রোহিত সরলেন নাকি হটলেন?

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০০: ৫৫
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০২: ১২
রোহিত শর্মা

ড্রেসিংরুমেই বসেছিলেন রোহিত শর্মা। কিন্তু সিডনি টেস্টে টস করার সময় থাকলেন দর্শক হয়ে। শুধু টসেই নয়, গতকাল শুত্রুবার মাঠের লড়াইয়েও থাকলেন দর্শক হয়ে। টস করলেন জাসপ্রিত বুমরাহ। এমনটা অবশ্য এবারই প্রথম নয়। প্রথম টেস্টেও ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তারকা এ পেসার। তখন অবশ্য পারিবারিক প্রয়োজনে অস্ট্রেলিয়াতে যেতে পারেননি রোহিত। ছিলেন ভারতে। এবার সিডনিতে থেকেও নেতৃত্বভার তুলে দিলেন বুমরাহর কাঁধে।

ইনজুরি অবশ্য রোহিতকে ছিটকে দেয়নি মাঠের লড়াই থেকে। সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্ট শুরুর আগের দিন একাদশ থেকে নিয়মিত অধিনায়ক নিজেই নিজেকে বাদ দিয়ে দেন। টস শেষে বুমরাহও জানালেন সেই খবর। রোহিতের বিশ্রামের খবর দিতে গিয়ে বুমরাহ বলেন, ‘আমাদের অধিনায়ক তার নেতৃত্বগুণ দেখিয়েছে।’

নেতৃত্বগুণ বলতে দলের স্বার্থে রোহিতের নিজেকে বিসর্জন দেওয়াকে বুঝিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। বাজে ফর্মের কারণে রোহিতের খেলা এক রকম অনিশ্চিতই ছিল। কোচ গৌতম গম্ভীর নিজে থেকে ব্যাপারটা পরিষ্কার না করলেও দলের স্বার্থে নিজের খেলার সুযোগ বিসর্জন দেন রোহিত। নিজে না খেলে সুযোগ দিয়েছেন শুবমান গিলকে। যেখানে অধিনায়ক সব সময় টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করেন একাদশ। নিজের সঙ্গে বেছে নেন সেরা একাদশের বাকি দশ ক্রিকেটারকে। সেখানে নিজের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে অধিনায়কের সরে যাওয়া ঘটনা বিরলই। ঠিক কতটা বিরল? প্রশ্নটা রাখা যেতেই পারে। লাল বলের ক্রিকেটের ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেছে মাত্র একবার!

ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে এর আগে খারাপ ফর্মের জন্য একাদশ থেকে অধিনায়কের নিজের নাম প্রত্যাহারের ঘটনাটি কাকতালীয়ভাবে মঞ্চস্থ হয়েছিল এই সিডনিতেই। সেও ১৯৭৪ সালের বহু পুরোনো এক কাহিনী। অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্টে একাদশ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন ইংলিশ ক্যাপ্টেন মাইন ডেনেস। ওই সিরিজে কিছুতেই যেন হাতের ব্যাট হাসাতে পারছিলেন না। ৬ ইনিংসে ব্যাট করে তার ব্যাট ছুঁয়ে দলীয় স্কোরে যোগ হয়েছিল মাত্র ৬৫ রান। তার ইনিংসগুলো ছিল এমন- ৬, ২৬, ২, ২০, ৮ ও ২। এজন্য সমালোচনার বিষাক্ত তীর বিদ্ধ যেন করছিল তার বুকে। বিদ্রুপ করে ডেনেসকে একজন চিঠি লিখেছিলেন। ২০০৮ সালে দ্য টাইমসে লেখা মাইক আথারটনের এক কলাম থেকে জানা যায়, তাতে লেখা ছিল এমন, ‘এই চিঠি যদি তুমি পেয়ে থাকো, তার অর্থ হচ্ছে, তোমার সামর্থ্যের ওপর পোস্ট অফিস আমার চেয়ে বেশি আস্থা রাখে।’ যে কারণে সরে দাঁড়াতে একরকম বাধ্য হন।

ডেনেসের মতো সমালোচনার ঝড় বইয়ে গেছে রোহিতের বেলায়ও। চলতি বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির তিন টেস্টের ৫ ইনিংসে ৩৭ বছরের রোহিতের স্কোর- ৩, ৬, ১০, ৩ ও ৯। সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ সিরিজের চেন্নাই টেস্ট থেকে ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ পর্যন্ত ১৫ ইনিংস ব্যাট চালিয়ে ফিফটি ছাড়ানো ইনিংস পেয়েছেন মাত্র একটি। ক্যাপ্টেন না হলে রোহিত হয়তো অনেক আগেই বাদ পড়তেন জাতীয় দল থেকে।

সেবার সিডনি টেস্টে মাঠে না থাকলেও অ্যাডিলেডে টেস্টেই একাদশে প্রত্যাবর্তন হয়েছিল ডেনেসের। একাদশে ফিরেছিলেন দলের প্রয়োজনেই। কারণ সিডনি টেস্টে তার বদলি ক্রিকেটার জন এডরিচ ইনজুরির কারণে চলেছিলেন মাঠের বাইরে। এক টেস্টের বিরতি দিয়ে ফিরেই রানের দেখা পেয়েছিলেন ডেনেস। তখন অ্যাশেজ সিরিজে হয়েছিল ৬ টেস্ট। মেলবোর্নে ষষ্ঠ ও শেষ টেস্টে ১৮৮ রানের দাপুটে এক ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন। এটাই ছিল এই স্কটিশ ক্রিকেটারের টেস্ট ক্যারিয়ারের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত