আমার দেশ অনলাইন
ইসরাইলের দোহা হামলা মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতায় নতুন এক অধ্যায় যোগ করেছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কাতারের রাজধানীতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইসরাইল বাহিনী। এই হামলা শুধু একটি রাজনৈতিক আলোচনা নস্যাৎ করেনি, বরং পুরো বিশ্বকে যেন প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে।
ইসরাইল দুই বছরেরও কম সময়ে গাজায় হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে ৬৪ হাজারের বেশি মানুষকে। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। আন্তর্জাতিক মহল এই হত্যাযজ্ঞকে ইতোমধ্যেই গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তবে দোহায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা একে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এবার আঘাত হানা হয়েছে দখলকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে নয়, বরং একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের ভেতরে।
যুদ্ধবিরতি বনাম ইসরাইলি নীতি
ইসরাইলের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়— যুদ্ধবিরতির ধারণা তাদের রাষ্ট্রীয় নীতির সঙ্গে যায় না। যুক্তরাষ্ট্রের মতো ঘনিষ্ঠ মিত্রও যখন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়, তখনও তেলআবিব তাতে কান দেয় না। কারণ ইসরাইল রাষ্ট্র টিকে আছে দখল, নিপীড়ন এবং ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করার নীতির ওপর।
ফলে দোহায় হামলা শুধু কাতার নয়, পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এতদিন ইসরাইলকে ‘দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র’ বলা হলেও এখন অনেকেই বুঝতে শুরু করেছে, এই রাষ্ট্র কূটনৈতিক শিষ্টাচার বা আন্তর্জাতিক আইন মানতে মোটেই বাধ্য নয়।
পশ্চিমাদের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া
দোহা হামলার পর প্রথমবারের মতো ব্রিটেন, ফ্রান্স এমনকি ভারতও প্রকাশ্যে নিন্দা জানিয়েছে। গাজার গণহত্যায় নীরব থাকা এ দেশগুলো হঠাৎই মুখ খুলল। প্রশ্ন জাগে— গাজায় হাজারো নারী-শিশুর মৃত্যুর চেয়ে কাতারে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কি তাদের কাছে নৈতিকভাবে বেশি ভয়াবহ? নাকি তারা এবার টের পাচ্ছে, ইসরাইলের আগ্রাসন তাদের নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেলতে পারে?
এখানেই আন্তর্জাতিক রাজনীতির ভণ্ডামি প্রকট হয়ে ওঠে। গাজার অগণিত লাশ তাদের বিবেককে নাড়া দেয়নি। কিন্তু কাতারে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলাই তাদের কাছে ‘লাল দাগ’ হয়ে দাঁড়াল। অর্থাৎ বার্তাটা পরিষ্কার— ইসরাইল আর চাইলেই যত্রতত্র হামলা চালাতে পারবে না।
ওয়াশিংটনের দ্বিমুখী অবস্থান
হোয়াইট হাউস মুখপাত্র ক্যারোলাইন লেভিট দোহা হামলার নিন্দা জানালেও, সঙ্গে যোগ করেছেন— “হামাসকে নির্মূল করাই চূড়ান্ত লক্ষ্য।” এতে পরিষ্কার বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্র এখনো ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসনের মূল কৌশলকে সমর্থন করে যাচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কাতারকে আশ্বস্ত করেছেন, এমন হামলা আর হবে না। কিন্তু বাস্তবে তিনি ইসরাইলের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণই রাখতে পারছেন না। ইসরাইল এখন নিজস্ব কৌশলে শুধু প্রতিবেশী নয়, দূরবর্তী রাষ্ট্রের ভেতরেও হামলা চালাচ্ছে। ফলে ওয়াশিংটনের আশ্বাস কাতারের জন্য কার্যত ফাঁকা বুলি ছাড়া আর কিছু নয়।
ছয় দেশে হামলার নজির
আলজাজিরার তথ্যমতে, মাত্র ৭২ ঘণ্টায় ইসরাইল অন্তত ছয়টি দেশে হামলা চালিয়েছে। ফিলিস্তিন ও কাতারের পাশাপাশি লেবানন, সিরিয়া, তিউনিসিয়া এবং ইয়েমেনকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। এর ফলে কার্যত পুরো মধ্যপ্রাচ্যই পরিণত হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্রে।
বিশ্বযুদ্ধের ছায়া
মোসাদ আগে ইউরোপেও ফিলিস্তিনিদের টার্গেট করেছে। কিন্তু গাজায় পূর্ণাঙ্গ গণহত্যার পাশাপাশি বিদেশে নতুন আঘাত হানার মাধ্যমে ইসরাইল দুটি লক্ষ্য পূরণ করছে— ১. নিজেদের জনগণের কাছে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অজুহাত তৈরি। ২. আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুদ্ধাপরাধের দায় আড়াল করা।
পরিশেষে
দোহা হামলার মধ্য দিয়ে নেতানিয়াহু স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন— ইসরাইল কেবল ফিলিস্তিন নয়, গোটা বিশ্বকেই যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে। এটি যেন এতদিনের অঘোষিত সত্যকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে। বিশ্বশক্তির জন্য এটি এক গুরুতর সতর্কবার্তা : যদি এখনই ইসরাইলকে লাগাম না দেওয়া হয়, তবে পরবর্তী লক্ষ্য কে হবে, তা কেউই বলতে পারবে না।
ইসরাইলের দোহা হামলা মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতায় নতুন এক অধ্যায় যোগ করেছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কাতারের রাজধানীতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইসরাইল বাহিনী। এই হামলা শুধু একটি রাজনৈতিক আলোচনা নস্যাৎ করেনি, বরং পুরো বিশ্বকে যেন প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে।
ইসরাইল দুই বছরেরও কম সময়ে গাজায় হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে ৬৪ হাজারের বেশি মানুষকে। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। আন্তর্জাতিক মহল এই হত্যাযজ্ঞকে ইতোমধ্যেই গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তবে দোহায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা একে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এবার আঘাত হানা হয়েছে দখলকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে নয়, বরং একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের ভেতরে।
যুদ্ধবিরতি বনাম ইসরাইলি নীতি
ইসরাইলের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়— যুদ্ধবিরতির ধারণা তাদের রাষ্ট্রীয় নীতির সঙ্গে যায় না। যুক্তরাষ্ট্রের মতো ঘনিষ্ঠ মিত্রও যখন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়, তখনও তেলআবিব তাতে কান দেয় না। কারণ ইসরাইল রাষ্ট্র টিকে আছে দখল, নিপীড়ন এবং ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করার নীতির ওপর।
ফলে দোহায় হামলা শুধু কাতার নয়, পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এতদিন ইসরাইলকে ‘দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র’ বলা হলেও এখন অনেকেই বুঝতে শুরু করেছে, এই রাষ্ট্র কূটনৈতিক শিষ্টাচার বা আন্তর্জাতিক আইন মানতে মোটেই বাধ্য নয়।
পশ্চিমাদের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া
দোহা হামলার পর প্রথমবারের মতো ব্রিটেন, ফ্রান্স এমনকি ভারতও প্রকাশ্যে নিন্দা জানিয়েছে। গাজার গণহত্যায় নীরব থাকা এ দেশগুলো হঠাৎই মুখ খুলল। প্রশ্ন জাগে— গাজায় হাজারো নারী-শিশুর মৃত্যুর চেয়ে কাতারে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কি তাদের কাছে নৈতিকভাবে বেশি ভয়াবহ? নাকি তারা এবার টের পাচ্ছে, ইসরাইলের আগ্রাসন তাদের নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেলতে পারে?
এখানেই আন্তর্জাতিক রাজনীতির ভণ্ডামি প্রকট হয়ে ওঠে। গাজার অগণিত লাশ তাদের বিবেককে নাড়া দেয়নি। কিন্তু কাতারে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলাই তাদের কাছে ‘লাল দাগ’ হয়ে দাঁড়াল। অর্থাৎ বার্তাটা পরিষ্কার— ইসরাইল আর চাইলেই যত্রতত্র হামলা চালাতে পারবে না।
ওয়াশিংটনের দ্বিমুখী অবস্থান
হোয়াইট হাউস মুখপাত্র ক্যারোলাইন লেভিট দোহা হামলার নিন্দা জানালেও, সঙ্গে যোগ করেছেন— “হামাসকে নির্মূল করাই চূড়ান্ত লক্ষ্য।” এতে পরিষ্কার বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্র এখনো ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসনের মূল কৌশলকে সমর্থন করে যাচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কাতারকে আশ্বস্ত করেছেন, এমন হামলা আর হবে না। কিন্তু বাস্তবে তিনি ইসরাইলের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণই রাখতে পারছেন না। ইসরাইল এখন নিজস্ব কৌশলে শুধু প্রতিবেশী নয়, দূরবর্তী রাষ্ট্রের ভেতরেও হামলা চালাচ্ছে। ফলে ওয়াশিংটনের আশ্বাস কাতারের জন্য কার্যত ফাঁকা বুলি ছাড়া আর কিছু নয়।
ছয় দেশে হামলার নজির
আলজাজিরার তথ্যমতে, মাত্র ৭২ ঘণ্টায় ইসরাইল অন্তত ছয়টি দেশে হামলা চালিয়েছে। ফিলিস্তিন ও কাতারের পাশাপাশি লেবানন, সিরিয়া, তিউনিসিয়া এবং ইয়েমেনকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। এর ফলে কার্যত পুরো মধ্যপ্রাচ্যই পরিণত হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্রে।
বিশ্বযুদ্ধের ছায়া
মোসাদ আগে ইউরোপেও ফিলিস্তিনিদের টার্গেট করেছে। কিন্তু গাজায় পূর্ণাঙ্গ গণহত্যার পাশাপাশি বিদেশে নতুন আঘাত হানার মাধ্যমে ইসরাইল দুটি লক্ষ্য পূরণ করছে— ১. নিজেদের জনগণের কাছে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অজুহাত তৈরি। ২. আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুদ্ধাপরাধের দায় আড়াল করা।
পরিশেষে
দোহা হামলার মধ্য দিয়ে নেতানিয়াহু স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন— ইসরাইল কেবল ফিলিস্তিন নয়, গোটা বিশ্বকেই যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে। এটি যেন এতদিনের অঘোষিত সত্যকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে। বিশ্বশক্তির জন্য এটি এক গুরুতর সতর্কবার্তা : যদি এখনই ইসরাইলকে লাগাম না দেওয়া হয়, তবে পরবর্তী লক্ষ্য কে হবে, তা কেউই বলতে পারবে না।
বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ৩ মিনিটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, স্পট গোল্ডের দাম ২.৬ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সে চার হাজার ১৭ দশমিক ২৯ ডলারে নেমে এসেছে, যা প্রায় দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন।
২৪ মিনিট আগেউগান্ডা পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় রাত সোয়া ১২টার দিকে কাম্পালা-গুলু হাইওয়েতে বিপরীত দিকে আসা দুটি বাস মুখোমুখি হয়ে যায়। দুর্ঘটনা এড়াতে গেলে একটি বাস উল্টে যায়। আর এ সময় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে অন্যান্য যানবাহনগুলোও উল্টে গেলে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগেআফগানিস্তান-যুক্তরাষ্ট্রের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ঘটে ২০২১ সালে। দুই দশক ধরে চলা, এই যুদ্ধের কারণে বৈরী সম্পর্ক রয়েছে দেশ দুটির মধ্যে, তবে এমন সম্পর্ক থেকে উত্তরণ চায় ইসলামিক আমিরাত আফগানিস্তান। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উন্নয়নই এখন তাদের লক্ষ্য।
৩ ঘণ্টা আগেভারতের উত্তর প্রদেশের একটি শিল্পনগরী এলাকা কানপুর। গত ৪ সেপ্টেম্বর কানপুরের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা সৈয়দ নগরে ঈদে মিলাদুন্নবি উদ্যাপন উপলক্ষে সন্ধ্যায় একটি সাইনবোর্ড টাঙানো হয়।
৪ ঘণ্টা আগে