ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট প্রতিনিধি দলের সঙ্গে জামায়াতের বৈঠক

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৬

ঢাকায় সফররত ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি টিম।

মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দূতাবাসে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ফ্রান্সের মৌনির স্যাটৌরি। আর জামায়াত আমিরের সঙ্গে ছিলেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্দ তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, জামায়াত আমিরের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান, জামায়াতে ইসলামী মহিলা বিভাগের শুরা ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যাপক ড. হাবিবা আকতার চৌধুরী সুইট এবং খন্দকার আয়েশা খাতুন।

বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের একটা প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করছে। মঙ্গলবার জামায়াতের সঙ্গে বৈঠকের সময় নির্ধারিত ছিল। সে অনুযায়ী আমাদের বৈঠক হয়েছে।

তিনি বলেন, বৈঠকে অত্যন্ত সৌহাদ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা এসেছে। এই নির্বাচন কবে, কীভাবে হবে-এসব বিষয়ে। আমরা বলেছি, দীর্ঘ ৫৪ বছর পর একটা সুযোগ এসেছে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার জন্য আমরা সকলেই আন্তরিক এবং সচেতন। এই সরকার যে কমিটমেন্ট দিয়েছিলো, তারা একটা সংস্কার করবে, বিচার দৃশ্যমান করবে এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে; যেটাকে আমরা ফ্রি, ফেয়ার ও পার্টিসিপেটরি একটি ইলেকশন বলে মনে করি।

তিনি বলেন, সরকার একটা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন করেছিল। অনেকগুলো জায়গায় ঐকমত্যে পৌঁছেছে। আমরা বলেছি, আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে, দলগুলোর মধ্যে সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। যেগুলোতে একমত হয়েছে , সেগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন হবে-সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ডা. তাহের বলেন, ৩১ টা দলের মধ্যে ২৬টা দল পিআরের পক্ষে। একটু পার্থক্য হলো, আমরা সহ কিছু দল উভয়কক্ষে পিআর চাই আর অন্যরা উচ্চ কক্ষে চায়। আমরা কেন পিআর চাই সেটা তারা জানতে চাইলে বলেছি-৫৪ বছরে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর যে সংস্কৃতি বা কৌশল, অপকৌশল-এই মাইন্ডসেটটা পরিবর্তন করতে হবে।

এত রক্ত দেয়ার পরও মানসিক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। যার প্রমাণ ডাকসু, জাকসু নির্বাচন। এত সুন্দর নির্বাচন হলেও জাকসুতে বর্জনের ঘটনা ঘটেছে। জাকসুতে যে নাটক হয়েছে, ফল উল্টানোর মানসিকতা ছিল, কিন্তু পারেনি। ডাকসুতে হাজার হাজার লোক জড়ো করা হয়েছিল। জাতীয় নির্বাচনেও এ ধরণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পিআরে তারা এই সুযোগ পাবে না। এজন্য একবার পিআর দেখতে চাই। ভাল না লাগলে পরে আর হবে না।

ডা. তাহের বলেন, উনারা (ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদল) বলেছেন, তোমরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা কর। আমরা বলেছি, আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। এক প্রশ্নের জবাবে ডা. তাহের বলেন, ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ বাড়িয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যাবে বলে মনে করি না। তারপরও বাড়ানো হয়েছে এজন্য যে, আরও কিছু বিষয় বের হয় কি না। যারা চায় না, আইনিভিত্তি হোক, তারাই বাধা সৃষ্টি করছে। টাইম ডিলে করার কৌশল কিনা সেটা এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ আইনি ভিত্তি দেয়া একটি সিদ্ধান্তের ব্যাপার।

তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচির বিষয় নিয়ে আলোচনা করিনি। তবে মানবাধিকার সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে জনগণের অংশগ্রহণ বুঝিয়েছি।

ডা. তাহের বলেন, আমরা আশা করছি সরকার আমাদের পিআরের যুক্তি মানবে এবং সে অনুযায়ী নির্বাচন হবে। আমরা সরকারের সঙ্গে বসতে চাই। আলোচনায় বসার আহবান জানাচ্ছি। সেখঅনে যুক্তি তুলে ধরতে পারব। এটা দেশ ও জনগণের জন্য, জামায়াতের কোন বিষয় নয়।#

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত