ড. আহসান হাবীব ইমরোজ
জাগৃতির কবি ইসমাঈল হোসেন সিরাজীর সেই আক্ষেপ কি আমাদের জন্যও প্রযোজ্য? কী অনলবর্ষী ছন্দে তিনি বলেছেন-
‘দেখ একবার ইতিহাস খুলি
কত উচ্চে তোরা অধিষ্ঠিত ছিলি,
তথা হতে হায়! কেন রে পড়িলি?
নয়ন মেলিয়া দেখ একবার।’
১৮৭১ সালে ১ রমজান চাঁদের কান্তি নিয়ে জন্মেছিলেন বলেই দাদি তার নাম দিয়েছিলেন চাঁদ মিয়া। পূর্ণাঙ্গ নাম ওয়াজেদ আলী খান পন্নী। বাবা ছিলেন সুপণ্ডিত (অন্ধ অথচ কোরআনের হাফেজ) মাহমুদ আলী খান পন্নী। তিনি গৃহশিক্ষকদের কাছে আরবি, ফারসি, উর্দু, বাংলা ও ইংরেজি- এই পাঁচটি ভাষায় বিশেষ দক্ষতা লাভ করেন। তিনি ছিলেন বঙ্গভঙ্গের জন্য গঠিত মোহামেডান প্রভিন্সিয়াল ইউনিয়নের সহসভাপতি, লর্ড কার্জনের বিদায়সম্ভাষণ সভার সভাপতি, প্রভিন্সিয়াল মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি। করটিয়া হাইস্কুল, সা’দত কলেজ প্রতিষ্ঠা তার অবিস্মরণীয় কীর্তি। তিনি যে ওয়াক্ফ দলিল করেন, তাতে শিক্ষা ও সংস্কারের জন্য তার বার্ষিক দানের পরিমাণ বর্তমানের প্রায় ১ কোটি টাকা।
কবি গোলাম মোস্তফা তাকে বলেছেন, ‘বাংলার দ্বিতীয় মুহসীন।
প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ চাঁদ মিয়াকে জেলখানায় দেখতে গিয়ে বলেছেন, ‘এই লোহার কপাটটি সামনে না থাকলে আজ পায়ের তার ধুলা মাথায় নিয়ে বাড়ি ফিরতাম।’ সাবেক মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান বলেছিলেন, ‘তার মতো লোক বিরল। তিনি সর্বভারতীয় পর্যায়ের নেতা ছিলেন।’ সওগাত সম্পাদক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘তিনি নিজেকে রিক্ত করিয়া তাহার সর্বস্ব জনহিতকর কাজে ব্যয় করিয়াছেন।’ ড. আবদুল্লাহ বলেন, ‘তিনিই সম্ভবত একমাত্র জমিদার যার ভাগ্যে জুটেছিল দীর্ঘদিনের কারাবরণ।’ লন্ডন মিউজিয়ামে চাঁদ মিয়ার তৈলচিত্রের নিচে লেখা আছে, ‘One who defied the British.’
মওলানা ভাসানী বলেন, ‘জমিদাররা যদি সবাই চাঁদ মিয়ার মতো হতো, তবে কখনোই জমিদারবিরোধী আন্দোলন করতাম না।’ বাংলা-বিহার-আসাম-ওড়িশার শাসনকর্তা দাউদ খান, সোলায়মান খান কররানীদের সুযোগ্য বংশধর হচ্ছে করটিয়ার পন্নী পরিবার। ৪০০ বছর আগের আতিয়া মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সাঈদ খান পন্নীর সুযোগ্য উত্তরসূরি হলেন সা’দত আলী খান পন্নী। তার সন্তান হাফিজ মাহমুদ আলী খান পন্নী। তারই সুযোগ্য নেতৃত্বে ১৪০ বছর আগে ১৮৮৪ সালে এই করটিয়ায় বৃহত্তর মোমেনশাহীর প্রথম মাসিক পত্রিকা ‘আখবারে ইসলামিয়া’ প্রকাশ হতো নিজস্ব প্রেস করটিয়ার মাহমুদিয়া প্রেস থেকে এবং ভারতবর্ষের তৎকালীন রাজধানী কলকাতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সেটি চলত।
কোরআন শরিফের প্রথম বাংলা অনুবাদক মৌলবি নঈমুদ্দীন, যাকে সে যুগের শ্রেষ্ঠ আলেম বলা হতো। তার কোরআনের অনুবাদসহ প্রায় ৩৭টি বইয়ের শুভসূচনা হয় করটিয়ার মাহমুদিয়া প্রেস থেকে সা’দত আলী খান এবং হাফেজ মাহমুদের তদারকিতে। ১৯১৩ সালে চাঁদ মিয়ার আয়োজনে এবং স্যার সলিমুল্লাহর সভাপতিত্বে এই করটিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় সমগ্র ভারতের মুসলিম এডুকেশনাল কনফারেন্স। এই করটিয়ার নামদার কুমুল্লি খানপাড়া গ্রামের ফজিলাতুন্নেসা ১৯২৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯২৮ সালে গণিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য লন্ডনে গমন করেন। নিখিল বঙ্গে তিনিই প্রথম মুসলিম মহিলা গ্র্যাজুয়েট।
আটিয়ার চাঁদ ওয়াজেদ আলী খান পন্নীর সার্বিক সহযোগিতা ও প্রেরণায় প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ তার যৌবনের ২৮টি বছর এবং সমগ্র জীবনের (৮৪) এক-তৃতীয়াংশ সময় কাটিয়েছেন করটিয়ার এই কাদামাটির ভেতর বাড়ি বাড়ি গিয়ে চা-মুড়ি খেয়ে সত্যিকার মানুষ গড়তে।
এখানেই প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলা, বিহার, আসাম, ওড়িশার প্রথম মুসলিম কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কলেজ সা’দত কলেজ আর এতে প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল হিসেবে প্রায় ২২ বছর দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশের প্রথম মুসলিম প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ। যিনি তার কর্মদক্ষতায় পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষা বোর্ডের প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে অভিষিক্ত হন (১৯৪৮-৫২)।
চাঁদ মিয়ার প্রতিষ্ঠিত এবং প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ পরিচালিত এই সা’দত কলেজ থেকে বাংলাদেশের সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি ড. এম এন হুদা, আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জেনারেল শামসুল হক, বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান, শাহজাহান সিরাজ, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ ১০ জনের মতো মন্ত্রী এবং ৪০-এর অধিক এমপি বের হয়েছেন। পাশাপাশি শিক্ষা-সাহিত্য ক্ষেত্রে ড. আশরাফ সিদ্দিকী, ড. আবদুল্লাহ, ড. আব্দুস সাত্তার, কবি তালিম হোসেন প্রমুখ।
চাঁদ মিয়া এতটা জনপ্রিয় ছিলেন, ব্রিটিশ সরকার তাকে গ্রেপ্তারের সময় ১৭ ডিসেম্বর ১৯২১ সালে টাঙ্গাইলে প্রায় ১০ হাজার বিক্ষুব্ধ লোক এবং মোমেনশাহী স্টেশনে প্রায় ৩০ হাজার লোক একত্র হয়েছিল। তাকে গ্রেপ্তারকারী দুজন পুলিশ চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছিল।
১৯৩৬ সালের ২৫ এপ্রিল ৮৮ বছর আগে আজকের এই দিনে তার মৃত্যুর পর করটিয়ার মতো এক নিভৃত গ্রামে প্রায় ১০-১২ হাজার লোক জানাজায় শামিল হয়েছিল।
আমরা সেই গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে আজ ভুলতে বসেছি। কিন্তু সেই স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাস এবং মহান পুরুষদের শিক্ষা ও সংগ্রামই আমাদের এলাকা এমনকি দেশ ও জাতির নবজাগরণ আনতে পারে। আটিয়ার চাঁদ ও প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ মিলে ১৯১৯ থেকে ১৯৪৭-এ ২৮ বছরে অজপাড়াগাঁ করটিয়ার সার্বিক ভ্যালু বৃদ্ধি করে শুধু টাঙ্গাইল, বাংলাদেশ বা উপমহাদেশ নয়, বিশ্বের বুকে এই জনপদকে এক গৌরবোজ্জ্বল জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিলেন। এরপরও এ এলাকার তাদের শত শত অনুরাগী-শিক্ষার্থী আমাদের পূর্বপুরুষরা এ ধারাকে বেগবান রেখেছেন। কিন্তু এখন একটি কঠিন প্রশ্ন এসেই যায়, আমি, আপনি বা আমরা কী করছি? আমরা কী বৃহত্তর এ জনপদের ভ্যালু বাড়াতে, নাকি নিজের ভ্যালু বা আখের গোছাতে ব্যস্ত? যদি অকৃতজ্ঞের মতো শুধু নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকি আজ, মহা-হইচই হলেও একদিন হারিয়ে যাব আর আখেরেও হিসাব দিতে কষ্ট হবে। নয় কি?
লেখক : আহ্বায়ক, ওয়াজেদ-ইব্রাহীম স্মৃতি সংসদ
জাগৃতির কবি ইসমাঈল হোসেন সিরাজীর সেই আক্ষেপ কি আমাদের জন্যও প্রযোজ্য? কী অনলবর্ষী ছন্দে তিনি বলেছেন-
‘দেখ একবার ইতিহাস খুলি
কত উচ্চে তোরা অধিষ্ঠিত ছিলি,
তথা হতে হায়! কেন রে পড়িলি?
নয়ন মেলিয়া দেখ একবার।’
১৮৭১ সালে ১ রমজান চাঁদের কান্তি নিয়ে জন্মেছিলেন বলেই দাদি তার নাম দিয়েছিলেন চাঁদ মিয়া। পূর্ণাঙ্গ নাম ওয়াজেদ আলী খান পন্নী। বাবা ছিলেন সুপণ্ডিত (অন্ধ অথচ কোরআনের হাফেজ) মাহমুদ আলী খান পন্নী। তিনি গৃহশিক্ষকদের কাছে আরবি, ফারসি, উর্দু, বাংলা ও ইংরেজি- এই পাঁচটি ভাষায় বিশেষ দক্ষতা লাভ করেন। তিনি ছিলেন বঙ্গভঙ্গের জন্য গঠিত মোহামেডান প্রভিন্সিয়াল ইউনিয়নের সহসভাপতি, লর্ড কার্জনের বিদায়সম্ভাষণ সভার সভাপতি, প্রভিন্সিয়াল মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি। করটিয়া হাইস্কুল, সা’দত কলেজ প্রতিষ্ঠা তার অবিস্মরণীয় কীর্তি। তিনি যে ওয়াক্ফ দলিল করেন, তাতে শিক্ষা ও সংস্কারের জন্য তার বার্ষিক দানের পরিমাণ বর্তমানের প্রায় ১ কোটি টাকা।
কবি গোলাম মোস্তফা তাকে বলেছেন, ‘বাংলার দ্বিতীয় মুহসীন।
প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ চাঁদ মিয়াকে জেলখানায় দেখতে গিয়ে বলেছেন, ‘এই লোহার কপাটটি সামনে না থাকলে আজ পায়ের তার ধুলা মাথায় নিয়ে বাড়ি ফিরতাম।’ সাবেক মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান বলেছিলেন, ‘তার মতো লোক বিরল। তিনি সর্বভারতীয় পর্যায়ের নেতা ছিলেন।’ সওগাত সম্পাদক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘তিনি নিজেকে রিক্ত করিয়া তাহার সর্বস্ব জনহিতকর কাজে ব্যয় করিয়াছেন।’ ড. আবদুল্লাহ বলেন, ‘তিনিই সম্ভবত একমাত্র জমিদার যার ভাগ্যে জুটেছিল দীর্ঘদিনের কারাবরণ।’ লন্ডন মিউজিয়ামে চাঁদ মিয়ার তৈলচিত্রের নিচে লেখা আছে, ‘One who defied the British.’
মওলানা ভাসানী বলেন, ‘জমিদাররা যদি সবাই চাঁদ মিয়ার মতো হতো, তবে কখনোই জমিদারবিরোধী আন্দোলন করতাম না।’ বাংলা-বিহার-আসাম-ওড়িশার শাসনকর্তা দাউদ খান, সোলায়মান খান কররানীদের সুযোগ্য বংশধর হচ্ছে করটিয়ার পন্নী পরিবার। ৪০০ বছর আগের আতিয়া মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সাঈদ খান পন্নীর সুযোগ্য উত্তরসূরি হলেন সা’দত আলী খান পন্নী। তার সন্তান হাফিজ মাহমুদ আলী খান পন্নী। তারই সুযোগ্য নেতৃত্বে ১৪০ বছর আগে ১৮৮৪ সালে এই করটিয়ায় বৃহত্তর মোমেনশাহীর প্রথম মাসিক পত্রিকা ‘আখবারে ইসলামিয়া’ প্রকাশ হতো নিজস্ব প্রেস করটিয়ার মাহমুদিয়া প্রেস থেকে এবং ভারতবর্ষের তৎকালীন রাজধানী কলকাতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সেটি চলত।
কোরআন শরিফের প্রথম বাংলা অনুবাদক মৌলবি নঈমুদ্দীন, যাকে সে যুগের শ্রেষ্ঠ আলেম বলা হতো। তার কোরআনের অনুবাদসহ প্রায় ৩৭টি বইয়ের শুভসূচনা হয় করটিয়ার মাহমুদিয়া প্রেস থেকে সা’দত আলী খান এবং হাফেজ মাহমুদের তদারকিতে। ১৯১৩ সালে চাঁদ মিয়ার আয়োজনে এবং স্যার সলিমুল্লাহর সভাপতিত্বে এই করটিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় সমগ্র ভারতের মুসলিম এডুকেশনাল কনফারেন্স। এই করটিয়ার নামদার কুমুল্লি খানপাড়া গ্রামের ফজিলাতুন্নেসা ১৯২৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯২৮ সালে গণিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য লন্ডনে গমন করেন। নিখিল বঙ্গে তিনিই প্রথম মুসলিম মহিলা গ্র্যাজুয়েট।
আটিয়ার চাঁদ ওয়াজেদ আলী খান পন্নীর সার্বিক সহযোগিতা ও প্রেরণায় প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ তার যৌবনের ২৮টি বছর এবং সমগ্র জীবনের (৮৪) এক-তৃতীয়াংশ সময় কাটিয়েছেন করটিয়ার এই কাদামাটির ভেতর বাড়ি বাড়ি গিয়ে চা-মুড়ি খেয়ে সত্যিকার মানুষ গড়তে।
এখানেই প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলা, বিহার, আসাম, ওড়িশার প্রথম মুসলিম কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কলেজ সা’দত কলেজ আর এতে প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল হিসেবে প্রায় ২২ বছর দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশের প্রথম মুসলিম প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ। যিনি তার কর্মদক্ষতায় পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষা বোর্ডের প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে অভিষিক্ত হন (১৯৪৮-৫২)।
চাঁদ মিয়ার প্রতিষ্ঠিত এবং প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ পরিচালিত এই সা’দত কলেজ থেকে বাংলাদেশের সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি ড. এম এন হুদা, আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জেনারেল শামসুল হক, বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান, শাহজাহান সিরাজ, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ ১০ জনের মতো মন্ত্রী এবং ৪০-এর অধিক এমপি বের হয়েছেন। পাশাপাশি শিক্ষা-সাহিত্য ক্ষেত্রে ড. আশরাফ সিদ্দিকী, ড. আবদুল্লাহ, ড. আব্দুস সাত্তার, কবি তালিম হোসেন প্রমুখ।
চাঁদ মিয়া এতটা জনপ্রিয় ছিলেন, ব্রিটিশ সরকার তাকে গ্রেপ্তারের সময় ১৭ ডিসেম্বর ১৯২১ সালে টাঙ্গাইলে প্রায় ১০ হাজার বিক্ষুব্ধ লোক এবং মোমেনশাহী স্টেশনে প্রায় ৩০ হাজার লোক একত্র হয়েছিল। তাকে গ্রেপ্তারকারী দুজন পুলিশ চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছিল।
১৯৩৬ সালের ২৫ এপ্রিল ৮৮ বছর আগে আজকের এই দিনে তার মৃত্যুর পর করটিয়ার মতো এক নিভৃত গ্রামে প্রায় ১০-১২ হাজার লোক জানাজায় শামিল হয়েছিল।
আমরা সেই গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে আজ ভুলতে বসেছি। কিন্তু সেই স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাস এবং মহান পুরুষদের শিক্ষা ও সংগ্রামই আমাদের এলাকা এমনকি দেশ ও জাতির নবজাগরণ আনতে পারে। আটিয়ার চাঁদ ও প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ মিলে ১৯১৯ থেকে ১৯৪৭-এ ২৮ বছরে অজপাড়াগাঁ করটিয়ার সার্বিক ভ্যালু বৃদ্ধি করে শুধু টাঙ্গাইল, বাংলাদেশ বা উপমহাদেশ নয়, বিশ্বের বুকে এই জনপদকে এক গৌরবোজ্জ্বল জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিলেন। এরপরও এ এলাকার তাদের শত শত অনুরাগী-শিক্ষার্থী আমাদের পূর্বপুরুষরা এ ধারাকে বেগবান রেখেছেন। কিন্তু এখন একটি কঠিন প্রশ্ন এসেই যায়, আমি, আপনি বা আমরা কী করছি? আমরা কী বৃহত্তর এ জনপদের ভ্যালু বাড়াতে, নাকি নিজের ভ্যালু বা আখের গোছাতে ব্যস্ত? যদি অকৃতজ্ঞের মতো শুধু নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকি আজ, মহা-হইচই হলেও একদিন হারিয়ে যাব আর আখেরেও হিসাব দিতে কষ্ট হবে। নয় কি?
লেখক : আহ্বায়ক, ওয়াজেদ-ইব্রাহীম স্মৃতি সংসদ
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
৮ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
৮ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
৮ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১ দিন আগে