স্বাধীনতা ইস্যুতে বিভক্ত রাজনৈতিক দলগুলো

গ্রিনল্যান্ডের ভাগ্য নির্ধারণে ভোট গ্রহণ শুরু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৫, ১৮: ০৪

বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডে মঙ্গলবার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রায় ৪১ হাজার ভোটার দেশটির ৩১ সদস্যের সংসদ নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। সাধারণত আন্তর্জাতিক মহলে গ্রিনল্যান্ডের নির্বাচন খুব বেশি আলোচিত হয় না। তবে এবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বীপটি কেনার প্রকাশ্য আগ্রহের কারণে ভোটের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। কৌশলগত কারণে দ্বীপটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি রাশিয়া ও আমেরিকার মাঝামাঝি অবস্থিত এবং এতে প্রচুর খনিজ সম্পদ রয়েছে।

নির্বাচন আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে প্রতিটি দল তাদের ভোটের অনুপাতে সংসদে আসন পাবে। বিশাল ভূখণ্ড ও প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও ৭০-৭৫ শতাংশ ভোট পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনে প্রধান ইস্যু গ্রিনল্যান্ডের স্বাধীনতা। ছয়টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে পাঁচটি স্বাধীনতার পক্ষে থাকলেও কত দ্রুত এটি হওয়া উচিত, তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মুট এগেদে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘গ্রিনল্যান্ড আমাদেরই থাকবে।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের মন্তব্য নতুন করে স্বাধীনতা প্রশ্নে বিতর্ক উসকে দিয়েছে।

গ্রিনল্যান্ড ১৯৭৯ সালে সীমিত স্বায়ত্তশাসন পায় এবং ২০০৯ সালে আরো বিস্তৃত স্বায়ত্তশাসন লাভ করে। যদিও প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতি এখনো ডেনমার্কের নিয়ন্ত্রণে, তবে গণভোটের মাধ্যমে চূড়ান্ত স্বাধীনতা ঘোষণা করার ক্ষমতা গ্রিনল্যান্ড সরকারের রয়েছে।

স্বাধীনতা অর্জনের জন্য অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দ্বীপটির অর্থনীতি মূলত মৎস্য শিল্প ও ডেনমার্কের অর্থনৈতিক অনুদানের ওপর নির্ভরশীল। কোপেনহেগেন প্রতি বছর ৫৭০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়, যা দ্বীপটির মোট বাজেটের অর্ধেকেরও বেশি। এ কারণে অনেকেই মনে করেন খনিজ, পর্যটন ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ ছাড়া স্বাধীনতা দীর্ঘ স্থায়ী হবে না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বের প্রায় ২৫% দুষ্প্রাপ্য খনিজ উপাদান গ্রিনল্যান্ডে রয়েছে। তবে খনিজ সম্পদ আহরণে পরিবেশগত ঝুঁকি এবং আদিবাসীদের বিরোধিতা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনের ফলে গ্রিনল্যান্ডের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কীভাবে গড়ে উঠবে, তা নির্ধারিত হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রিনল্যান্ড আমেরিকা, আইসল্যান্ড ও কানাডার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে পারে।

ট্রাম্প ২০১৯ সালে প্রথম গ্রিনল্যান্ড কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং সম্প্রতি কংগ্রেসে বলেছেন, ‘আমরা যে কোনোভাবে এটি পেতে যাচ্ছি।’ তার এই বক্তব্য গ্রিনল্যান্ডের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দ্বীপটির অবস্থান ও প্রাকৃতিক সম্পদের কারণে এটি আমেরিকা, রাশিয়া ও চীনের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত