রাজনৈতিক ঐকমত্যে সাদা পাথর লুটপাট

এম এ নোমান, ঢাকা ও খালেদ আহমদ, সিলেট
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ২৩
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ২২: ৩৮

পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু সিলেটের দৃষ্টিনন্দন সাদা পাথর ও প্রকৃতিকন্যা জাফলং। স্থান ‍দুটির নৈসর্গিক সৌন্দর্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য পাথরগুলো লুট হয়ে গেছে। বিষয়টি ইতোমধ্যে দেশে সমালোচনার ঝড় তুলেছে।

এক বছর ধরে সরিয়ে ফেলা প্রাকৃতিক সম্পদের বাজারমূল্য প্রায় ৬০০ কোটি টাকা হলেও এর মাধ্যমে ভূপ্রকৃতির কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণযোগ্য নয়। রাজনৈতিক ঐকমত্যের কাছে অসহায় প্রশাসনের আত্মসমর্পণের কারণে এতবড় কেলেঙ্কারি সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন সরকারের নীতিনির্ধারক ও পরিবেশবিদরা।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় ঘুরে দেখা গছে, এ দুটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মুখে মুখে ছিল সিলেটের দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম অনুষঙ্গ সাদা পাথর চুরির ঘটনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও বিষয়টি নিয়ে বেশ সরগরম। ঐকমত্যের ভিত্তিতে পাথর চুরির ঘটনায় রাজনৈতিক নেতাদের তুলাধুনা করছেন পর্যটকরা। তাদের অভিমত, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লিলাভূমি রাজনৈতিক দলের নেতাদের দানবীয় লুটপাটের কারণে এখন মরুভূমিতে রূপ নিয়েছে।

পাথর লুটে রাজনৈতিক ঐকমত্য

দেশের সমস্যা নিরসনে রাজনৈতিক নেতারা একমত হতে না পারলেও পাথর লুট, পাহাড় কাটা ও নদী দখলসহ বিভিন্ন উপায়ে পরিবেশ ধ্বংসের ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে ঐকমত্য আছে। এমন অভিমত সিলেটের সাধারণ নাগরিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের।

সিলেটে পরিবেশ সুরক্ষায় কাজ করেন এমন একাধিক ব্যক্তি বলেন, জেলার জাফলংসহ বিভিন্ন স্থানে পাথর কোয়ারি নামে পাথর উত্তোলনের সঙ্গে কয়েক হাজার মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল। একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে তারা পাথর উত্তোলন করে বিক্রি করতেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ চলে যায় প্রভাবশালীদের হাতে। ওই সময় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রী, এমপি এবং স্থানীয় নেতারাও শতকোটি টাকার এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সিলেটের পাথর উত্তোলনের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

খনিজসম্পদ বিভাগের এক কর্মকর্তা আমার দেশকে জানান, সিলেটের ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর রক্ষা করার জন্য মন্ত্রণালয় কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছিল। রাজনৈতিক নেতারা এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নেন।

কয়েকটি সূত্র জানায়, গত ১৪ জুন সিলেটে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পাথর উত্তোলনকারী, ব্যবসায়ী, মালিক, শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীও অংশ নেন। ওই কর্মসূচিতে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামী সিলেট মহানগরের আমির ফখরুল ইসলাম ও জেলার সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিলেট জেলার প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দিন ও মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাদেক মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম চৌধুরীসহ দলগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত হয়ে পাথর উত্তোলনের অনুমতি দেওয়ার দাবি জানান।

সমাবেশে বিএনপি নেতা রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, যে ব্যবসার ওপর দাঁড়িয়ে ১০ লাখ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করত, যে পাথর কোয়ারি এই জনপদের মানুষ তাদের কাছে একটি পবিত্র আমানত হিসেবে মনে করত, সেই পাথর কোয়ারি বন্ধ করে দিয়ে ১০ লাখ মানুষের পেটে লাথি মারা হয়েছে। আর জামায়াত নেতা ফখরুল ইসলাম বলেন, যে বা যারাই পরিবেশের দোহাই দিয়ে এখানে পাথর-বালু উত্তোলনের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে, তাদের আরো কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না, সেটা এখন খতিয়ে দেখার সময় এসেছে।

সিলেটে শ্রমিকদের পাথর উত্তোলনের অনুমতি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। গত ১০ মে সিলেটের কানাইঘাটে স্থানীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, যে কোনো মূল্যে শ্রমিকদের স্বার্থে পাথর উত্তোলন করা হবে।

রাজনৈতিক দলগুলোর অব্যাহত চাপের কাছে স্থানীয় প্রশাসন আত্মসমর্পণ করে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

দিশাহারা দুই মন্ত্রণালয়

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আমার দেশকে বলেন, মূলত সিলেটের পাথরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছিল আমাদের মন্ত্রণালয়ের হাতে। ওই এলাকায় পাথর লুটের ঘটনা সময়মতোই স্থানীয় প্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে। মন্ত্রণালয়ও একাধিক বৈঠক করে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়। বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়েরও পরামর্শ নেওয়া হয়।

কর্মকর্তারা জানান, গত ১৪ জুন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জাফলং পরিদর্শনে যান। প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে জাফলংসহ সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি ভবিষ্যতে ইজারা দেওয়া হবে না বলে সাংবাদিকদের জানান তারা।

দুই উপদেষ্টা জেলার বল্লাঘাট এলাকায় পৌঁছলে পাথর শ্রমিক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের পথ আটকে বিক্ষোভ করেন। বেশকিছু সময় পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় তারা পাথর লুটকারীদের বিক্ষোভের কবল থেকে বেরিয়ে শহরে চলে আসেন।

জাফলং পরিদর্শন শেষে ওই দিন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, জাফলং একটি প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা। আমরা ট্যুরিজম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি, কীভাবে এখানে ইকোফ্রেন্ডলি ট্যুরিজম গড়ে তোলা যায়। এতে যারা পাথর উত্তোলন করতেন, তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। পরিবেশ রক্ষা করে জাফলং নিয়ে একটি মহাপরিকল্পনা নেওয়া হবে। এতে এ এলাকার অধিবাসীরাই উপকৃত হবে।

ওই সময় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘জায়গাটিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আপাতত এখান থেকে কোনো পাথর উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না। এখান থেকে ক্রাশার মেশিন সরাতে হবে, তাই এসব মেশিনে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।’

এ সময় মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান তাৎক্ষণিকভাবে ক্রাশার মেশিনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করতে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। তবে তাদের এ নির্দেশনার পরও স্থানীয় প্রশাসন পাথর লুট ঠেকাতে পারেনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলোচিত আলফু চেয়ারম্যান ধলাই ব্রিজের দক্ষিণ অংশ বালু উত্তোলনের জন্য লিজ নিয়ে ব্রিজের গোড়া থেকে শুরু করে আশপাশের এলাকায় বালু উত্তোলন করায় নৈরাজ্য শুরু হয়েছে। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ধলাই ব্রিজ। এ নিয়ে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করছেন এলাকাবাসী। আর আলফু চেয়ারম্যানকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সিলেট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদের বিরুদ্ধে। আলফু চেয়ারম্যান আর মকসুদের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা সচেতন থাকায় সুযোগ নিয়েছে লুটপাটে সিদ্ধহস্ত বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিন বাহিনী। তারা সাদা পাথর লুটপাটের উৎসব শুরু করেছেন। এ কাহিনির কথা এখন এলাকার সাধারণ মানুষের মুখে মুখে।

এসব পাথর ও বালু লুটের ব্যাপারে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী আমার দেশকে বলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছি।’

পাথর নেই, ধু-ধু মরুভূমি

সিলেটের পর্যটন এলাকাগুলোর মধ্যে ‘সাদা পাথর’ এবং জাফলং বেশ আকর্ষণীয়। এলাকা দুটি বিভিন্ন রঙের মনোমুগ্ধকর পাথরে ভরা ছিল। গত এক বছর পাথর লুটের মচ্ছব চলেছে। বেপরোয়া লুটপাটে পর্যটন এলাকাগুলো সৌন্দর্য হারিয়ে এখন মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকায় এখন আর পাথর বলতে কিছু নেই। সব পাথরই লুট হয়ে গেছে। গত এক বছরেই এ দুই এলাকা থেকে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, জুলাই বিপ্লবের পর থেকে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর এলাকার কোয়ারিগুলো থেকে পাথর লুটপাটে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। পাথর উত্তোলনে দলগুলো এককাট্টা। এলাকাগুলো ঘুরলে এখন আর কেউ বলবেন না, এখানে এক সময় পাথর ছিল। সাদা পাথরের আকর্ষণে এখানে হাজার হাজার পর্যটক আসতেন। এখন শুধু বালুচর।

এলাকাবাসী জানান, সাদা পাথর এলাকার ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চল লুংলংপুঞ্জি ও শিলংয়ের চেরাপুঞ্জি। সেখানকার ঝরনা থেকে সারা বছর নদের পানি প্রবহমান থাকে। বৃষ্টিবহুল চেরাপুঞ্জির পাদদেশ থেকে বর্ষায় ঢলের পানির সঙ্গে পাহাড় থেকে পাথরখণ্ড এপারে নেমে আসে। ভেসে আসা এই পাথর আমদানি করা পাথরের চেয়ে দামি। এর কদরও বেশি। ব্যবহৃত হয় স্থাপত্যকাজে। এ কারণে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় পাথরখেকোদের।

অসহায় প্রশাসন

প্রশাসন জানার পরও রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাবের কাছে তারা হেরে গেছে। মন্ত্রণালয়ের কঠোর নির্দেশনা থাকলেও তারা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এমনটিই জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ সাংবাদিকদের বলেছেন, সাদা পাথর রক্ষায় আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি কিন্তু কোনোভাবে লুটপাট বন্ধ করা যাচ্ছে না।

লুটপাটের কাহিনি শুনে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা উন নবী বলেছেন, সাদা পাথর পর্যটন স্পট খুঁড়ে পাথর উত্তোলনের ভিডিওটি আমি দেখেছি। পর্যটন স্পটে এ ধরনের কাজ কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।

পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, এভাবে চলতে থাকলে দর্শনীয় স্থানের তালিকা থেকে মুছে যাবে সিলেটের সাদা পাথরের নাম। পাথরখেকোদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় অবাধে সাদা পাথর তোলা হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক শাহ শাহেদা বলেন, প্রশাসন এখানে কোনো কাজই করছে না। পাথর সংরক্ষণ করার জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, তা করা হচ্ছে না।

সার্বিক পরিস্থিতিতে সমন্বিত পদক্ষেপ ছাড়া পুলিশের একার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের মাহমুদ আদনান। তিনি বলেন, সাদা পাথর লুটের ঘটনার খবর পেলেই ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে স্পেশাল টাস্কফোর্সের টিম অভিযান চালায়। আমরা পুলিশ দিয়ে সহযোগিতা করছি।

দুদকের অভিযান

সিলেটের সাদা পাথরে নজিরবিহীন লুটপাটে প্রশাসনের দায় দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পর্যটন এলাকা সাদা পাথরের সুরক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের আরো সতর্ক থাকা প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছেন দুদকের কর্মকর্তারা। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এলাকা সাদা পাথরের পাথর লুটপাট করে বিরানভূমিতে পরিণত করার পর গতকাল বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে যান দুদকের জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। পরিদর্শন শেষে এসব মন্তব্য করেন কমিশনের সিলেট কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফি মো. নাজমুস সাদাত।

তিনি বলেন, পরিদর্শনের প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। এরপর তাদের নির্দেশনায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যারা এই লুটে জড়িত, তাদের সবাইকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আক্তারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, পাথর লুটের ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনতে দুদকের একটি টিম অনুসন্ধান চালাচ্ছে।

সিলেট জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি গঠন

সাদা পাথরে ব্যাপক লুটপাটের পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করা হয়েছে বলে গতকাল জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ। তিনি জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে আগামী রোববারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

সাদা পাথর লুটের সঙ্গে প্রথম থেকে উঠে এসেছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনের নাম। যদিও তিনি তা অস্বীকার করে আসছেন। পাথর লুটের অভিযোগে গত সোমবার তার পদও স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ের আরো কয়েকজন বিএনপি নেতার লুটপাটে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ের লুটপাটকারীরা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতার আশীর্বাদ পাচ্ছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত