দেশের বর্তমান সংকট মোকাবিলায় জাতীয় এক্য গড়ে তোলার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এ মন্তব্য করেন।
জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে জাতি একটি সংবেদনশীল সময় অতিক্রম করছে। জুলাইয়ের পক্ষের সব শক্তির মধ্যে সুপরিকল্পিতভাবে বিভাজন সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি নানা এজেন্ট ও চক্র সক্রিয়ভাবে কাজ করছে বলে আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি। বিভ্রান্তি ছড়ানো, পারস্পরিক অবিশ্বাস তৈরি এবং গণআকাঙ্ক্ষাকে দুর্বল করার এই অপচেষ্টা জাতীয় স্বার্থের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
বিবৃতিতে শিবির নেতারা বলেন, বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দূর করে জাতি যখন বহুল কাঙ্ক্ষিত জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন একটি মহল সুপরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জুলাইয়ের শক্তির মধ্যে বিভাজ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা ছিল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সব পক্ষ ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। রাজনৈতিক বৈচিত্র্যের কারণে দলগুলোর মধ্যে ভিন্নমত থাকা গণতন্ত্রের অন্যতম সৌন্দর্য হলেও মৌলিক জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতেও বিভাজন তৈরি করা জাতির জন্য সুখকর নয়। জুলাই আকাঙ্ক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তারা বলেন, ইতোমধ্যে জুলাইয়ের শক্তির মধ্যে বিভাজনের সুযোগ নিয়ে দেশে পরিকল্পিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণসহ জুলাই যোদ্ধাদের টার্গেট করে হুমকি প্রদান, জনসমাগমস্থলে ও আদালত চত্বরে প্রকাশ্য দিবালোকে মানুষ হত্যা এবং ভারত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, টিভি টকশোতে পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তির আস্ফালন সামগ্রিক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে। সরকারের নিস্ক্রিয়তা সন্ত্রাসীদের সবুজ সংকেত দিয়েছে। এই সন্ত্রাসী দৌরাত্ম্য দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে তা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়ার পরিবেশকে ত্বরান্বিত করবে।
নেতারা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অথবা প্রোপাগান্ডায় বিভ্রান্ত হয়ে পরস্পরের প্রতি বিষাদগার, সন্দেহ-সংশয় তৈরি ও অবিশ্বাস পতিত ফ্যাসিবাদের হাতকেই শক্তিশালী করবে। এমতাবস্থায় সব রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও অংশীজনকে সংবেদনশীল, দায়িত্বশীল আচরণ করার অনুরোধ করছি। একই সঙ্গে সরকারকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও জনজীবনে স্বাভাবিক করতে সম্ভাব্য সব কঠোর ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান করছি।

