ডাকসুতে বিজয়ীদের অভিনন্দন ঢাকা মহানগর জামায়াতের

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯: ৩৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঘোষিত প্যানেলের নিরঙ্কুশ জয়ে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর নেতারা।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার এক শুভেচ্ছা বার্তায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, দেশের সব গণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারি বিরোধী আন্দোলনে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ত্যাগ, কোরবানী ও অবদানের কথা আমাদের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এমনকি জুলাই বিপ্লবেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আপোষহীন ভূমিকা পালন করেছেন। এ ক্ষেত্রে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভূমিকাও দেশ ও জাতি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।

তারা বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির শুধু জুলাই বিপ্লবে নয় বরং স্বাধীনতা পরবর্তী সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে জুলাই বিপ্লবে ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছিলো সম্মুখ সাড়িতে। ফলে তারা দেশ, জাতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনের মনিকোটায় স্থান করে নিয়েছে। তারা এখন দলমত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছে অধিকতর গ্রহণযোগ্য ছাত্র সংগঠন। যার প্রতিফলন ঘটেছে সদ্য সমাপ্ত ডাকসু নির্বাচনে। ফলে গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে ভিপি, জিএস ও এজিএস সহ ২৮ পদের মধ্যে ২৩ টিতে ঐতিহাসিক বিজয় লাভ করেছে। যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক মাইল ফলক।

জামায়াত নেতারা নব নির্বাচিত ডাকসু নেতৃবৃন্দের দায়িত্ব পালনে সাফল্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং সকল প্রকার দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে ওঠে সততা, দক্ষতা ও প্রজ্ঞার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক সমস্যা সমাধান এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান এবং সকল বিজয়ীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জ্ঞাপন করেন।

মহানগর দক্ষিণ জামায়াত

আলাদা আরেকটি শুভেচ্ছা বার্তায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন, চব্বিশের জুলাই বিপ্লবসহ বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ও অবদান অনস্বীকার্য। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৫ আগস্ট পরবর্তী রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র সংগঠনের কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মকাণ্ডকে সুশৃঙ্খল, গণতান্ত্রিক, আদর্শিক ও নৈতিক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যার বহিঃপ্রকাশ ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল।

তারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেলকে বিজয় করে মূলত জাতিকে বার্তা দিয়েছে, এদেশে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ, দুর্নীতি, লুটপাট, ধর্ষক, খুনি ও নৈরাজ্যকারীদের স্থান নেই। সৎ, যোগ্য, আল্লাহভীরু, ন্যায়পরায়ণ, দুর্নীতি-সন্ত্রাস-চাঁদাবাজমুক্ত নেতৃত্ব জাতির জন্য কল্যাণকর। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সৎ, যোগ্য, আল্লাহভীরু, ন্যায়পরায়ণ, দুর্নীতি-সন্ত্রাস-চাঁদাবাজমুক্ত ইসলামি ছাত্রশিবিরের কাছে ডাকসুর নেতৃত্ব তুলে দিয়েছে। তবে ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে থাকেনি। তারা শিক্ষার্থীদের ভোটের ফলাফল ভিন্নখাতে রূপ দিতে দেশ-বিদেশ থেকে নানা রকম ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করেছে। শিক্ষার্থীরা নিজেদের ভোটের ফলাফল বুঝে নিতে গভীররাত পর্যন্ত পাহাদারিত্বের ভূমিকা রেখেছে। অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ভোটের সঠিক ফলাফল ঘোষণা করে। ঘোষিত ফলাফলে ছাত্রশিবিরের প্যানেল ২৮ পদের মধ্যে ভিপি-জিএস-এজিএস সহ মোট ২৩টিতে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে।

জামায়াত নেতৃবৃন্দ দেশের অন্যান্য ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শিক্ষার্থীদেরকে ডাকসু নির্বাচনকে অনুসরণ করতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের আগামীর নেতৃত্ব ছাত্র সমাজ থেকে বেরিয়ে আসবে। তাই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ডাকুস’র ন্যায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষে রায় দিতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত