আওয়ামী মন্ত্রীর ছত্রছায়া
জসিম উদ্দিন, খানসামা (দিনাজপুর)
দিনাজপুরের খানসামায় অন্যতম সমালোচিত ব্যক্তির নাম খাদেমুল ইসলাম। আওয়ামী জমানায় তিনি আঙুল ফুলে কলাগাছ হন। তার অস্বাভাবিক উত্থানের নেপথ্যে ছিল ফ্যাসিস্টের অন্যতম হাতিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর আশীর্বাদ।
এই আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ির কাজের ছেলেকে ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) নিয়োগ দেওয়ার পরই কপাল খুলে যায় খাদেমুলের। প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পরও এলাকায় ঘুরছেন বুক ফুলিয়ে। তার নামে মামলা থাকলেও গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ।
জানা গেছে, খাদেমুলের বাড়ি উপজেলার ভেড়ভেড়ি ইউনিয়নের খামার বিষ্ণুগঞ্জ গ্রামে। তার বাবা দিনমজুর ছিলেন। তার সামান্য আয়ে সংসার চালানো কঠিন ছিল। পরিবারে সচ্ছলতা আনতে আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ আলীর এক স্বজনের বাড়িতে কাজ নেন খাদেমুল। তিনি সেখানে গরু-ছাগল চরাতেন, জমিতে সেচ দিতেন, বাজার-সদাই করতেন। মাঝেমধ্যে তিনি মাহমুদ আলীর বাসায় বাজার দিয়ে আসাসহ বিভিন্ন কাজে যাতায়াত করতেন।
এক পর্যায়ে তাকে ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে নিয়ে নেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। শুরু করেন আওয়ামী মন্ত্রীর পরিচয়ে নিয়োগের সুপারিশ, তদবির, চাঁদাবাজি, দখল ও মাদক কারবারের কমিশনবাণিজ্য। এলাকায় পরিচিতি পান ছায়া-প্রশাসকে। তার কথায় ওঠাবসা করা লাগত প্রশাসন থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিদেরও। তার নানা অপকর্মের বিষয়ে জানার পরও ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি কেউ। এভাবে ২০১৪-১৯ পর্যন্ত পিএস থাকাকালে নামে-বেনামে গড়েছেন বিপুল অবৈধ সম্পদ। বনে গেছেন কোটিপতি।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, পিএস হওয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই খাদেমুলের জীবনযাত্রা নাটকীয়ভাবে পাল্টে যায়। গ্রামের সেই পুরোনো ভাঙা বাড়িটি রূপ নেয় দোতলা আধুনিক বাসভবনে। বিঘায় বিঘায় কিনেছেন জমি। রয়েছে মাছ চাষের বিশাল পুকুর। উপজেলার পাকেরহাটে নির্মাণ করেছেন ‘বিডি ফাউন্ডেশন’ নামে একটি ক্লিনিক। এর বাইরে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে তার শেয়ার আছে। গড়েছিলেন গরু ও মহিষের বিশাল খামার, তবে গত ৫ আগস্টের পর দখলের ভয়ে গোপনে সেটি বিক্রি করে দেন।
তার বিষয়ে জানতে চাওয়ায় আক্ষেপ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক কর্মী বলেন, ‘কী আর বলব, রাজনীতির কারণে রাজপথে লড়াই করা, মার খাওয়া, মিছিল-মিটিংয়ে দৌড়াদৌড়ি এবং মামলার আসামি হলাম আমরা। আর অর্থবিত্তের মালিক হয়েছে খাদেমুলের মতো লোকেরা। আবার এখন আমরা ঘরে থাকতে না পারলেও তিনি বুক ফুলিয়ে চলছেন। সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসানের ছত্রছায়ায় কোটিপতি হয়ে গেছেন খাদেমুল। বাড়ি-গাড়ি, ক্লিনিক-সবকিছুই আছে তার। সেই টাকা খরচ করে তিনি এখনো দাপটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আর পুলিশের ভয়ে বাইরে রাতযাপন করছি আমরা।’
পিএস নন, ছিলেন ছায়া-প্রশাসক
স্থানীয়রা জানান, খাদেমুল পিএস হওয়ার পর থেকেই প্রশাসনের ওপর একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। টেন্ডার, প্রকল্প বরাদ্দ, নিয়োগ- কোনো কিছুই তাকে কমিশন দেওয়া ছাড়া হতো না। তিনি থানার ওসিদের হাত করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করাতেন, আবার মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে সেই মামলা প্রত্যাহারও করাতেন।
বিরোধীদের দমন ও থানায় প্রভাব বিস্তার
পিএস থাকাকালে খাদেমুল প্রশাসনের মাধ্যমে বিএনপিসহ রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর একের পর এক মামলা দেন। গ্রেপ্তার করানো, বাড়িঘর থেকে তুলে নেওয়া, ভয়ভীতি দেখানো ছিল তার নিয়মিত অপকর্ম।
স্থানীয় রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খাদেমুল আমাকে রাজনৈতিক কারণে বহুবার হয়রানি করেছেন। আমার একটি মামলার জামিন হওয়ার পর রিকল জমা দিতে গেলে তৎকালীন ওসি কৃষ্ণ বলেন, ‘এই রিকল নেওয়া যাবে না, খাদেমুলের নির্দেশ আছে; ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে, অন্যথায় আবার গ্রেপ্তার করা হবে।’
খাদেমুলের নামে মামলা করেছেন যুবদলের স্থানীয় নেতা রাশেদুজ্জামান স্মৃতি। তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় খাদেমুল ও তার সহযোগীরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা, চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়েছেন।
এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, স্মৃতির কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হলে তিনি তিন লাখ টাকা দেন। পরে খাদেমুল আরো দুই লাখ টাকা দাবি করেন এবং না দিলে তাকে হত্যা ও গুমের হুমকি দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে তাকে রাস্তায় রড, কুড়াল ও লাঠি দিয়ে পেটানো হয়।
প্রশাসন নির্বিকার
জুলাই বিপ্লবের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হলেও আগের মতোই ক্ষমতাবান হিসেবে টিকে আছেন খাদেমুল। তার নামে নানা অভিযোগ ও মামলা থাকলেও গ্রেপ্তারের জন্য কোনো অভিযানও চালায়নি পুলিশ।
যুবদল নেতা স্মৃতি বলেন, ‘আমি মামলা করার পর থেকেই খাদেমুলকে ধরার জন্য থানা পুলিশকে একাধিকবার তাগিদ দিয়েছি; কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
খানসামা থানার ওসি নজমুল হক বলেন, খাদেমুলের নামে মামলা আছে। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযানও চলছে।
দিনাজপুরের খানসামায় অন্যতম সমালোচিত ব্যক্তির নাম খাদেমুল ইসলাম। আওয়ামী জমানায় তিনি আঙুল ফুলে কলাগাছ হন। তার অস্বাভাবিক উত্থানের নেপথ্যে ছিল ফ্যাসিস্টের অন্যতম হাতিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর আশীর্বাদ।
এই আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ির কাজের ছেলেকে ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) নিয়োগ দেওয়ার পরই কপাল খুলে যায় খাদেমুলের। প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পরও এলাকায় ঘুরছেন বুক ফুলিয়ে। তার নামে মামলা থাকলেও গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ।
জানা গেছে, খাদেমুলের বাড়ি উপজেলার ভেড়ভেড়ি ইউনিয়নের খামার বিষ্ণুগঞ্জ গ্রামে। তার বাবা দিনমজুর ছিলেন। তার সামান্য আয়ে সংসার চালানো কঠিন ছিল। পরিবারে সচ্ছলতা আনতে আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ আলীর এক স্বজনের বাড়িতে কাজ নেন খাদেমুল। তিনি সেখানে গরু-ছাগল চরাতেন, জমিতে সেচ দিতেন, বাজার-সদাই করতেন। মাঝেমধ্যে তিনি মাহমুদ আলীর বাসায় বাজার দিয়ে আসাসহ বিভিন্ন কাজে যাতায়াত করতেন।
এক পর্যায়ে তাকে ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে নিয়ে নেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। শুরু করেন আওয়ামী মন্ত্রীর পরিচয়ে নিয়োগের সুপারিশ, তদবির, চাঁদাবাজি, দখল ও মাদক কারবারের কমিশনবাণিজ্য। এলাকায় পরিচিতি পান ছায়া-প্রশাসকে। তার কথায় ওঠাবসা করা লাগত প্রশাসন থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিদেরও। তার নানা অপকর্মের বিষয়ে জানার পরও ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি কেউ। এভাবে ২০১৪-১৯ পর্যন্ত পিএস থাকাকালে নামে-বেনামে গড়েছেন বিপুল অবৈধ সম্পদ। বনে গেছেন কোটিপতি।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, পিএস হওয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই খাদেমুলের জীবনযাত্রা নাটকীয়ভাবে পাল্টে যায়। গ্রামের সেই পুরোনো ভাঙা বাড়িটি রূপ নেয় দোতলা আধুনিক বাসভবনে। বিঘায় বিঘায় কিনেছেন জমি। রয়েছে মাছ চাষের বিশাল পুকুর। উপজেলার পাকেরহাটে নির্মাণ করেছেন ‘বিডি ফাউন্ডেশন’ নামে একটি ক্লিনিক। এর বাইরে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে তার শেয়ার আছে। গড়েছিলেন গরু ও মহিষের বিশাল খামার, তবে গত ৫ আগস্টের পর দখলের ভয়ে গোপনে সেটি বিক্রি করে দেন।
তার বিষয়ে জানতে চাওয়ায় আক্ষেপ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক কর্মী বলেন, ‘কী আর বলব, রাজনীতির কারণে রাজপথে লড়াই করা, মার খাওয়া, মিছিল-মিটিংয়ে দৌড়াদৌড়ি এবং মামলার আসামি হলাম আমরা। আর অর্থবিত্তের মালিক হয়েছে খাদেমুলের মতো লোকেরা। আবার এখন আমরা ঘরে থাকতে না পারলেও তিনি বুক ফুলিয়ে চলছেন। সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসানের ছত্রছায়ায় কোটিপতি হয়ে গেছেন খাদেমুল। বাড়ি-গাড়ি, ক্লিনিক-সবকিছুই আছে তার। সেই টাকা খরচ করে তিনি এখনো দাপটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আর পুলিশের ভয়ে বাইরে রাতযাপন করছি আমরা।’
পিএস নন, ছিলেন ছায়া-প্রশাসক
স্থানীয়রা জানান, খাদেমুল পিএস হওয়ার পর থেকেই প্রশাসনের ওপর একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। টেন্ডার, প্রকল্প বরাদ্দ, নিয়োগ- কোনো কিছুই তাকে কমিশন দেওয়া ছাড়া হতো না। তিনি থানার ওসিদের হাত করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করাতেন, আবার মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে সেই মামলা প্রত্যাহারও করাতেন।
বিরোধীদের দমন ও থানায় প্রভাব বিস্তার
পিএস থাকাকালে খাদেমুল প্রশাসনের মাধ্যমে বিএনপিসহ রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর একের পর এক মামলা দেন। গ্রেপ্তার করানো, বাড়িঘর থেকে তুলে নেওয়া, ভয়ভীতি দেখানো ছিল তার নিয়মিত অপকর্ম।
স্থানীয় রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খাদেমুল আমাকে রাজনৈতিক কারণে বহুবার হয়রানি করেছেন। আমার একটি মামলার জামিন হওয়ার পর রিকল জমা দিতে গেলে তৎকালীন ওসি কৃষ্ণ বলেন, ‘এই রিকল নেওয়া যাবে না, খাদেমুলের নির্দেশ আছে; ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে, অন্যথায় আবার গ্রেপ্তার করা হবে।’
খাদেমুলের নামে মামলা করেছেন যুবদলের স্থানীয় নেতা রাশেদুজ্জামান স্মৃতি। তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় খাদেমুল ও তার সহযোগীরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা, চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়েছেন।
এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, স্মৃতির কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হলে তিনি তিন লাখ টাকা দেন। পরে খাদেমুল আরো দুই লাখ টাকা দাবি করেন এবং না দিলে তাকে হত্যা ও গুমের হুমকি দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে তাকে রাস্তায় রড, কুড়াল ও লাঠি দিয়ে পেটানো হয়।
প্রশাসন নির্বিকার
জুলাই বিপ্লবের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হলেও আগের মতোই ক্ষমতাবান হিসেবে টিকে আছেন খাদেমুল। তার নামে নানা অভিযোগ ও মামলা থাকলেও গ্রেপ্তারের জন্য কোনো অভিযানও চালায়নি পুলিশ।
যুবদল নেতা স্মৃতি বলেন, ‘আমি মামলা করার পর থেকেই খাদেমুলকে ধরার জন্য থানা পুলিশকে একাধিকবার তাগিদ দিয়েছি; কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
খানসামা থানার ওসি নজমুল হক বলেন, খাদেমুলের নামে মামলা আছে। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযানও চলছে।
শেখ হাসিনার গুম-খুনের বাহিনী পর্দানশীল তরুণীদের তুলে নিয়ে নির্যাতন চালাত। টর্চার রুমে নিয়ে শরীর থেকে ওড়না কেড়ে নিত। অনেকটা ক্রসিফাইড হওয়ার মতো করে দুই হাত দুই দিকে তুলে বেঁধে রাখত।
১ দিন আগেদুই হাজার আঠারো সালের ৩০ ডিসেম্বরের নিশিরাতের ভোটপ্রহসনের নির্বাচনটি কত ভুয়া এবং নিকৃষ্ট ছিল, সেটা নির্বাচন কমিশনার মরহুম মাহবুব তালুকদারই শুধু বলে যাননি, খলনায়ক সিইসি কেএম নুরুল হুদাও স্বীকার করেছেন।
১ দিন আগেনিশিরাতের ২০১৮ সালের নির্বাচনে শতভাগ ভোট কাস্ট হওয়া দেশের ২১৩টি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। চলতি বছরের ১৩ মার্চ এই প্রক্রিয়া শুরু হয়। দুদকের পক্ষ থেকে ওইসব কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারদের তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয় নির্বাচন কমিশনের কাছে।
১ দিন আগেজামায়াতের খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, দলের প্রার্থীরা নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। সমমনা ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে জোটের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত আসেনি। মূলত তপশিল ঘোষণার আগে চূড়ান্ত কিছু বলা যাবে না।
২ দিন আগে