বাংলাদেশি-রোহিঙ্গা তকমা দিয়ে কারমাইকেলের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

বিশেষ প্রতিনিধি, কলকাতা
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৫, ১৪: ৫৮
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৫, ১৫: ০৫

কলকাতায় এবার বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা তকমা দিয়ে বাঙালি মুসলিম শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। ঐতিহাসিক কারমাইকেল হোস্টেলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী বুধবার রাতে শিয়ালদহের শিশির মার্কেটে গেলে এই ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত শিক্ষার্থীদের দাবি, বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কয়েকজন হোস্টেল শিক্ষার্থী মোবাইলের কাভার কিনতে গিয়েছিলেন। কিন্তু জিনিস পছন্দ না হওয়ায় কেনাকাটা না করে দোকান ছাড়ার সময় এক দোকানদার ও তার সঙ্গীরা হিন্দিতে কটূক্তি শুরু করে। অভিযোগ, তাদের ‘বাংলাদেশি’, ‘রোহিঙ্গা’, ‘কাটুয়া’ ও ‘মোল্লা’ বলে গালাগালি করা হয়। এমনকি বলা হয়, ‘মুসলমানরা কিছু কিনবে না, শুধু দেখবে।’

শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে শুরু হয় মারধর। প্রথমে তিন-চারজন গুরুতর আহত হন। পরে অন্যান্য শিক্ষার্থী উদ্ধার করতে গেলে তারাও হামলার শিকার হন। অভিযোগ রয়েছে, হামলাকারীরা ছুরি, লাঠি, রড, হকি স্টিক এমনকি পিস্তল ব্যবহার করেছে। এ ঘটনায় অন্তত সাতজন গুরুতর আহত হয়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের গাল, গলা ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

ঘটনার পর উত্তেজিত হোস্টেলের আবাসিকরা রাতেই মুচিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত থানার সামনে অবস্থান চলে। পুলিশ ইতোমধ্যে দুইজনকে আটক করেছে এবং বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে তল্লাশি চালাচ্ছে।

এ ঘটনায় রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোও সরব হয়েছে। থানায় গিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি তোলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অভিরূপ চক্রবর্তী, এসএফআই’র সাবেক রাজ্য সভাপতি প্রতীক উর রহমান, রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে ও বাংলা পক্ষের গর্গ চট্টোপাধ্যায়।

হোস্টেলের সাবেক শিক্ষার্থীরা বর্তমান আবাসিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অনেকেই আইনজীবী হিসেবে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা হোস্টেল সুপারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তারা সতর্ক করে বলেছেন, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তারা আন্দোলনে নামবেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত