পারমাণবিক আলোচনায় ইউরোপীয় শক্তির সঙ্গে বসছে ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১৯: ৫৬
ইরানের পতাকা।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাতে জানা গেছে, মঙ্গলবার জেনেভায় ইরান এবং ইউরোপের তিনটি দেশ—ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনার নতুন দফা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনা হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় এবং উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে।

সোমবার তুরস্কভিত্তিক গণমাধ্যম হুররিয়াত ডেইলির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

এই বৈঠকটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যখন ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে জুন মাসে টানা ১২ দিনের যুদ্ধ হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে হামলা চালিয়েছে। এ ধরনের উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটের মধ্যেই গত ২৫ জুলাই ইস্তাম্বুলে এক দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষিতে ইরান জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা (আইএইএ)-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করেছে এবং সংস্থার “নিষ্ক্রিয়তা” নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ফলে, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা কার্যত ভেঙে পড়ে।

ইউরোপীয় ত্রয়ী—ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি—হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কমিয়ে না আনলে এবংআইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা না করলে তারা ২০১৫ সালের চুক্তির অধীনে ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ চালু করবে। এর ফলে পূর্বের জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাগুলি আবার কার্যকর হয়ে উঠবে।

তবে ইরান এই হুমকির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং ইউরোপীয় পক্ষগুলোর বিরুদ্ধে নিজেদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করার অভিযোগ করেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ইরান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে ‘জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ (JCPOA) নামে একটি পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। এর আওতায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করতে রাজি হয়। তবে ২০১৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি থেকে একতরফা সরে এসে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে ইরান ধাপে ধাপে তার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসতে শুরু করে।

ইউরোপীয় দেশগুলো শুরুতে চুক্তি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে বাস্তবে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এতে ইরান উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও অর্থনৈতিক চাপে পড়ে।

স্ন্যাপব্যাক প্রক্রিয়া চালুর জন্য ইউরোপীয়দের হাতে থাকা সময়সীমা অক্টোবরের মধ্যে শেষ হবে। তবে ফাইনান্সিয়াল টাইমস এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপীয়রা সেই সময়সীমা বাড়াতে পারে যদি ইরান ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনায় ফিরে আসে এবং (আইএইএ)-এর সঙ্গে আবারও পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা শুরু করে।

তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ইউরোপের এই ধরনের উদ্যোগের কোনো ন্যায়সঙ্গত অধিকার নেই।

এই আলোচনাগুলো ইরান-ইউরোপ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ গতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত