আমরা অনেকেই বই পড়ে, ওয়াজ-নসিহতের মজমা থেকে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের কথা শুনেছি। তাঁর জীবনাচরণ সম্পর্কে জেনেছি ঠিকই, কিন্তু চোখের সামনে যদি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগের বাস্তব জীবনযাত্রা স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে, তবে অনুভূতির রঙই ভিন্নভাবে ধরা দেয়। ঠিক এমনই এক অসাধারণ আয়োজন হয়ে উঠেছে ধানমন্ডি লেকের পাশে অবস্থিত মাসজিদ উত তাকওয়ার সিরাত উৎসব।
ঢাকার ব্যস্ত জীবনের ভিড়ে সিরাত উৎসব যেন এক সজীব বাতাস। প্রদর্শনীর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে প্রিয়নবী রহমতে আরাবি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মহিমান্বিত জীবনধারা।
এখানে দর্শনার্থীরা দেখতে পাচ্ছেন নবীযুগের ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, মসজিদ ও তাঁবুর নিদর্শন। কাঁচা মাটির দেয়াল, খেজুরগাছের ছাউনি, বাঁশের তৈরি সিঁড়ি আর সাধারণ জিনিসপত্র যেন ১৪০০ বছর আগের আরবকে জীবন্ত করে ফুটিয়ে তুলেছে।
দর্শনার্থীদের মনে হচ্ছে, তারা যেন সময়ের স্রোত পেরিয়ে চলে গেছেন নবীযুগে। কেউ দেখছেন নবীযুগের সরল ঘর, কেউবা তাকিয়ে থাকছেন নবীজির মিম্বারের দিকেÑযেখান থেকে আলোকিত হয়েছিল দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দাওয়াত।
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আসছেন আশেকানরা। শিক্ষার্থীদের জন্য এটি এক ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা। বইয়ের পাতায় যা পড়েছে, এখানে তা চোখে দেখছে। যা জীবন্ত রূপ নিয়েছে।
সিরাত উৎসব আয়োজন শুরু হয়েছে গত বুধবার। শেষ হবে শুক্রবার। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়। আর শেষ হয় রাত ৯টায়। দর্শনার্থীরা আফসোস করছেন—এই আয়োজন মাত্র তিন দিনের জন্য সীমিত হওয়ায়। তাই যারা দেখতে চান, তাদের অবশ্যই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পৌঁছে যেতে হবে।
শুধু চোখে দেখার জন্য নয়, হৃদয়ে ছুঁয়ে যাওয়ার মতো এক শিক্ষা, এক উপলব্ধি। নবীজির সিরাত যে শুধু কিতাবে সীমাবদ্ধ নয়, বরং জীবনের প্রতিটি স্তরে অনুসরণের আহ্বানÑএই প্রদর্শনী যেন নতুন করে তা মনে করিয়ে দেয়।
নিজে আসুন, বন্ধুদের আনুন। পরিবারের সবাই মিলে আসুন। হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো শিক্ষা নিয়ে ফিরুন।

