গাজায় নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৮

দুবছরেরও বেশি সময় ধরে গাজায় নির্মম আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে হাজারো বেসামরিক নাগরিককে। যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। এই হত্যাকাণ্ডে অবাধে গুলি চালিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। যেখানে যুদ্ধের কোনো নিয়ম ও আইনের তোয়াক্কা করা হয়নি। শুধু পৃথক কর্মকর্তাদের ইচ্ছায় এসব বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে তারা। এমনসব তথ্য জানিয়েছেন ইসরাইলি সেনারা।

ব্রিটিশ টেলিভিশন আইটিভির প্রামাণ্যচিত্র ‘ব্রেকিং র‍্যাংকস : ইনসাইড ইসরাইলস ওয়ার’নামে একটি প্রামাণ্যচিত্রে নিজেদের এসব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অকপটে সাক্ষ্য দিয়েছেন তারা। ডকুমেন্টারিটি ব্রিটেনে প্রচারিত হওয়ার কথা। এতে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) বেশকিছু সেনা নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে কেউ নিজের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেছেন, কেউবা গোপন রেখেছেন এবং অন্যরা রেকর্ডে কথা বলেছিলেন। সবাই বেসামরিক নাগরিকদের সম্পর্কে সরকারি আচরণবিধি লংঘনের কথা জানিয়েছেন এবং বাষ্পিভবনের দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন। ড্যানিয়েল নামে একজন ট্যাংক ইউনিট কমান্ডার বলেছেন, তাকে বলা হয়েছে তিনি যদি নির্বাচনের গুলি করতে চান, তবে তা-ই পারবেন। কেউ তাকে বাধা দেবে না।

একইসঙ্গে তারা জানিয়েছেন, আইডিএফ নিয়মিতভাবেই গাজার মানুষদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। সেনারা আরো জানিয়েছেন, আমেরিকা ও ইসরাইলের সহায়তায় পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোর কাছে বেসামরিক লোকদের বিনা উসকানিতে গুলি করে হত্যা করেছে আইডিএফ।

ক্যাপ্টেন ইয়োতাম ভিল্ক নামে অন্য এক কর্মকর্তা বলেছেন, আইডিএফের প্রাথমিক প্রশিক্ষণে সেনাদের শেখানো হয় ‘মিন্স, ইনটেন্ট অ্যান্ড অ্যাবিলিটি’। অর্থাৎ, শত্রুর হাতে অস্ত্র (মিন্স), ক্ষতির ইচ্ছা (ইনটেন্ট) এবং তা করার সামর্থ্য (অ্যাবিলিটি) থাকতে হবে।

কিন্তু ভিল্কের ভাষায়, গাজায় এসব কিছুর কোনো মানে নেই। কেউ যদি নিষিদ্ধ এলাকায় হাঁটে, তাহলেই সন্দেহভাজন। তার বয়স যা-ই হোক। অনুষ্ঠানে এলি নামে পরিচিত আরেক সেনা বলেছেন, জীবন ও মৃত্যু নিয়ম বা ফায়ারিং প্রটোকল দিয়ে হয় না। রণক্ষেত্রে কমান্ডারের বিবেকই সিদ্ধান্ত নেয়। এসব পরিস্থিতিতে শত্রু বা সন্ত্রাসী কাকে বলা হবে, তা সম্পূর্ণ মনগড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি তারা খুব দ্রুত হাঁটে, তাহলেও তারা সন্দেহজনক। আবার ধীরে হাঁটলেও সন্দেহজনক।

প্রামাণ্যচিত্রে দেখা যায়, গাজা যুদ্ধের অভিজ্ঞতা বহু ইসরাইলি সেনার মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করে দিয়েছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত