রাজধানীর শাহবাগে ৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে আন্দোলনরত চাকরিপ্রত্যাশী পরীক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ এবং অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ঘটনাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ ও ‘গণতান্ত্রিক অধিকার খর্বকারী’ বলে নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে সংঘটিত এই ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ সাধারণ আন্দোলনকারীরা আহত হন; পুলিশি তৎপরতা ঘিরে ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন মহলে।
জানা যায়, বিকেলে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন বিসিএস পরীক্ষার্থীরা। তারা দাবি জানান- চলমান জাতীয় জরুরি পরিস্থিতি ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক স্থবিরতার প্রেক্ষিতে ৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করে নতুন তারিখ ঘোষণা করতে হবে। একপর্যায়ে পুলিশ তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে লাঠিচার্জ ও ধাওয়া দেয়। এতে কয়েকজন পরীক্ষার্থী ছত্রভঙ্গ হয়ে আশপাশে আশ্রয় নেন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ডাকসু তাদের বিবৃতিতে জানায়- শান্তিপূর্ণভাবে মত প্রকাশ এবং গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন করা শিক্ষার্থী-পরীক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার। এ ধরনের পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে শান্তি রক্ষা ও উত্তেজনা এড়িয়ে চলা।
তারা বলেন, ‘পুলিশের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে এবং গণতান্ত্রিক পরিসরকে সংকুচিত করে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়া চলবে না।’
ডাকসু সরকারকে আন্দোলনরত পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে সংলাপ ও সমঝোতায় বসার আহ্বান জানায় এবং যৌক্তিক আলোচনাই এই সংকটের একমাত্র টেকসই সমাধান বলে উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা পৃথক বিবৃতিতে পুলিশের ‘নির্মম লাঠিচার্জের’ তীব্র নিন্দা জানায়।
তারা জানান, লাঠিচার্জের সময় পরীক্ষার্থীদের রক্ষায় এগিয়ে গেলে ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাকিব আল ইসলাম শেখ শোভনের ওপরও নির্বিচারে হামলা হয়েছে। সংগঠনটি অভিযোগ করে- অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ আলোচনার বদলে দমনমূলক পথ বেছে নিয়েছে, যা আন্দোলনকারীদের ন্যায়সংগত দাবি সমাধানে সহায়ক নয়।
সংগঠনটির সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় এবং সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ‘এ ঘটনা শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক নিয়মকানুনের লঙ্ঘনই নয়, রাষ্ট্রীয় বলপ্রয়োগের অযৌক্তিক ব্যবহারও বটে।’
তারাও দ্রুত আলোচনায় বসে ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার বিষয়ে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানান।

