গাজায় যুদ্ধবিরতির আড়ালে চলছে অবরোধ

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ১৩

মিসরের শারম আল–শেখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মধ্যস্থতায় ১০ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। কিন্তু যুদ্ধবিরতির পরও গাজার ভয়াবহ চিকিৎসা সংকটের কোনও উন্নতি হয়নি। কারণ, ইসরাইল এখনো গাজায় প্রায় সব ধরনের চিকিৎসা সরঞ্জামের পাশাপাশি চিকিৎসক প্রতিনিধি প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছিল, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় অনুরোধ করা চিকিৎসা সরবরাহের মাত্র ১০ শতাংশ প্রবেশ করতে পেরেছে।

গাজার স্বেচ্ছাসেবক ও চিকিৎসা সহায়তা সমন্বয়কারী লেনা দাজানি বলেন, “আমি প্রায় প্রতিটি ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেছি, এবং তারা সবাই জানিয়েছেন—১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতিতে কোনো পরিবর্তন হয়নি।”

তিনি বলেন, “এখানে এমন অনেক রোগী আছেন যাদের অন্য যেকোনো দেশে আইসিইউতে থাকার কথা, অথচ তারা এখন মাটিতে ঘুমাচ্ছেন। সাব নামে এক শিশুর মাথার খুলির অর্ধেক উড়ে গেছে ইসরাইলি হামলায়, তবুও তাকে চিকিৎসা ছাড়াই মেঝেতে শুয়ে থাকতে হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা কিছুই করতে পারছিলেন না বরং বলেছিলেন যে তাকে চলে যেতে হবে। কেননা, কোনও চিকিৎসা সহায়তা নেই, বিছানা আসছে না।

ফিলিস্তিনি এনজিও প্যালেস্টিনিয়ান এগ্রিকালচার রিলিফস কমিটি (পিএআরসি) এর বহিরাগত সম্পর্ক পরিচালক বাহা জাকৌত জানান, যুদ্ধবিরতির পরও প্রায় কোনও চিকিৎসা সরঞ্জাম বা ওষুধ গাজায় প্রবেশ করতে পারেনি। তিনি বলেন, “গাজার অনেক ফার্মেসি ও হাসপাতালে এখন এমন পর্যায়ে এসেছে যে, সেখানে সাধারণ প্যারাসিটামলও পাওয়া যাচ্ছে না।”

গাজায় প্রবেশের জন্য চিকিৎসা প্রতিনিধিদলের লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ব্রিটিশ প্লাস্টিক সার্জন ভিক্টোরিয়া রোজ, তিনি গাজায় একটি দাতব্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করেন। যুদ্ধবিরতি পর তিনি একটি প্রতিনিধিদলের সাথে গাজায় প্রবেশ করতে চাচ্ছিলেন, তবে ৯ তারিখে তাকে জানানো হয় যে, তাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

রোজ বলেন, “দেখা যাচ্ছে, যাদের পদবি ‘প্রকল্প সমন্বয়কারী’, ‘লজিস্টিক ম্যানেজার’ বা ‘স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা’, তাদের প্রবেশে তেমন বাধা নেই। কিন্তু যাদের পেশাগতভাবে চিকিৎসা-সংক্রান্ত যোগ্যতা রয়েছে, তাদেরকেই সবচেয়ে বেশি বাধা দেওয়া হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ১৭,০০০ ফিলিস্তিনি চিকিৎসাকর্মী নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অন্তত ৯৫ জনকে এখনও ইসরায়েল আটক করে রেখেছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত