গাদ্দাফির ছেলেকে ১১ মিলিয়ন ডলারে জামিনে মুক্তির নির্দেশ

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ০৯
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ০৬

লেবাননের একজন বিচারক প্রায় এক দশক ধরে বিচার-পূর্ব আটক থাকা প্রয়াত লিবিয়ান নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির কনিষ্ঠ পুত্র হানিবাল গাদ্দাফির ১১ মিলিয়ন ডলারে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তার বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

শনিবার কাতারভিত্তিক গণমধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

লেবাননের জাতীয় সংবাদ সংস্থা (এনএনএ) জানিয়েছে, এই জামিনের সিদ্ধান্ত এসেছে লেবাননের প্রভাবশালী শিয়া নেতা ইমাম মুসা আল-সদরের অপহরণ ও নিখোঁজ হওয়া সংক্রান্ত মামলার অংশ হিসেবে, যেখানে গাদ্দাফির বিরুদ্ধে লিবিয়ায় ঘটনার তথ্য গোপনের অভিযোগ রয়েছে।

গাদ্দাফির আইনজীবী লরেন্ট বেয়ন এএফপিকে বলেন, “নির্বিচারে আটকের মামলায় জামিনে মুক্তি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। আমরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানাব।” তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, “আমার মক্কেল আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার অধীনে আছেন, তিনি ১১ মিলিয়ন ডলার জামিন ফি কোথা থেকে আনবেন?”

২০১৫ সালে লেবাননের কর্তৃপক্ষ হানিবাল গাদ্দাফিকে গ্রেপ্তার করে, অভিযোগ করে যে তিনি ১৯৭৮ সালে ইমাম মুসা আল-সদরের নিখোঁজ হওয়া সম্পর্কে তথ্য গোপন করেছিলেন।

মুসা আল-সদর লেবাননের আমাল আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা, যিনি হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। তিনি লিবিয়ায় সফরের সময় তার এক সহকারী ও এক সাংবাদিকসহ নিখোঁজ হন। এরপর থেকে তাদের কোনো খোঁজ মেলেনি।

ইমাম আল-সদরের নিখোঁজ হওয়া লিবিয়া-লেবানন সম্পর্কের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের উত্তেজনার কারণ। অনেকেই বিশ্বাস করেন, তৎকালীন লিবিয়ান নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির সরকার এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল।

লেবাননের সংসদের স্পিকার ও আমাল আন্দোলনের বর্তমান প্রধান নাবিহ বেরি অভিযোগ করেছেন, লিবিয়ার নতুন সরকার আল-সদরের নিখোঁজ হওয়ার তদন্তে সহযোগিতা করছে না। তবে লিবিয়া এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

অন্যদিকে, মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আগস্টে লেবাননকে হানিবাল গাদ্দাফিকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানায়। সংস্থাটি জানায়, “আপাতদৃষ্টিতে অপ্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতে” তাকে বছরের পর বছর ধরে বেআইনিভাবে বন্দী রাখা হয়েছে।

সম্প্রতি পেটের ব্যথার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার স্বাস্থ্য নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দেয়। ২০২৩ সালে বিচার ছাড়াই দীর্ঘ আটক থাকার প্রতিবাদে অনশনে যাওয়ার পর লিবিয়ান কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে তার মুক্তির আবেদন জানিয়েছিল।

লিবিয়ার প্রসিকিউটর জেনারেল আল-সেদিক আল-সৌর লেবাননের প্রধান প্রসিকিউটর ঘাসান ওয়েইদাত-এর কাছে পাঠানো চিঠিতে বলেন, গাদ্দাফিকে মুক্তি দিলে “ইমাম আল-সদরের নিখোঁজ রহস্য উদঘাটনে সহযোগিতা” হতে পারে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত