টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দলের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। জয়ের ধারাবাহিকতায় থাকলে খানিকটা আত্মবিশ্বাসী থাকবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই বলেছিলেন বোলিং কোচ শন টেইট। কোচের ওই কথা রেখেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। লিটন দাসের দল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টিতে পায় ৮ উইকেটের জয়। এই জয়ে আইরিশদের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজও নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে হারে বাংলাদেশ। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ ফেরায় সমতায়। ফলে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ পরিণত হয় অলিখিত ফাইনালে। সেই ফাইনালে ব্যাট-বলে দারুণ পারফর্ম করে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। বল হাতে রিশাদ হোসেন-মোস্তাফিজুর রহমানদের দারুণ পারফরম্যান্সের পর ব্যাট হাতে দলের জয়ের পথ সহজ করে দেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম।
চট্টগ্রামে আইরিশদের ছুড়ে দেওয়া ১১৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা হয় দারুণ। উদ্বোধনী জুটিতে সাইফ হাসানকে সঙ্গে নিয়ে তানজিদ তামিম যোগ করেন ৩৮ রান। দারুণ শুরুটা অবশ্য ধরে রাখতে পারেননি লিটন দাস। ১৪ বলে ১৯ রান করে সাইফের বিদায়ের পর ৬ বলে ৭ রান করে আউট হন অধিনায়ক লিটন। ৪৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। তবে এই ধাক্কা বড় হতে দেননি ওপেনিং ছেড়ে মিডলঅর্ডারে নামা পারভেজ হোসেন ইমন। ওপেনিং সঙ্গী তানজিদ হাসান তামিমকে সঙ্গে নিয়ে ৭৩ রানের জুটি গড়ে নিশ্চিত করে দেন জয়। তানজিদ তামিম পান ক্যারিয়ারের ১১তম হাফ সেঞ্চুরির দেখা। এই ইনিংস খেলার পথে ৩৬ বলে চার চার ও তিন ছক্কায় করেন ৫৫ রান। পারভেজ হোসেন ইমন ২৬ বলে করেন ৩৩ রান। তার ইনিংসে ছিল এক চার ও তিন ছক্কা।
দারুণ ফিনিশিংয়ের এই ম্যাচে বল হাতে বাংলাদেশের শুরুটা ভালো ছিল না। শেখ মাহেদির প্রথম ওভারেই ১৩ রান তুলে নেয় আয়ারল্যান্ড। তাতে মনে হচ্ছিল, দিনটা হতে আইরিশদের। তবে চতুর্থ ওভারে শরিফুল ইসলামের বলে টিম টেক্টর ফিরলে থামে আয়ারল্যান্ডের রানের গতি। বাংলাদেশি বোলারদের বোলিং তোপে ব্যাটাররা ছিলেন যাওয়া-আসার মিছিলে। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে অধিনায়ক পল স্টার্লিং ২৭ বলে করেন ৩৮ রান। তার ইনিংসে ছিল ৫ ছক্কা ও এক চার। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার, কার্টিস ক্যাম্ফাররা নিজেদের রান দুই অঙ্কের ঘরে নিতে পারেননি। তাতে এক বল আগে ১১৭ রানে থামে সফরকারীদের ইনিংস। বাংলাদেশের হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান ১১ রানে নেন তিন উইকেট। আর রিশাদ হোসেন ২১ রানে নেন তিন উইকেট। এছাড়া দুই উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম।
বাংলাদেশের বোলিং ইনিংসে দারুণ এক বিশ্বরেকর্ড তানজিদ হাসান তামিম। একাই তালুবন্দি করেন পাঁচ ক্যাচ। তাতে উইকেটরক্ষক না হয়ে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড গড়েন তিনি। আগে থেকেই যৌথভাবে এই তালিকায় আছেন মালদ্বীপের ওয়াদেগা মালিন্দা ও সুইডেনের সেদিক সাহাক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আয়ারল্যান্ড : ১১৭/১০, ১৯.৫ ওভার (স্টার্লিং ৩৮, ডকরেল ১৯, মোস্তাফিজ ৩/১১)।
বাংলাদেশ : ১১৯/২, ১৩.৪ ওভার (তানজিদ ৫৫, ইমন ৩৩, টেক্টর ১/১৭)।
ফল : বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : তানজিদ তামিম।

