার করেছে। প্রযুক্তি ও গবেষণায় বিনিয়োগ করেছে। তারা বলেছে, ‘আমরা শুধু ব্যবহার করব না, আমরা তৈরি করব।’ তাদের স্কুলে বিজ্ঞান শেখানো হয় হাতে-কলমে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা বাধ্যতামূলক। সরকার স্টার্টআপে উৎসাহ দেয়। আজ তারা তৈরি করেছে স্যামসাং, হুন্দাই, এলজি, যা শুধু পণ্য নয়, রাষ্ট্রীয় সক্ষমতার প্রতীক। তাদের ‘কে-পপ’ এখন বিশ্বের তরুণদের মন জয় করেছে। তাদের সিনেমা, ভাষা, পোশাক সব ছড়িয়ে পড়েছে। এটাই সফট পাওয়ার।
ইসরাইল ছোট দেশ। তারাও নিরাপত্তার বিষয়টি নতুনভাবে দেখেছে। তারা শুধু সেনাবাহিনীর ওপর নির্ভর করে না। তারা সাইবার প্রতিরক্ষা গড়েছে। তারা শিশুদের ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তি শেখায়। হ্যাকিং শেখায়। ডাটা বিশ্লেষণ শেখায়। তারা জানে, ভবিষ্যতের যুদ্ধ হবে সাইবারে। তাদের অনেক বড় স্টার্টআপ আছে। তাদের অনেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমেরিকা ও ইউরোপ। তারা জানে, অস্ত্রের চেয়ে বেশি কার্যকর তথ্য ও প্রযুক্তি।
আমরা এখনো বই মুখস্থ করি। পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেলে খুশি হই। গবেষণা করি না। চিন্তা করতে শেখাই না। আমাদের পাঠ্যবই পুরোনো। শিক্ষকরা নিজেরাও অনেক কিছু বোঝেন না। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত নয়। তরুণরা চাকরি খোঁজে। উদ্ভাবন করতে ভয় পায়। প্রযুক্তির ব্যবহার জানে, কিন্তু তৈরি করতে পারে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার নেই। নেই পর্যাপ্ত গবেষণা তহবিল। সরকারি বাজেটে গবেষণার জন্য বরাদ্দ খুবই কম। আমরা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি ব্যবহার করি, কিন্তু আমাদের নিজস্ব কিছু নেই। এই পরনির্ভরতা আমাদের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।
আমাদের সমাজে আমরা প্রায়ই দেখি, যেকোনো জাতীয় সংকট বা বৈশ্বিক ইস্যুতে আবেগপ্রবণ ফেসবুক পোস্ট, ইউটিউব ভিডিও কিংবা নানা রকম প্রচারণার ছড়াছড়ি। এগুলো মাঝে মাঝে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখলেও, বাস্তবিক অর্থে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তা কার্যকর নয়। কারণ আজকের পৃথিবীতে যুদ্ধে বিজয়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অর্থনৈতিক সক্ষমতা, প্রযুক্তিগত নিয়ন্ত্রণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনার দক্ষতা। আবেগ দিয়ে একসময় স্বাধীনতা অর্জন হয়। কিন্তু তা ধরে রাখতে চাই দক্ষতা। চাই প্রযুক্তি। চাই জ্ঞান। চাই তথ্যের ভান্ডার। যদি আমাদের সন্তানরা শুধু ভোক্তা হয়, তবে ভবিষ্যতে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। তারা অন্যের সিদ্ধান্ত মেনে চলবে।
এ অবস্থায় আমাদের সর্বপ্রথম আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন জরুরি। হাতে-কলমে শিক্ষা, প্রকল্পভিত্তিক পাঠদান চালু করতে হবে। গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে উদ্ভাবন উৎসাহিত করতে হবে। প্রযুক্তি খাতে স্টার্টআপ গড়ে তুলতে হবে। তরুণদের জন্য প্রণোদনা দিতে হবে। সাইবার নিরাপত্তায় দক্ষতা বাড়াতে হবে। তথ্য সুরক্ষা ছাড়া স্বাধীনতা টিকবে না। জাতীয় তথ্যভিত্তিক নীতিমালা দরকার। বিদেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করব, কিন্তু তার ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকবে নিজের হাতে। মাধ্যমিক স্তর থেকেই কোড শেখানো উচিত। বিজ্ঞান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিকসÑএসব বিষয়ে আগ্রহ তৈরি করতে হবে। নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ভিডিও প্ল্যাটফরম তৈরি করা দরকার। এতে তথ্য নিয়ন্ত্রণ নিজ হাতে থাকবে।
আগামী দিনের যুদ্ধ হবে অদৃশ্য। সেখানে শত্রু মানে শুধু সেনাবাহিনী নয়। শত্রু হতে পারে সফটওয়্যার, হতে পারে ভুয়া খবর, হতে পারে ম্যালওয়্যার। আমরা যদি প্রস্তুত না হই, তাহলে প্রযুক্তিই আমাদের বিপদে ফেলবে। আবার প্রযুক্তিই পারে আমাদের রক্ষা করতে। তাই আমাদের দরকার নিজের তৈরি সফটওয়্যার, নিজের তৈরি হার্ডওয়্যার, নিজের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আমাদের সন্তানদের বইয়ের পাশাপাশি ল্যাপটপ দিতে হবে। তাদের শুধু কবিতা নয়, কোডও শিখতে হবে। শুধু সাহিত্য নয়, সায়েন্সও ভালোবাসতে হবে।
স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব মানে শুধু পতাকা নয়। এটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা। যদি সেই ক্ষমতা অন্যের হাতে যায়, তবে স্বাধীনতা কাগুজে থাকে। আমরা যদি প্রযুক্তির মালিক না হই, তথ্যের দখলে না থাকি, তাহলে অন্যরা আমাদের চালাবে। ভবিষ্যৎ লড়াই হবে স্মার্ট, দ্রুত আর নীরব। সেখানে আগে প্রস্তুতি নেওয়াই হবে বুদ্ধিমত্তা।
একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শক্তি তার জনগণ। আর জনগণের সবচেয়ে বড় শক্তি জ্ঞান, দক্ষতা ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা। আমরা যদি শুধু আবেগে থাকি, বাস্তবতা না বুঝি, তাহলে একদিন হারিয়ে যাব। কিন্তু যদি আমরা জ্ঞানকে শক্তি করি, প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করি, তাহলে কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না।
লেখক : সাংবাদিক
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
১১ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
১১ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
১১ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১ দিন আগে