ভারতের ভোটার তালিকা সংশোধন, বাদ পড়তে পারে লাখো মুসলিম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ৩৬
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪৫
ফাইল ছবি

ভারতে নতুন করে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রমে সবচেয়ে বড় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে মুসলিম ভোটারদের নিয়ে। কারণ, নতুন এই তালিকা থেকে বাদ যেতে পারেন কয়েক লাখ মুসলিম ভোটার। ফলে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশটিতে মুসলমানরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।

তিন মাসের ভোটার তালিকা সংশোধন যা এসআইআর নামে পরিচিত, তা শুরু হয় ১২টি রাজ্য ও অঞ্চলে। কারণ, এসব রাজ্যে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, এই ভোটার তালিকা হালনাগাদের অর্থ হলো সঠিক ভোটার শনাক্ত এবং জাল ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া। তবে বিরোধী নেতা এবং অধিকার গোষ্ঠীগুলো এই অভিযানকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) কর্তৃক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের বাদ দেওয়ার পাঁয়তারা বলে অভিহিত করেছে।

বিজ্ঞাপন

ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রধান জ্ঞানেশ কুমার সাংবাদিকদের বলেছেন, এই তালিকা করতে কাজ করছেন কয়েক হাজার নির্বাচনি কর্মকর্তা এবং প্রায় পাঁচ লাখ স্বেচ্ছাসেবক। এরা ভোটার গণনা ফরম পূরণের জন্য জনগণের বাড়ি বাড়ি যাবেন। এ বছরের শুরুতে ১৩ কোটিরও বেশি মানুষের আবাসস্থল পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারে একই ধরনের সংশোধনীর কাজ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া রাজ্য নির্বাচনের আগেই এখানকার ভোটার তালিকা সংশোধন করা হয়। আর এই তালিকা থেকে বাদ পড়ে প্রায় ৬৫ ​​লাখ নাম। যাকে ইসিআই বলছে, অবৈধ অভিবাসীদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া। মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে, প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে আসা মুসলিম অভিবাসীরা জালিয়াতি করে ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করেছেন। তবে সমালোচকরা বলছেন, এই প্রক্রিয়ায় বিপুলসংখ্যক ভারতীয় নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারেন। জীবিত ভোটারদের মৃত ঘোষণা করা এবং পুরো পরিবারকে খসড়া তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে কর্মীরা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে উদ্বেগ দূর করতে গত আগস্ট মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে বায়োমেট্রিক সংযুক্ত আধার কার্ডটিকে বৈধ নথি হিসেবে বিবেচনা করার পক্ষে রায় দিয়েছেন।

নতুন এসআইআর করা হবে উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু ও কেরালায়। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী দেশটির জনসংখ্যা ১৯৯ মিলিয়ন। তবে বেশ কয়েকটি অধিকার গোষ্ঠী এবং বিরোধী দল এই কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আইনি চ্যালেঞ্জ দায়ের করেছে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে আগামী বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত