জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করব। ক্ষমতায় যাই বা না যাই দুর্নীতিকে মাটিতে নামিয়ে না আনা পর্যন্ত আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। দুর্নীতিকে লাল ও সন্ত্রাসকে কালো কার্ড দেখানো হবে।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর মিরপুরে পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদাছোঁড়াছুড়ি না করে রাজনীতিকে নীতি দিয়েই লড়াইয়ের জন্য সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা একটা অর্থবহ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। এক্ষেত্রে সব বন্ধু সংগঠন-প্রার্থী এবং তাদের কর্মী-সহযোগী-নেতাদের অনুরোধ জানাবো, রাজনীতিটা যেন রাজনীতি দিয়েই লড়েন।
রাজনীতিটা যেন নীতি দিয়েই হয়। রাজনীতিতে নেমে যেন আমরা কাদাছোঁড়াছুড়ি না করি। আমরা যেন পরিবেশকেও নষ্ট না করি। আমরা যেন গায়ের জোর না দেখাই এবং কালো টাকা দিয়ে কারো বিবেক কেনার দু:সাহস না দেখাই। আমরা এটাকে ঘৃণা করি, আমাদের চিন্তা-কল্পনায় এসব নেই।
এ সময় জামায়াত আমির বলেন, আমরা নির্বাচিত হলে দেশের ভাঙাচোরা অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আনা হবে। আমরা নির্বাচিত হলে সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে নারী ও পুরুষ সবাই তাদের যোগ্যতা ও প্রয়োজন অনুযায়ী দেশ গঠনে অংশগ্রহণ করবে। মা ও বোনদের ঘরে ও কর্মস্থলে পূর্ণ নিরাপত্তা ও সম্মান নিশ্চিত করা হবে। জামায়াত কাউকে জোর করে বোরখা পরাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের ৫৪ বছর পূর্ণ হলেও চারিত্রিক সম্পদের অভাবের কারণে দেশকে ভালো করে গড়ে তুলতে পারলাম না। বিভিন্ন সময়ে যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা কেবল নিজেদেরই উন্নয়ন করেছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা নির্বাচিত হলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাবো যেখানে পড়ালেখা শেষে যোগ্যতা অনুযায়ী সবার কর্মের ব্যবস্থা করা হবে। জন্মের পরে সব শিশুকে সঠিক চিকিৎসা ও ভালো শিক্ষার মাধ্যমে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
জামায়াত আমির নিজ নির্বাচনি এলাকা ঢাকা-১৫ আসনের বিভিন্ন সমস্যা উল্লেখ করে বলেন, আমরা নির্বাচিত হলে এ এলাকায় সন্ত্রাসের কালো ছায়া দূর করব এবং সবার কল্যাণের জন্য ড্রেনগুলো পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখবো।
যুব সমাজকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমরা তোমাদেরকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলব এবং আগামীতে তোমাদেরকে নিয়েই আমরা সুন্দর দেশ গঠনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সবাইকে যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, অর্থবহ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আগামীতে যেন কোনো প্রকার কাদা ছোড়াছুড়ি ও কালো টাকার ছড়াছড়ি না হয়। যারা নির্বাচিত হবে তাদেরকে আমরা অভিনন্দন জানাবো ও সহযোগিতা করব।
পেশাজীবী পরিষদ ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার কাজী আবিদ হাসান সিদ্দিকের সভাপতিত্বে ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও পেশাজীবী পরিষদ ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম প্রমুখ।

