নিউ ইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি অবশেষে ঠিক করেছেন—তিনি ঐতিহাসিক গ্রেসি ম্যানশনে উঠছেন। ১৭৯৯ সালে নির্মিত এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বেশিরভাগ মেয়রের সরকারি বাসভবন গ্রেসি ম্যানশনে ওঠা মানে শুধু ঠিকানা বদল নয়; এর সঙ্গে যুক্ত আছে প্রতীকী, রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত নানা বার্তা।
মামদানি এতদিন ছিলেন কুইন্সের অ্যাস্টোরিয়ায় একটি ভাড়া-স্থিতিশীল অ্যাপার্টমেন্টে—যা তার সাশ্রয়ী আবাসন-কেন্দ্রিক প্রচারণার সময় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। তিনি মাসে প্রায় ২,৩০০ ডলার ভাড়া দিতেন, যেখানে নিউ ইয়র্কে এক শোবার ঘরের গড় ভাড়া ৩,৫০০ ডলারের কাছাকাছি। তাই বহু নিউ ইয়র্কবাসীর জন্য তার অ্যাপার্টমেন্ট ছিল একটি ‘জীবনরেখা’-র উদাহরণ।
গ্রেসি ম্যানশনে উঠার সিদ্ধান্তকে মামদানি ব্যাখ্যা করেছেন পরিবারের নিরাপত্তা ও শহরের সাশ্রয়ী আবাসন নীতিতে পুরোটা মনোযোগ দিতে পারার কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে।
তাহলে গ্রেসি ম্যানশনে কী আছে?
পাঁচ বেডরুমের ঐতিহাসিক প্রাসাদ, পূর্ব নদীর ধারে মাখন-হলুদ রঙ, সবুজ শাটার ও সাদা রেলিংসহ এক মনোরম স্থাপনা।
এটির ফেডারেল-স্টাইলের অভ্যন্তর, যা বাড়িটির আদি যুগের নান্দনিকতা ধরে রেখেছে। মাখন-হলুদ রঙের বাড়ি, সবুজ শাটার, সাদা রেলিং এবং নদীর ধারের অবস্থান—শহরের ব্যস্ততার মাঝে এটি এক প্রশান্ত পরিবেশ প্রদান করে।
বিশ্বমানের রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের গ্রহণ করার জন্য গ্রেসি ম্যানশন একটি আদর্শ স্থান।
উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, মেয়র ও তার পরিবারের সুরক্ষার জন্য বিশেষভাবে সাজানো।
নানা ‘ভূতের’ গল্প, যা প্রাক্তন মেয়রদের পরিবারদের অভিজ্ঞতা থেকে শহরে বেশ পরিচিত—যদিও তা পৌর-কিংবদন্তির বেশি বলে অনেকে মনে করেন।
ইতিহাসে কিছু মেয়র এখানে থাকতে চাননি, যেমন মাইকেল ব্লুমবার্গ, যিনি নিজের টাউনহাউসেই থেকেছেন। তবে মামদানির সিদ্ধান্ত নিউ ইয়র্ক সিটির ঐতিহ্যিক ধারায় ফিরে আসার ইঙ্গিত দেয়।
অ্যাস্টোরিয়া ছেড়ে দিলেও মামদানি বলেছেন, “অ্যাস্টোরিয়া সবসময় আমার ভেতরে এবং আমার কাজে থাকবে।” নতুন দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে তার এই স্থানান্তর শহরের রাজনীতি এবং আবাসন বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
সূত্র: বিবিসি

