
ইফতেখারুল হক হাসনাইন

দায়িত্ববোধ মানে হলো নিজের ওপর ন্যস্ত দায়িত্বকে সচেতনভাবে, সততার সঙ্গে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে সম্পাদন করা। ইসলাম মানুষকে শুধু অধিকার দেয়নি, দিয়েছে দায়িত্বও। বরং ইসলামি সভ্যতার ভিত্তিই দাঁড়িয়ে আছে দায়িত্বশীলতার ওপর। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমরা আমানত (দায়িত্ব) আসমান, জমিন ও পর্বতমালার সামনে পেশ করেছিলাম; তারা তা বহন করতে অস্বীকার করল এবং ভয় পেল। কিন্তু মানুষ তা গ্রহণ করল; নিশ্চয়ই সে অতি জালিম ও অজ্ঞ।’ (সুরা আল-আহজাব : ৭২)
এই আয়াতে স্পষ্ট যে, দায়িত্ব বা আমানত বহন করা মানুষের একটি সম্মান ও পরীক্ষা। এই দায়িত্ববোধই মানুষকে অন্য সব সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকের কাছেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (বুখারি : ৮৯৩; মুসলিম : ১৮২৯)
এই হাদিস ইসলামি দায়িত্ববোধের সারসংক্ষেপ। শাসক তার প্রজাদের জন্য, বাবা তার পরিবারের জন্য, শিক্ষক তার ছাত্রদের জন্য, ব্যবসায়ী তার ক্রেতার জন্য, এমনকি এক ব্যক্তি নিজের আত্মার প্রতিও দায়িত্বশীল।
ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্তরে দায়িত্ববোধ
ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ : নিজেকে পরিশুদ্ধ রাখা, সময়ের সঠিক ব্যবহার, ইবাদত, জ্ঞানার্জন, নৈতিক চরিত্র—এসবই ব্যক্তিগত দায়িত্বের অংশ। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘প্রত্যেক প্রাণী নিজের কাজের জন্য দায়ী।’ (সুরা মুদ্দাসসির : ৩৮)
পারিবারিক দায়িত্ববোধ : পরিবার ইসলামি সমাজের প্রথম প্রতিষ্ঠান। স্বামী, স্ত্রী, সন্তান—প্রত্যেকের দায়িত্ব নির্ধারিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সবাই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককে তোমাদের অধীনস্থদের (দায়িত্ব) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। ইমাম (‘ইমাম’ শব্দ রাষ্ট্রের কর্ণধার; কোনো কাজের তত্ত্বাবধায়ক, ব্যবস্থাপক ও সালাতের ইমাম অর্থে এটি ব্যবহৃত হয়) একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি, তাকে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। পুরুষ তার পরিবারবর্গের অভিভাবক, তাকে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। নারী তার স্বামী-গৃহের কর্ত্রী, তাকে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। খাদিম তার মনিবের ধন-সম্পদের রক্ষক, তাকেও তার মনিবের ধন-সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।’ (বুখারি : ৮৯৩)
সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ববোধ : ইসলামে সমাজ ও রাষ্ট্র উভয়ই দায়িত্বের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দুর্বলদের সহায়তা, আমানতের সংরক্ষণ, পরামর্শভিত্তিক প্রশাসন—এসব রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের অংশ। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দেন, যাতে তোমরা আমানত তাদের হাতে দাও, যারা এর উপযুক্ত।’ (সুরা নিসা : ৫৮)
দায়িত্ববোধ ও তাকওয়া
ইসলামে দায়িত্ববোধ কোনো জবরদস্তি নয়, তা তাকওয়া থেকে উদ্ভূত। যার হৃদয়ে আল্লাহভীতি আছে, সে দায়িত্বে গাফিল হতে পারে না। আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য বের হওয়ার পথ তৈরি করে দেন।’ (সুরা আত-তালাক : ২)। তাকওয়াই দায়িত্ববোধের নৈতিক প্রেরণা। এই তাকওয়া সমাজে ন্যায়, সততা ও আস্থার ভিত্তি স্থাপন করে।
সমাজের সংকটের অন্যতম কারণ দায়িত্ববোধের অভাব
দায়িত্ববোধ হারিয়ে গেলে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়—দুর্নীতি, অবহেলা, প্রতারণা, অন্যায় ও অবিচার ছড়িয়ে পড়ে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যখন তারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করল, আমরা তাদের হৃদয়ে কঠোরতা সৃষ্টি করলাম।’ (সুরা আল-মায়িদা: ১৩)। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তিকে আল্লাহ জাতির দায়িত্ব অর্পণ করেন; কিন্তু সে তাদের কল্যাণকর নিরাপত্তা বিধান করল না, সে বেহেশতের গন্ধও পাবে না।’ (মিশকাত: ৩৫১৮)
আজকের সমাজে দায়িত্বহীনতা যেন এক মহামারি। ইসলাম এই মহামারি থেকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে—সচেতনতা, নৈতিকতা ও আল্লাহভীতি। ইসলামি দায়িত্ববোধের মূল দর্শন হলো, মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি এবং সে তার প্রতিটি কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করবে। এই বিশ্বাসই মানুষকে সৎ, ন্যায়পরায়ণ ও নিষ্ঠাবান করে তোলে। দায়িত্ব পালন ঈমানের অংশ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে প্রতারণা করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (মুসলিম : ১০২)
দায়িত্ব গ্রহণ করা আল্লাহ ও মানুষের সঙ্গে অঙ্গীকার করার মতো। নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে আমানত রক্ষা করে না, তার ঈমানের দাবি যথাযথ নয় এবং যে অঙ্গীকার পূরণ করে না, তার দ্বীন যথাযথ নয়।’ (মুসনাদে আহমদ : ১৩১৯৯)
অতএব, দায়িত্ববোধ ইসলামি সমাজব্যবস্থার প্রাণ। ব্যক্তির দায়িত্ববোধই গড়ে তোলে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ, আর সমাজের দায়িত্ববোধই প্রতিষ্ঠা করে আল্লাহপ্রদত্ত শান্তি ও ন্যায়।

দায়িত্ববোধ মানে হলো নিজের ওপর ন্যস্ত দায়িত্বকে সচেতনভাবে, সততার সঙ্গে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে সম্পাদন করা। ইসলাম মানুষকে শুধু অধিকার দেয়নি, দিয়েছে দায়িত্বও। বরং ইসলামি সভ্যতার ভিত্তিই দাঁড়িয়ে আছে দায়িত্বশীলতার ওপর। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমরা আমানত (দায়িত্ব) আসমান, জমিন ও পর্বতমালার সামনে পেশ করেছিলাম; তারা তা বহন করতে অস্বীকার করল এবং ভয় পেল। কিন্তু মানুষ তা গ্রহণ করল; নিশ্চয়ই সে অতি জালিম ও অজ্ঞ।’ (সুরা আল-আহজাব : ৭২)
এই আয়াতে স্পষ্ট যে, দায়িত্ব বা আমানত বহন করা মানুষের একটি সম্মান ও পরীক্ষা। এই দায়িত্ববোধই মানুষকে অন্য সব সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকের কাছেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (বুখারি : ৮৯৩; মুসলিম : ১৮২৯)
এই হাদিস ইসলামি দায়িত্ববোধের সারসংক্ষেপ। শাসক তার প্রজাদের জন্য, বাবা তার পরিবারের জন্য, শিক্ষক তার ছাত্রদের জন্য, ব্যবসায়ী তার ক্রেতার জন্য, এমনকি এক ব্যক্তি নিজের আত্মার প্রতিও দায়িত্বশীল।
ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্তরে দায়িত্ববোধ
ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ : নিজেকে পরিশুদ্ধ রাখা, সময়ের সঠিক ব্যবহার, ইবাদত, জ্ঞানার্জন, নৈতিক চরিত্র—এসবই ব্যক্তিগত দায়িত্বের অংশ। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘প্রত্যেক প্রাণী নিজের কাজের জন্য দায়ী।’ (সুরা মুদ্দাসসির : ৩৮)
পারিবারিক দায়িত্ববোধ : পরিবার ইসলামি সমাজের প্রথম প্রতিষ্ঠান। স্বামী, স্ত্রী, সন্তান—প্রত্যেকের দায়িত্ব নির্ধারিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সবাই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককে তোমাদের অধীনস্থদের (দায়িত্ব) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। ইমাম (‘ইমাম’ শব্দ রাষ্ট্রের কর্ণধার; কোনো কাজের তত্ত্বাবধায়ক, ব্যবস্থাপক ও সালাতের ইমাম অর্থে এটি ব্যবহৃত হয়) একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি, তাকে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। পুরুষ তার পরিবারবর্গের অভিভাবক, তাকে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। নারী তার স্বামী-গৃহের কর্ত্রী, তাকে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। খাদিম তার মনিবের ধন-সম্পদের রক্ষক, তাকেও তার মনিবের ধন-সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।’ (বুখারি : ৮৯৩)
সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ববোধ : ইসলামে সমাজ ও রাষ্ট্র উভয়ই দায়িত্বের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দুর্বলদের সহায়তা, আমানতের সংরক্ষণ, পরামর্শভিত্তিক প্রশাসন—এসব রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের অংশ। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দেন, যাতে তোমরা আমানত তাদের হাতে দাও, যারা এর উপযুক্ত।’ (সুরা নিসা : ৫৮)
দায়িত্ববোধ ও তাকওয়া
ইসলামে দায়িত্ববোধ কোনো জবরদস্তি নয়, তা তাকওয়া থেকে উদ্ভূত। যার হৃদয়ে আল্লাহভীতি আছে, সে দায়িত্বে গাফিল হতে পারে না। আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য বের হওয়ার পথ তৈরি করে দেন।’ (সুরা আত-তালাক : ২)। তাকওয়াই দায়িত্ববোধের নৈতিক প্রেরণা। এই তাকওয়া সমাজে ন্যায়, সততা ও আস্থার ভিত্তি স্থাপন করে।
সমাজের সংকটের অন্যতম কারণ দায়িত্ববোধের অভাব
দায়িত্ববোধ হারিয়ে গেলে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়—দুর্নীতি, অবহেলা, প্রতারণা, অন্যায় ও অবিচার ছড়িয়ে পড়ে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যখন তারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করল, আমরা তাদের হৃদয়ে কঠোরতা সৃষ্টি করলাম।’ (সুরা আল-মায়িদা: ১৩)। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তিকে আল্লাহ জাতির দায়িত্ব অর্পণ করেন; কিন্তু সে তাদের কল্যাণকর নিরাপত্তা বিধান করল না, সে বেহেশতের গন্ধও পাবে না।’ (মিশকাত: ৩৫১৮)
আজকের সমাজে দায়িত্বহীনতা যেন এক মহামারি। ইসলাম এই মহামারি থেকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে—সচেতনতা, নৈতিকতা ও আল্লাহভীতি। ইসলামি দায়িত্ববোধের মূল দর্শন হলো, মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি এবং সে তার প্রতিটি কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করবে। এই বিশ্বাসই মানুষকে সৎ, ন্যায়পরায়ণ ও নিষ্ঠাবান করে তোলে। দায়িত্ব পালন ঈমানের অংশ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে প্রতারণা করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (মুসলিম : ১০২)
দায়িত্ব গ্রহণ করা আল্লাহ ও মানুষের সঙ্গে অঙ্গীকার করার মতো। নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে আমানত রক্ষা করে না, তার ঈমানের দাবি যথাযথ নয় এবং যে অঙ্গীকার পূরণ করে না, তার দ্বীন যথাযথ নয়।’ (মুসনাদে আহমদ : ১৩১৯৯)
অতএব, দায়িত্ববোধ ইসলামি সমাজব্যবস্থার প্রাণ। ব্যক্তির দায়িত্ববোধই গড়ে তোলে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ, আর সমাজের দায়িত্ববোধই প্রতিষ্ঠা করে আল্লাহপ্রদত্ত শান্তি ও ন্যায়।

চারদিকে জ্বরের প্রকোপ। ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ায় অনেকেই হারিয়েছেন প্রিয়জনকে। কদিন আগে বাংলাদেশে বিশ্বজয়ী হাফেজ ত্বকীও মারা গেলেন এই জ্বরে। তাই এ রোগ থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে আমাদের দোয়া করা উচিত।
৩ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামে অবস্থিত পিয়ার আলী জামে মসজিদ, শুধু একটি ইবাদতের স্থান নয়; এটি বহন করে চলেছে এক গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্য। ১৯১০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মসজিদটি, স্থানীয়ভাবে যা মাওনা বাজার কেন্দ্রীয় মসজিদ নামেও সুপরিচিত, শতাব্দী পেরিয়ে আজও টিকে আছে এ
৩ ঘণ্টা আগে
আধুনিক সমাজে সন্তান প্রতিপালন এখন কেবল পারিবারিক দায়িত্ব নয়, এটি হয়ে উঠেছে এক কঠিন নৈতিক সংগ্রাম। প্রযুক্তির অগ্রগতি যেমন মানুষের জীবনকে সহজ ও তথ্যসমৃদ্ধ করেছে, তেমনি শিশুমনের জগতে এনে দিয়েছে নানা জটিলতা ও বিভ্রান্তি।
৩ ঘণ্টা আগে
আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, একজন ’মুকাতিব’ (লিখিত চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কৃতদাস) তার কাছে গিয়ে নিবেদন করলো, আমি আমার নির্ধারিত অর্থ দিতে অপারগ, অতএব আপনি আমাকে সাহায্য করুন।
২১ ঘণ্টা আগে