ভারত ও আ.লীগের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল করতে চাচ্ছে জামায়াত, অভিযোগ রিজভীর

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭: ৫৮
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮: ১৭

জামায়াতে ইসলামীর অতীত তুলে ধরে তীব্র সমালোচনা করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, জামায়াত এখন ‘পতিত ফ্যাসিস্টদের সাথে’ কাজ করছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই অভিযোগ করেন।

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, এখন আবার তারা (জামায়াত) স্বরূপে বেরিয়েছেন এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চাচ্ছেন, ভারতের সাথে ভালো সম্পর্ক চাচ্ছেন। কিন্তু এটাও আমাদের মনে রাখতে হবে, ওই দেশটি শেখ হাসিনার মত রক্ত পিপাসু দানবকে প্রশ্রয় দিয়েছে নিজ দেশের মানুষকে হত্যা করার জন্য।

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, আমাদের দেশে ইসলামপন্থি একটি রাজনৈতিক দল বরাবরই আমার মনে হয়েছে আওয়ামী লীগকে সন্তুষ্ট করার জন্য কাজ করছে। তারা এদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে শহীদ জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে। তারা নিষিদ্ধ দল ছিল।

শহীদ জিয়া তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু এমন কোনো তাদের মিটিং নাই, এমন কোনো তাদের কর্মসূচি নাই যে, তারা স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেন নাই। এরপরে আমরা দেখেছি, প্রতিটি ঘটনায় তারা আওয়ামী লীগের সাথে, আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের সাথে এক হয়ে কাজ করেছেন।

নিজের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে এইচএম এরশাদের সময়ে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দেন রিজভী। বিএনপি ওই নির্বাচন বর্জন করলেও আওয়ামী লীগ ও জামায়াত তাতে অংশ নিয়েছিল। তিনি বলেন, ৮৬ সালে নির্বাচনে যাওয়া, সেটায় আওয়ামী লীগ গেছে। মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এক, আর কাজ করেছে আারেক। ঠিক একইভাবে তারাও (জামায়াতে ইসলামী) করেছে। এরপরে আমরা দেখেছি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ যে আন্দোলন করল, জ্বালাও-পোড়াও যে আন্দোলন হয়েছিল, সেই আন্দোলন আওয়ামী লীগের সাথে তারাও (জামায়াত) করেছে।

জামায়াত এখন আবার আওয়ামী লীগের ‘পুনর্বাসন চাচ্ছে’ মন্তব্য করে রিজভী বলেন, “এদেশের মানুষ মধ্যপন্থি, এদেশের মানুষ ধর্মভীরু, কিন্তু গণতন্ত্রপ্রিয়। তারা কথা বলতে চায় নির্ভয়ে, তারা এক-দুই বেলা কম খেলেও কণ্ঠের আওয়াজ তীব্র করতে চায়। সেদেশের মানুষকে জোর করে ফ্যাসিবাদের নতুন ধারায় কেউ যদি মনে করে যে নিয়ে আসতে চাইবে, এটা জনগণ হতে দেবে না।”

রিজভী বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টেলিফোন কথোপকথনের যেসব ক্লিপ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শোনানো হয়েছে, সেসব শুনলে যে কেউ ‘শিউরে উঠবে। আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি, আন্দোলন করেছি, রাজনীতি করেছি আমরা প্রত্যেকে মৃত্যুর মুখোমুখি ছিলাম।

শেখ হাসিনার বর্বরতা আমরা স্বচক্ষে দেখেছি, নিজেরা উৎপীড়নের শিকার হয়েছি, দিনের পর দিন রিমান্ডে থেকেছি, মাসের পর মাস জেলখানায় থেকেছি। তার ভয়াবহতা আমরা দেখেছি। কিন্তু এর গভীরে যে আরও ভয়াবহতা ছিল, তারা একটি আন্দোলনকে দমানোর জন্য কী ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে নিয়ে গিয়েছিল, সেটা এখন প্রতিদিনকার যে আলামতগুলো আদালতে জমা হচ্ছে, সেখানে উপস্থাপন করা হচ্ছে, তা থেকে বোঝা যায়।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর টেলি কথোপকথনের যে বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হচ্ছে, তাতেই আমাদের মধ্যে উদ্বেগ-শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। যদি এই ফ্যাসিবাদী শক্তির আবার পুনরুত্থান ঘটে, তাহলে ৫ অগাস্টের আন্দোলনকামী মানুষ, গণতন্ত্রকামী মানুষের কী ভয়ঙ্কর পরিণতি ভোগ করতে হবে, সেটা চিন্তা করে শরীরের লোম শিউরে উঠে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত