সোহাগ কুমার বিশ্বাস, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে বছরে ২৬ লাখ টিইইউএস কনটেইনার ওঠানামার সক্ষমতা থাকলেও চলতি অর্থবছরে হয়েছে ৩২ লাখ ৯৬ হাজার টিইইউএস । ১২ কোটি টন খোলা পণ্য হ্যান্ডলিং করার সক্ষমতা সম্পন্ন বন্দরের বহির্নোঙরে সদ্যবিদায়ী অর্থবছরে খালাস হয়েছে ১৩ কোটি ৭২ লাখ ৪ হাজার ৭৮৩ টন।
১৮টি বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে রপ্তানি হয়েছে ৭ লাখ ৭৭ হাজার টিইইউএস কনটেইনার। আগের বছরে যার পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার টিইইউএস। এসব পরিসংখ্যানের মাধ্যমে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে এ বছর চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস রাজস্ব আদায় করেছে ৭৫ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৬৮ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা।
দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সবচেয়ে বড় এই তিন সূচক অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। অথচ ব্যবসায়ী সংগঠন ও তাদের নেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে, সরকারের বিভিন্ন নীতিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না বলে প্রতিনিয়ত উষ্মা প্রকাশ করছেন তারা। এতে বিভ্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ফলে আতঙ্কিত হয়ে বিনিয়োগে সাহস হারাচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। বিদেশি বিনিয়োগও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ক্রমাগত অপপ্রচারের কারণে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে শুরুতে রাজনৈতিক অস্থিরতায় সরকার পতনের পরপরই বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। বছরজুড়ে নানা দাবিতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অপ্রত্যাশিত আন্দোলনের কারণে আগের বছরের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা নিয়েই চিন্তিত ছিলেন সবাই। কিন্তু ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যবসাবান্ধব নীতি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ফেলে যাওয়া ডলার সংকট মোকাবিলায় মুনশিয়ানা দেখাতে পারায় চলতি বছরের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে জাতীয় অর্থনীতি।
চট্টগ্রাম বন্দরের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছর ১৩ কোটি ৭২ লাখ টন পণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছে, যার প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। একইভাবে ২০২৪ অর্থবছরে ৩১ লাখ ৬৮ হাজার টিইইউএস কনটেইনারের বদলে এবার কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩২ লাখ ৯৬ হাজার টিইইউএস, যার প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। গত বছর ৩ হাজার ৯৭১টি সমুদ্রগামী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করেছিল। এবার সমুদ্রগামী জাহাজ এসেছে ৪ হাজার ৭৭টি। জাহাজ আনাগোনার ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, বছরের শুরুতে রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুই ঈদের লম্বা ছুটি, দুই দফায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে সবশেষে কাস্টমসের কর্মবিরতি, কলমবিরতি ও শাটডাউনের মতো কর্মসূচির কারণে কাজের গতি কমে যায়। সবকিছু একসঙ্গে যুক্ত করলে গত দুই মাসে সদ্যবিদায় অর্থবছরের সমান কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়েছে। এই সময় নির্বিঘ্নে কার্যক্রম চালাতে পারলে আরো বেশি দক্ষতা দেখাতে পারত চট্টগ্রাম বন্দর।
শতভাগ রপ্তানিপণ্য হ্যান্ডলিং করা ১৮টি বেসরকারি কনটেইনার ডিপো বা অফডক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশন (বিকডার) পরিসংখ্যান বলছে, সদ্যবিদায়ী অর্থবছরে মোট ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৯৯৪টি কনটেইনার বোঝাই রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ করা হয়েছে। গত অর্থবছরে যার সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার কনটেইনার। এ বছর প্রবৃদ্ধির হার ১৪ দশমিক ৭২ শতাংশ। গত অর্থবছরে সবচেয়ে কম রপ্তানি হয়েছে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৪৯ হাজার ৩৪৫টি কনটেইনার। আর সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে। ওই মাসে রপ্তানিযোগ্য কনটেইনার জাহাজীকরণ হয়েছে ৭২ হাজার ৭৩৪ টিইইউএস কনটেইনার। এরপরই ২০২৫ সালের মে মাসে রপ্তানি হয় ৭২ হাজার ৫১৬ টিইইউএস কনটেইনার। অন্য মাসগুলোতে স্বাভাবিকভাবে সাড়ে ৬৫ হাজার থেকে ৭০ হাজার কনটেইনার রপ্তানি হয়েছে।
বিকডার সেক্রেটারি রুহুল আমিন শিকদার বিপ্লব বলেন, ‘পতিত সরকারের শেষ এক বছর ডলারের বাজার ছিল অস্থির। প্রতি মাসে টাকার মান ধারাবাহিকভাবে পতন হচ্ছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে যা অনেক দিন ধরে স্থির রয়েছে। এতে দেশীয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক কমেছে। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকট অনেকটাই কেটে গেছে। ফলে আগে এলসি নিয়ে যে জটিলতা মোকাবিলা করতে হচ্ছিল আমদানি-রপ্তানিকারকদের, এখন সেই জটিলতা নেই বললেই চলে। সবকিছু মিলেই আমদানি-রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ও জাতীয় অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরেছে।
এককভাবে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৮০ হাজার ৪০২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করার লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছিল সরকার। এক বছরে প্রতিষ্ঠানটি আদায় করেছে ৭৫ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে থাকলেও আগের অর্থবছরের চেয়ে ৯ দশমিক ৭১ শতাংশ পজেটিভ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। রাজনৈতিক অস্থিরতা আর কাস্টমস কর্মকর্তাদের আন্দোলন না থাকলে ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে এনবিআরের বেধে দেওয়া টার্গেট অর্জন করা সম্ভব হতো বলে মনে করেন কাস্টমস সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম বলেন, এনবিআর সব সময় একটু বেশি টার্গেট বেঁধে দেয়, যা অর্জন করা কখনোই সম্ভব হয় না। এ বছরও টার্গেট অর্জন করতে না পারলেও একেবারের কাছাকাছি পৌঁছানো গেছে, যা কাস্টমস কর্মকর্তাদের আরো উৎসাহিত করেছে। সদ্য শুরু হওয়া অর্থবছর যদি নির্বিঘ্নে যায় তবে আগামী বছর এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
বিজিএমিইএর পরিচালক ও ক্লিপটন গ্রুপের সিইও মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিগত বছরে পরিসংখ্যান অনুযায়ী রপ্তানি ভালো হয়েছে। কিন্তু আরো ভালো করার সুযোগ ছিল। এখনো সক্ষমতার অন্তত ২০ শতাংশ অব্যবহৃত আছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকটে খরচ বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীদের। প্রতিযোগিতার বাজারে কম দামে অর্ডার নিতে হচ্ছে। তাই রপ্তানি বেশি হলেও লাভের অঙ্ক কমেছে অনেক। তবে আসছে বছর আরো ভালো যাবে বলে জানান তিনি।
প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক নসরুল কদির বলেন, ব্যবসায়ীরা সব সময় নেতিবাচক খবর প্রচার করে, সরকারকে চাপে রেখে স্বার্থ উদ্ধারে সচেষ্ট থাকে। অন্তর্বর্তী সরকার যেহেতু সমালোচনা সহ্যের দিক থেকে অনেকটা উদার, তাই এই আমলে সংকটের দিকগুলোকে আরো ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। এ ছাড়া ১৬ বছর ধরে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর অযাচিত রাজনৈতিক চাপ ছিল, যার কারণে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেনি কেউ।
অধ্যাপক নসরুল কদির আরো বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই চাপ হয়তো পুরোটা নিরসন হয়নি। কিন্তু অদৃশ্য প্রভাব অনেকটাই কমেছে, যার ইতিবাচক প্রভাব আমদানি-রপ্তানি ও রাজস্ব আদায়ে ফুটে উঠেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনি একটি রোডম্যাপ দেওয়ায় যতটুকু অনিশ্চয়তা ছিল তা-ও এখন কেটে গেছে। আসছে বছর অর্থনীতিতে আরো বড় ভিত্তি তৈরি হবে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে বছরে ২৬ লাখ টিইইউএস কনটেইনার ওঠানামার সক্ষমতা থাকলেও চলতি অর্থবছরে হয়েছে ৩২ লাখ ৯৬ হাজার টিইইউএস । ১২ কোটি টন খোলা পণ্য হ্যান্ডলিং করার সক্ষমতা সম্পন্ন বন্দরের বহির্নোঙরে সদ্যবিদায়ী অর্থবছরে খালাস হয়েছে ১৩ কোটি ৭২ লাখ ৪ হাজার ৭৮৩ টন।
১৮টি বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে রপ্তানি হয়েছে ৭ লাখ ৭৭ হাজার টিইইউএস কনটেইনার। আগের বছরে যার পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার টিইইউএস। এসব পরিসংখ্যানের মাধ্যমে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে এ বছর চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস রাজস্ব আদায় করেছে ৭৫ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৬৮ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা।
দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সবচেয়ে বড় এই তিন সূচক অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। অথচ ব্যবসায়ী সংগঠন ও তাদের নেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে, সরকারের বিভিন্ন নীতিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না বলে প্রতিনিয়ত উষ্মা প্রকাশ করছেন তারা। এতে বিভ্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ফলে আতঙ্কিত হয়ে বিনিয়োগে সাহস হারাচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। বিদেশি বিনিয়োগও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ক্রমাগত অপপ্রচারের কারণে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে শুরুতে রাজনৈতিক অস্থিরতায় সরকার পতনের পরপরই বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। বছরজুড়ে নানা দাবিতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অপ্রত্যাশিত আন্দোলনের কারণে আগের বছরের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা নিয়েই চিন্তিত ছিলেন সবাই। কিন্তু ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যবসাবান্ধব নীতি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ফেলে যাওয়া ডলার সংকট মোকাবিলায় মুনশিয়ানা দেখাতে পারায় চলতি বছরের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে জাতীয় অর্থনীতি।
চট্টগ্রাম বন্দরের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছর ১৩ কোটি ৭২ লাখ টন পণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছে, যার প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। একইভাবে ২০২৪ অর্থবছরে ৩১ লাখ ৬৮ হাজার টিইইউএস কনটেইনারের বদলে এবার কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩২ লাখ ৯৬ হাজার টিইইউএস, যার প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। গত বছর ৩ হাজার ৯৭১টি সমুদ্রগামী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করেছিল। এবার সমুদ্রগামী জাহাজ এসেছে ৪ হাজার ৭৭টি। জাহাজ আনাগোনার ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, বছরের শুরুতে রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুই ঈদের লম্বা ছুটি, দুই দফায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে সবশেষে কাস্টমসের কর্মবিরতি, কলমবিরতি ও শাটডাউনের মতো কর্মসূচির কারণে কাজের গতি কমে যায়। সবকিছু একসঙ্গে যুক্ত করলে গত দুই মাসে সদ্যবিদায় অর্থবছরের সমান কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়েছে। এই সময় নির্বিঘ্নে কার্যক্রম চালাতে পারলে আরো বেশি দক্ষতা দেখাতে পারত চট্টগ্রাম বন্দর।
শতভাগ রপ্তানিপণ্য হ্যান্ডলিং করা ১৮টি বেসরকারি কনটেইনার ডিপো বা অফডক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশন (বিকডার) পরিসংখ্যান বলছে, সদ্যবিদায়ী অর্থবছরে মোট ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৯৯৪টি কনটেইনার বোঝাই রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ করা হয়েছে। গত অর্থবছরে যার সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার কনটেইনার। এ বছর প্রবৃদ্ধির হার ১৪ দশমিক ৭২ শতাংশ। গত অর্থবছরে সবচেয়ে কম রপ্তানি হয়েছে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৪৯ হাজার ৩৪৫টি কনটেইনার। আর সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে। ওই মাসে রপ্তানিযোগ্য কনটেইনার জাহাজীকরণ হয়েছে ৭২ হাজার ৭৩৪ টিইইউএস কনটেইনার। এরপরই ২০২৫ সালের মে মাসে রপ্তানি হয় ৭২ হাজার ৫১৬ টিইইউএস কনটেইনার। অন্য মাসগুলোতে স্বাভাবিকভাবে সাড়ে ৬৫ হাজার থেকে ৭০ হাজার কনটেইনার রপ্তানি হয়েছে।
বিকডার সেক্রেটারি রুহুল আমিন শিকদার বিপ্লব বলেন, ‘পতিত সরকারের শেষ এক বছর ডলারের বাজার ছিল অস্থির। প্রতি মাসে টাকার মান ধারাবাহিকভাবে পতন হচ্ছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে যা অনেক দিন ধরে স্থির রয়েছে। এতে দেশীয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক কমেছে। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকট অনেকটাই কেটে গেছে। ফলে আগে এলসি নিয়ে যে জটিলতা মোকাবিলা করতে হচ্ছিল আমদানি-রপ্তানিকারকদের, এখন সেই জটিলতা নেই বললেই চলে। সবকিছু মিলেই আমদানি-রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ও জাতীয় অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরেছে।
এককভাবে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৮০ হাজার ৪০২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করার লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছিল সরকার। এক বছরে প্রতিষ্ঠানটি আদায় করেছে ৭৫ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে থাকলেও আগের অর্থবছরের চেয়ে ৯ দশমিক ৭১ শতাংশ পজেটিভ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। রাজনৈতিক অস্থিরতা আর কাস্টমস কর্মকর্তাদের আন্দোলন না থাকলে ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে এনবিআরের বেধে দেওয়া টার্গেট অর্জন করা সম্ভব হতো বলে মনে করেন কাস্টমস সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম বলেন, এনবিআর সব সময় একটু বেশি টার্গেট বেঁধে দেয়, যা অর্জন করা কখনোই সম্ভব হয় না। এ বছরও টার্গেট অর্জন করতে না পারলেও একেবারের কাছাকাছি পৌঁছানো গেছে, যা কাস্টমস কর্মকর্তাদের আরো উৎসাহিত করেছে। সদ্য শুরু হওয়া অর্থবছর যদি নির্বিঘ্নে যায় তবে আগামী বছর এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
বিজিএমিইএর পরিচালক ও ক্লিপটন গ্রুপের সিইও মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিগত বছরে পরিসংখ্যান অনুযায়ী রপ্তানি ভালো হয়েছে। কিন্তু আরো ভালো করার সুযোগ ছিল। এখনো সক্ষমতার অন্তত ২০ শতাংশ অব্যবহৃত আছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকটে খরচ বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীদের। প্রতিযোগিতার বাজারে কম দামে অর্ডার নিতে হচ্ছে। তাই রপ্তানি বেশি হলেও লাভের অঙ্ক কমেছে অনেক। তবে আসছে বছর আরো ভালো যাবে বলে জানান তিনি।
প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক নসরুল কদির বলেন, ব্যবসায়ীরা সব সময় নেতিবাচক খবর প্রচার করে, সরকারকে চাপে রেখে স্বার্থ উদ্ধারে সচেষ্ট থাকে। অন্তর্বর্তী সরকার যেহেতু সমালোচনা সহ্যের দিক থেকে অনেকটা উদার, তাই এই আমলে সংকটের দিকগুলোকে আরো ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। এ ছাড়া ১৬ বছর ধরে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর অযাচিত রাজনৈতিক চাপ ছিল, যার কারণে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেনি কেউ।
অধ্যাপক নসরুল কদির আরো বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই চাপ হয়তো পুরোটা নিরসন হয়নি। কিন্তু অদৃশ্য প্রভাব অনেকটাই কমেছে, যার ইতিবাচক প্রভাব আমদানি-রপ্তানি ও রাজস্ব আদায়ে ফুটে উঠেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনি একটি রোডম্যাপ দেওয়ায় যতটুকু অনিশ্চয়তা ছিল তা-ও এখন কেটে গেছে। আসছে বছর অর্থনীতিতে আরো বড় ভিত্তি তৈরি হবে বলে জানান তিনি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে বিভিন্ন মেরূকরণ। এ নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসবে, কোন দল কার সঙ্গে সমঝোতা বা জোট করে ভোট করবেÑএসব বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তৎপরতাও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
১২ ঘণ্টা আগেনীলের দেশখ্যাত নীলফামারী দীর্ঘদিন শোষণ করেছিল ইংরেজরা। তাদের স্থানীয় নিপীড়ক নীলকরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন উত্তরের এই জেলার চাষিরা। ২০০ বছর পর সেই নিষ্ঠুর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেন আওয়ামী ‘কসাই’খ্যাত আসাদুজ্জামান নূর।
১৬ ঘণ্টা আগেআগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় জেলা প্রশাসকদেরই (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ হিসেবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার দুজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন ডিসিসহ ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
২ দিন আগেবছরের প্রায় ১০ মাস পার হলেও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ শুরু হয়নি। এমনকি পাঠ্যবইয়ের কনটেন্টও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি; এখনো চলছে পরিবর্তন-পরিমার্জনের কাজ। এছাড়া ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনও মেলেনি এখনো।
২ দিন আগে