বিজ্ঞানীরা যা আজ নোবেলজয়ী আবিষ্কার হিসেবে দেখছে, মহান আল্লাহ তা বহু আগে মরুভূমির নিঃশব্দ গাছের পাতায় লিখে রেখেছেন! ২০২৫ সালের নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন একদল বিজ্ঞানী, যারা মরুভূমির শুকনো বাতাস থেকেও পানি বের করার এক জাদুকরী উপায় আবিষ্কার করেছেন! তারা তৈরি করেছেন এক বিশেষ পদার্থ, যার নাম ‘মেটাল—অরগ্যানিক ফ্রেমওয়ার্ক (Metal—Organic Framework – MOF)’। এটি দেখতে অনেকটা অদৃশ্য স্পঞ্জের মতো, যার ভেতরে অসংখ্য ক্ষুদ্র ছিদ্র থাকে। রাতে বাতাসে সামান্য আর্দ্রতা থাকলে MOF সেই বাষ্প টেনে নেয় নিজের ভেতরে, আর সকালে সূর্যের তাপে সেই বাষ্প ধীরে ধীরে পরিণত হয় বিশুদ্ধ পানিতে।
এই আশ্চর্য প্রযুক্তি আজ নতুন আশার আলো জ্বালিয়েছে সেইসব ভূমিতে, যেখানে চারপাশে শুধু ধুলা আর বালুর ঢেউ—নেই নদী, নেই কূপ, নেই কোনো পানির উৎস। কিন্তু পাঠক, আরো বিস্ময়ের বিষয় হলো—যা মানুষ আজ বিজ্ঞানের ভাষায় উদ্ভাবন করেছে, মহান আল্লাহ তা বহু আগেই সে নকশায় প্রকৃতির বুকে সৃষ্টি করে রেখেছেন তাঁর সৃষ্টি । মরুভূমির ক্যাকটাস গাছ তার জীবন্ত উদাহরণ।
ক্যাকটাসে কাঁটা, মোটা আবরণ, সূক্ষ্ম খাঁজ (microscopic grooves) এবং ন্যানো-গঠন (nanostructures)—সব মিলিয়ে রয়েছে এক আশ্চর্য ক্ষমতা, যা বাতাসের জলীয় বাষ্প (water vapor) শোষণ করে তা ঘনীভূত করে শিশিরবিন্দুতে পরিণত করে। শুধু তা-ই নয়, পরে ক্যাপিলারি ক্রিয়ার (capillary action) মাধ্যমে সেই পানি শিকড়ে পৌঁছে দেয়।
এভাবে স্পঞ্জের মতো কোষে থাকা টিস্যুতে (spongy parenchyma tissue) পানি জমা থাকতে পারে বলেই ক্যাকটাস গাছ বেঁচে থাকে তপ্ত মরুভূমিতে হাজার বছর ধরে।
মানুষের বর্তমান উদ্ভাবন সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিরই অনুকরণ। এটি স্পষ্ট প্রমাণ করে, সত্যিকারের জ্ঞান লাভ হয় আল্লাহর সৃষ্ট জগৎকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে। ‘নিশ্চয়ই আসমান ও জমিনের সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে জ্ঞানীদের জন্য রয়েছে নিদর্শন।’ (সুরা আলে ইমরান : ১৯০)
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

