বিসিবি সভাপতির অনুরোধ

সমালোচনা হোক সঠিক তথ্য নিয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৫, ২৩: ৩০

সাম্প্রতিক সময়ে নানা ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ। বিসিবির স্থায়ী আমানত অন্য ব্যাংকে স্থানান্তর নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন। যদিও পরে এক বিবৃতিতে টাকা স্থানান্তরের ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে বিসিবি। সেখানে অর্থ স্থানান্তরর কারণও নির্দিষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হওয়া। তবু বিষয়টিকে নিয়ে চলছে সমালোচনা। পরবর্তী সময়ে এক সাক্ষাৎকারেও বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে ফারুক আহমেদ। তবুও তাকে নিয়ে চলছে সমালোচনা। এ ছাড়া পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথাও শোনা গেছে। সব মিলিয়ে নানা প্রশ্নের মুখে থাকা বিসিবি সভাপতি জানান, তাকে ঘিরে সমালোচনা হোক, সেটা তিনি চান। তবে সঠিক তথ্য নিয়ে সমালোচনা হোক- এটাই তার চাওয়া।

শনিবার (৩ মে) মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় বিভাগ বাছাই লিগের ফাইনালের চ্যাম্পিয়ন দলের হাতে ট্রফি তুলে দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন ফারুক আহমেদ। সেখানেই তাকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক নিয়ে কথা বলেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে অনুরোধ করব যদি সত্যিটা তুলে ধরেন এবং আনবায়াসডলি কাজ করেন - আননেসেসারি সমালোচনামুক্ত হতে পারি। সবার কাছে অনুরোধ থাকবে। আমি এমন একজন মানুষ, আপনারা যদি গঠনমূলক সমালোচনা করুন, সেটা কিন্তু অ্যাকসেপ্টেড। কিন্তু কিছু বিষয় আছে আননেসেসারি সমালোচনা আশা করি, না করলেই ভালো। তাহলে আমাদের মেইন ফোকাসটা সরে যায়।’

বিজ্ঞাপন

অপ্রয়োজনীয় সমালোচনা বন্ধের অনুরোধ করা ফারুক আহমেদ অবশ্য চান তার কাজের সমালোচনা হোক। এ নিয়ে তার ভাষ্য, ‘অনেক সময় ভালো কাজগুলো নিচে পড়ে যায় এক্সটার্নাল ইনফ্লুয়েন্সে। আমরা চেষ্টা করব (সাংবাদিকদের উদ্দেশে), দুইটাই করব ভালো কাজের প্রশংসা করব, খারাপ কাজের সমালোচনা হবে। এটাই কিন্তু স্বাভাবিক।’ এ ছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নতিতে তার কাজের কোনো ভুল হলে সেগুলো নিয়ে সমালোচনার করার পরামর্শও ছিল ফারুক আহমেদের কণ্ঠে। এ নিয়ে তার ভাষ্য, ‘আমার মেইন দায়িত্বটা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এগিয়ে নেওয়া, ওইগুলোতে যে আমার ত্রুটিগুলো আছে সেগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করবেন, তারপরে বাকি কাজ।’

আর্থিক বিষয় ও তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে কেন এত সমালোচনা ও বিতর্কের তৈরি হচ্ছে সে বিষয়েও কথা বলেন ফারুক আহমেদ। তার মতে অনেকে বিসিবি সভাপতির পদ বাগিয়ে নিতে চায় বলে এমন প্রশ্ন তুলছে। তার কথায়, ‘এটা বলা খুব মুশকিল। কেননা, এই জায়গাটায় ক্রিকেট বোর্ডের (সভাপতি পদ) অনেকের অনেক ইন্টারেস্ট। তারাও হতে পারে।’

বিসিবি আর্থিক বিষয়ের পাশাপাশি সভাপতি ফারুক আহমেদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়েও হয়েছে বেশ জলঘোলা। অনেকের দাবি তার বন্ধু এসএম রানার সঙ্গে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। এমনকি তাদের দাবি আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ফারুক আহমেদেরও সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট রেজিম কিন্তু ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রে বানানো। এটা নিয়ে আমি দীর্ঘ আলোচনা করতে চাই না…আমার ফ্যাসিস্টের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। ফ্যাসিস্ট রেজিমের সঙ্গে যদি সম্পর্ক থাকত, আমি আজকে আপনার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতাম না। আমি কিন্তু প্রেসিডেন্ট এই নতুন সরকারের। এটা কিন্তু আপনাদের বুঝতে হবে। নতুন সরকার যদি দেখে বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা থাকত আমার, তাহলে কিন্তু আমি এখানে আসতাম না আজকে।’

নিজেকে নিয়ে সমালোচনার উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি টেস্ট ক্রিকেটে কীভাবে বাংলাদেশকে উন্নতি করতে হবে সেই উপায় বাতলে দেন ফারুক আহমেদ। এ নিয়ে ফারুক বলেন, ‘নির্দিষ্ট পরিকল্পনা, আপনার অবশ্যই ভালো কন্ডিশনে ম্যাচ খেলা এবং প্লেয়ারদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা। সুযোগ-সুবিধা শুধু টাকা-পয়সা নয় কিন্তু, ফ্যাসিলিটিজ, ড্রেসিংরুম, উইকেটে খেলবেন আপনি, ট্রান্সপোর্টেশন সব জিনিস যদি আমরা ইম্প্রুভ করতে পারি তাহলে শিওর…এটা হঠাৎ করে হবে না।’ তিনি আরো যোগ করেন, ‘প্রায়োরিটি যদি ঠিকমতো দিই আর এখন আমাদের দেশে ছোটখাটো ট্রানজেশনে চলতেছে কিন্তু অনেক এক্সপেরিয়েন্স প্লেয়ার কিন্তু চলে যাচ্ছে। যে কোনো দেশের ক্ষেত্রে এই ভ্যাকুয়ামটা তৈরি হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে যারা (শূন্যস্থান) পূরণ করবে তাদের যদি ঠিকমতো তৈরি করতে পারি তাদের তাহলে (উন্নতি) হবে।’

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত