চৈত্র মাসের ওয়াজ পৌষ মাসে করবেন না

মিনার রশীদ
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১১: ৪০

এক.

গল্পটি অনেকেরই জানা আছে। তবুও একবার স্মরণ করিয়ে দিলে কলামটির বক্তব্য মন ও মননে ভালো করে প্রবেশ করবে। বিশেষ করে যাদের উদ্দেশে কথাগুলো বলতে চাচ্ছি, আশা করি তাদের কঠিন মর্মে ঢুকতে সক্ষম হবে। জনৈক হুজুর ওয়াজ মাহফিলে তার বক্তৃতায় বলেন, পরনারীর শাড়ি দিয়ে তৈরি কাঁথা ব্যবহার করা কোনো পুরুষের জন্যে জায়েজ নয়। ওয়াজ শেষে সেই ওয়াজিন নিকটস্থ এক গৃহস্থ বাড়িতে রাত যাপন করেন। বেচারা গৃহস্থ মহা মুশকিলে পড়ে যান, কারণ চেক করে দেখেন বাড়িতে যত কাঁথা ছিল তার সবগুলোয়ই মেয়েদের শাড়ির অংশ রয়েছে। বাড়িতে কম্বল বা লেপজাতীয় কিছু ছিল না। ফলে সেই চ্যাংড়া হুজুরকে কোনো কাঁথা ছাড়াই পৌষ মাসের কনকনে ঠান্ডা রাতটি কাটাতে হয়েছিল । পরের দিন যে ওস্তাদের কাছ থেকে এই ‘ভয়ংকর’ ওয়াজটি শিখেছিলেন তার কাছে গিয়ে নিজের এই দুর্দশার কথাটি অবগত করেন । সব শুনে বড় হুজুর বলেন, ‘বেয়াক্কেল কোথাকার, চৈত্র মাসের জন্য যে ওয়াজ শিখিয়েছিলাম তা তুমি গিয়ে পৌষ মাসে পরিবেশন করে ফেলেছ!’

বিজ্ঞাপন

তেমনি বাংলাদেশের কিছু নেতানেত্রী বা সম-ঘরানার বুদ্ধিজীবী ঠাহর করতে পারছেন না যে, পৌষ মাস এসে গেছে, অথচ এখনো চেতনার চৈত্র মাসের ওয়াজ করে যাচ্ছেন। কাউকে কাউকে দেখে মালুম হয় পতিত স্বৈরাচারের চেতনার ভূত তাদের কাঁধে সওয়ার হয়েছে। জনগণ ২০২৫ সালের জীবনযন্ত্রণার কথা শুনতে চায়। ৫০ বছর আগের প্যানপ্যানানি শুনতে চায় না।

চারটি প্রেম এদেশের রাজনীতিতে বা সমাজনীতিতে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ—এক. ইন্ডিয়া প্রেম; দুই. আওয়ামী প্রেম; তিন. আলো-স্টার প্রেম এবং চার. ফ্যাসিবাদ-সৃষ্ট চিহ্নিত অলিগার্ক প্রেম। আপনি যতবড় কুতুব হন না কেন এই চারটি প্রেমের মধ্যে যার মধ্যে একটি দেখা যাবে, জনগণ তাকেই বাকির খাতায় ফেলে দেবে। কাজেই একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে একটু সতর্ক করে দিচ্ছি। এটা একজন শুভাকাঙ্ক্ষীর সতর্কতামূলক সমালোচনা, শত্রুর ধ্বংসাত্মক সমালোচনা নয়! সবার মনে রাখতে হবে, এটা সত্তর সালের বাংলাদেশ নয়, এটা ২০০১-২০০৬ সালেরও বাংলাদেশ নয়, এটা ২০২৪/২০২৫ সালের বাংলাদেশ। ৫০ বছরের কামাই অনেক অশরীরী চেতনার ভূতকে খাইয়েছি। এখন শরীরী বনি আদমগুলোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এই শরীরী মানুষগুলোর জীবনমানের উন্নয়নের কথা বলতে হবে, এই শরীরী মানুষগুলোর জীবনযন্ত্রণা লাঘবের কথা বলতে হবে এবং তদনুযায়ী কাজ করতে হবে। শুধু লিপ সার্ভিস দিলে চলবে না। ‘আসিতেছে শুভদিন, দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা শুধিতে হইবে ঋণ!’

দুই.

গরুর গোশত খাওয়া সব মুসলমানের জন্য ওয়াজেব নয়। কিন্তু ঈমানের বিশুদ্ধতা বা পরিপূর্ণতার জন্য কারও কারও জন্য তা ওয়াজেব হয়ে পড়তে পারে। যেমন কেউ নতুন মুসলমান হলেন, কিন্তু গরুর গোশত খেতে ইতস্তত করেন, তবে বুঝতে হবে তার মন আগের ধ্যান-ধারণা থেকে পুরাপুরি মুক্ত হয়ে পড়েনি। পারিপার্শ্বিক কোনো চাপে পড়ে মুসলমান হয়েছেন, মন থেকে হননি।

তেমনি আমাদের মন ও মানসকে পুরাপুরি স্বাধীন ও সার্বভৌম করতে হলেও তেমন কিছু কাজ করে দেখাতে হবে, বিশেষ করে ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায় পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে। চারপাশের আলামত দেখে মনে হচ্ছে, আমরাও সেই নওমুসলিমদের মতো, যারা গরুর গোশত খেতে ইতস্তত করছি। কাজেই কাছাকাছি কিছিমের একটি এক্সারসাইজ আমাদের জন্যে ওয়াজেব হয়ে পড়েছে। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হবে আমাদের নিজেদের স্বার্থে। আমরা বাইরের কোন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করব, আর কার সঙ্গে করব না, তা হতে হবে আমাদের নিজেদের স্বাধীন ইচ্ছায়, হতে হবে—‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ তথা শির।’ কোনো খসমের (স্বামী) চোখের ইশারায় এই কাজটি করা যাবে না।

১৯৭১ সালে আমরা রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন হলেও এই চিত্তটাকে কখনোই স্বাধীন করতে পারিনি। ক্ষমতালোভী বা চরম স্বৈরাচারী মানসিকতাসম্পন্ন কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নিজের অহম-মতের লাল ঘোড়া জনগণের ওপর দাবড়ানোর জন্য দেশের সার্বভৌমত্বকে অন্যের কাছে বন্ধক দিয়ে রেখেছে। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের এই রথটি মাঝে মাঝে ট্র্যাকে ওঠাতে পারলেও মিরজাফর আর ঘষেটি বেগমদের কারণে তা ধরে রাখতে পারিনি। আগে মিরজাফর ও ঘষেটি বেগম ছিলেন একজন করে, এখন হয়েছেন শত শত বা হাজারে হাজার।

ফ্যাসিবাদের লেসপেন্সাররা এক্ষেত্রে একটি দেশের সঙ্গে আমাদের যে নিকাহ পড়িয়ে দিয়েছিল, আমাদের জেন-জি প্রজন্ম সেই নিকাহর বন্ধন থেকে আমাদের বের করে এনেছে। ওই জেন-জি’র মাঝে সব রাজনৈতিক দলের ও সব শ্রেণির মানুষের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। এজন্যই মনে করি, বিএনপি আমার, জামায়াত আমার, ছাত্র-সমন্বয়করা আমার, বর্তমান সরকারও আমার। গণতন্ত্রচর্চার নিমিত্তে প্রতিপক্ষের সঙ্গে পারস্পরিকভাবে ফাইট চললেও যথাসময়ে এক লাইনে দাঁড়িয়ে যাওয়াই ২০২৫ সালের রাজনীতি। গলাগলির প্রয়োজন নেই, তবে আগের স্টাইলে বেশি মারামারিও কাম্য নয়। ৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্টের একটা লাগাম যেন সবার গলায় পরানো থাকে।

তিন.

৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্টের পক্ষের শক্তির মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্বের সুযোগটি প্রতিপক্ষ নিতে একটুও বিলম্ব করছে না। ঘরের ভেতরে লুক্কায়িত ইঁদুররা তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছে। গত ২০ জানুয়ারি সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিকের দাবিদার কাগজটি ‘পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনীতির হারিয়ে যাওয়া এক অধ্যায়’ শিরোনামে একটা কলাম ছাপিয়েছে। ওই গুরুকে অনুসরণ করে এক শিষ্য (অন্য একটি কাগজ) ২৭ জানুয়ারি শিরোনাম দিয়েছে, ‘জোরালো সম্পর্কের পথে ঢাকা-ইসলামাবাদ।’ যতটুকু জানতে পেরেছি, এলিট পত্রিকা হিসেবে পরিচিত এরকম ছটি পত্রিকা থেকে নাকি এই সিন্ডিকেটেড প্রচারণাটি শুরু করা হবে। কলাম দুটি খুবই ইন্টারেস্টিং।

দুটো শিরোনামই ‘নিষ্পাপ, নিষ্পাপ’ বলে মনে হয়। কলাম দুটির প্রথমাংশ পড়লে মনের মধ্যে যেন এক নস্টালজিক ভাব এসে যায়। পাঠক প্রস্তুতি নেয় একটা নষ্টালজিক আবহে স্নান করার নিমিত্তে।

২০ জানুয়ারিতে প্রকাশিত সিন্ডিকেট গুরুর কলামটির শুরুটি ছিল এ রকম—‘বাংলাদেশের কূটনীতি পুরোনো দিনের দেয়ালঘড়ির লম্বা দোলকের মতো। ডানে-বাঁয়ে দুলতে থাকে সেটা। গত দেড় দশক সেটা দুলে একদিকে হেলে পড়ে ছিল। এখন হয়তো অন্যদিকে চলার পালা। বিগত সময়ে অনেক দেশের সঙ্গে সম্পর্ক অস্বাভাবিকভাবে ‘ভালো’ ছিল, অনেকের সঙ্গে অস্বাভাবিকভাবে ‘খারাপ’ গেছে। এখন আবার ‘অস্বাভাবিক’ অধ্যায় সংশোধনের কথা হচ্ছে। ঠিক এ সময়ই পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের হারিয়ে যাওয়া যোগাযোগগুলোর খোঁজ পড়েছে। দুই দেশের কূটনীতিবিদ ও রাজনীতিবিদদের মধ্যে কথাবার্তার চল বেড়েছে আবার।’

অর্থাৎ এই গুরু বা মুরব্বি এখন টের পেয়ে গেছেন যে, প্রাকৃতিক নিয়মেই এই দোলক এখন কোনদিকে দুলবে। কাজেই এটাকে থামানো না গেলেও কীভাবে একটু শ্লথ করা যায় বা একটু প্যাঁচ বাজানো যায়, সেই চেষ্টা শুরু করেছেন।

কলামটিতে যেসব সাবহেডিং দিয়েছেন, সেগুলোর দিকে নজর দিলেই মুরব্বির মতলব স্পষ্ট হয়ে পড়বে। লক্ষ করুন সাবহেডিংগুলো—

“এগোতে হলে পেছনের অমীমাংসিত বিষয়ের ফয়সালা জরুরি।

অমীমাংসিত বিষয় কম, কিন্তু জটিলতা অনেক।

রাষ্ট্রীয় উত্তরাধিকার ভাগ-বাটোয়ারা সম্ভব।

বাংলাদেশের জন্য অতীতের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়।

৫৪ বছর আগে-পরের দায়।

টেকসই ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে অতীতের ন্যায্যতার ওপর।”

আসলে কোনো দেশের কূটনীতিই দোলকের মতো নয়। নিজের জাতির স্বার্থে এটি স্থির থাকে। জাতীয় স্বার্থের কোনো ডান-বাম থাকে না! কিন্তু এই কুশীলবরা আমাদের দেশের কূটনীতিকে কখনো দোলকের মতো দোল খাইয়েছেন, কখনোবা আধিপত্যবাদের ফুটবল বানিয়েছেন । কখনো ইলিশ, কখনো আম ডিপ্লোম্যাসি দিয়ে আদিখ্যেতার চরম নমুনা দেখিয়েছেন, আবার জাতির সকল ইজ্জত বিসর্জন দিয়ে পত্নীর স্বপ্নসুখ নিয়ে মূলত উপপত্নী সেজেছেন। এখন বুঝে গেছেন হাত থেকে দোলকের ডাণ্ডাটি বা সেই বলটি ফসকে গেছে। মধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে দোলকটি এখন কোন দিকে দুলবে, সেটি টের পেয়ে গেছেন ! কাজেই সমস্ত সুশীল মগজ ও মুনশিয়ানা কাজে লাগাচ্ছেন, সেটা ঠ্যাক দেওয়া বা ড্যামেজ কন্ট্রোলের নিমিত্তে !

জাতির কপাল খাওয়া এই ইঁদুরেরা নতুন ন্যারেটিভ নির্মাণের কাজে লেগে গেছে। এমন কিছু বায়না বা বয়ান আলগোছে ঢুকিয়ে দিতে চাচ্ছে, যা ভঙ্গুর অর্থনীতির পাকিস্তান কোনোভাবেই পালন করতে পারবে না! মজার ব্যাপার হলো, আমাদের জাতীয় সাইকিতে এই ভাবনাটি আগে কখনোই স্থান পায়নি। প্রথম আলো-সমকাল গং এখন এটি জাতির মগজে ঢোকানোর কোশেশ শুরু করেছে।

সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হলে আগের দেনাপাওনা আগে শোধ করতে হবে—এই বায়না আমাদের মগজে প্রবিষ্ট করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এর মধ্যে আছে, পাকিস্তানের তখনকার বৈদেশিক রিজার্ভ বণ্টনের দাবি (চার বিলিয়ন ডলার) । আমরা কিন্তু পারস্পরিক বোঝাপড়ায় আলাদা হইনি যে, সেই রিজার্ভ ভাগের দাবি করতে পারি । বরং ‘তোর (পাকিস্তানের) সম্পদের খ্যাতা পুড়ি’ বলে লাথি মেরে আলাদা হয়েছি। এই সেপারেশন হয়েছে রক্তক্ষয়ী এক সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে। সেই যুদ্ধে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটিরও অনেক ক্ষতি হয়েছে। আজ ৫০ বছর পরে এসে সেই রিজার্ভের ভাগ চাওয়া কতটুকু যৌক্তিক হবে? তাছাড়া ৯৩ হাজার পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দিকে আমরা ইন্ডিয়ার হাতে তুলে দিয়েছি। যতদূর জানি, সেই যুদ্ধবন্দিদের ব্যবহার করে ইন্ডিয়া কৌশলগত ও আর্থিক ফায়দা গ্রহণ করেছে।

ইন্ডিয়ার হেজেমনি ও থাবা থেকে বাঁচার জন্য আজ যখন শির উঁচু করে দাঁড়ানোর অবকাশ সৃষ্টি হয়েছে, তখনই এই মতলববাজের দল পুরোনো কাসুন্দি ও কৌশল নিয়ে এগিয়ে এসেছে।

অথচ এরা কখনোই ইন্ডিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আগে ইন্ডিয়ার কাছে আমাদের প্রাপ্য সম্পদ বা ক্ষতিপূরণের প্রশ্ন তোলে না! স্বাধীনতার পরপর ইন্ডিয়ার বাহিনী এদেশ থেকে দুই বিলিয়ন ডলারের সম্পদ লুট করেছে। এই কাজে বাধা দেওয়ায় মেজর জলিলকে গুম করা হয়েছিল। তাছাড়া ইন্ডিয়া আমাদের কমন নদীগুলোয় বাঁধ দিয়ে যে আর্থিক ও পরিবেশগত ক্ষতি করেছে, তার পরিমাণ ৫০ বছরে কমপক্ষে ৫০ᳵ8=২০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি হবে। তাছাড়া গত ১৬ বছর মাফিয়া রানি এবং তার অলিগার্কদের মাধ্যমে লুট করেছে কমপক্ষে আরও ২০০ বিলিয়ন ডলার । এই তস্কর বা ডাকাতদের ডাকাতিতে সরাসরি সহায়তার জন্যে ইন্ডিয়া দায়ী। পাকিস্তানের কাছে আগের রিজার্ভের ভাগ চাওয়ার চেয়েও বেশি যৌক্তিক ও ন্যায্য হবে ইন্ডিয়ার কাছে এই ক্ষতিপূরণগুলো দাবি করা।

পাকিস্তানের সঙ্গে সঙ্গে ইন্ডিয়ার কাছে কি কখনো আমরা এই অত্যন্ত ন্যায্য ও অধিকতর নগদ দাবিগুলো তুলতে পারব?

শুক্র-শনিবারও চলবে বিমানবন্দরের শুল্কায়ন কার্যক্রম

প্রধান উপদেষ্টার আদেশে জুলাই সনদের আইনি রূপ দিতে হবে

নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা শুরুর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

আইআরআই’র সঙ্গে নির্বাচনের প্রক্রিয়া ও ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে আলোচনা এনসিপির

দেশে মুক্তি পাচ্ছে জাপানি অ্যানিমে সিরিজ, শিশুদের দেখা নিষেধ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত