বজ্রপাতপ্রবণ এলাকায় কৃষকদের সুরক্ষায় অভিনব এক যন্ত্র তৈরি করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একদল স্কুলছাত্র। বাঁশের খুঁটি, তামার তার ও অ্যালুমিনিয়ামের পাত ব্যবহার করে তৈরি এই স্বল্পমূল্যের বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্র ইতোমধ্যেই মাঠপর্যায়ে সফলভাবে কাজ করছে।
এমন তথ্য উঠে এসেছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র এক প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি হওয়া বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্র যেমন সহজলভ্য, তেমনি খরচও কম—যা গ্রামের কৃষকদের জন্য বড় সুবিধা। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণার সুন্দরবন-সংলগ্ন বিপ্রদাসপুর গ্রামের কৃষক পঞ্চানন মণ্ডল কয়েক বছর আগে নিজের আড়াই বিঘা জমিতে যন্ত্রটি বসান। তিনি জানান, যন্ত্রটা যদি এখানে থাকত, তাহলে বজ্রপাতের সময়েও নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারতাম।
প্রচলিত ‘লাইটনিং অ্যারেস্টার’-এর বিকল্প হিসেবে স্থানীয় এক বিজ্ঞান শিক্ষক পশুপতি মণ্ডলের তত্ত্বাবধানে ছাত্ররা এটি উদ্ভাবন করেন। বিজ্ঞান মেলায় প্রদর্শনের পর যন্ত্রটি পরীক্ষা করা হয় ব্যাঙ্গালোরের কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ গবেষণা কেন্দ্র (CPRI)-এ, যেখানে এক লক্ষ ভোল্ট বিদ্যুৎ যন্ত্রটির মধ্য দিয়ে নিরাপদে প্রবাহিত হওয়ার প্রমাণ মেলে।
এই পরীক্ষার সফলতার পর গ্রামে আরো অন্তত ১৬-১৭ জন কৃষক যন্ত্রটি নিজেদের জমিতে বসিয়েছেন। সহজ প্রযুক্তি, অল্প খরচ ও কার্যকারিতা—এই তিনটি দিক মিলিয়ে এটি হয়ে উঠছে বজ্রপাতে প্রাণহানির ঝুঁকি রোধে এক বাস্তব সমাধান।
বিবিসি আরো জানিয়েছে, ভারতে প্রতি বছর প্রচুর মানুষ বজ্রপাতে মারা যান, যাদের একটি বড় অংশই খোলা মাঠে কৃষিকাজে নিয়োজিত থাকে। এমন বাস্তবতায় গ্রামীণ এলাকায় এই ধরনের উদ্ভাবন হতে পারে প্রাণরক্ষার নির্ভরযোগ্য উপায়।

