গাজী শাহনেওয়াজ
সংসদীয় আসনগুলো ২০০১ সালের সীমানায় ফিরেছে। এর ফলে কয়েকটি জেলার আসন বাড়ছে এবং কয়েকটি জেলায় কমছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় আসন নির্দিষ্ট করা হবে; এর সংখ্যা সর্বোচ্চ ১০টি হতে পারে। বাড়তে পারে ঢাকা জেলায় ন্যূনতম একটি আসন।
সূত্রমতে, সাতক্ষীরা, বরগুনা, সিরাজগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলায় আসন বাড়তে পারে। কমতে পারে ঢাকা মহানগরী, গাজীপুর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম জেলায়। আসন অপরিবর্তিত থাকতে পারে ফরিদপুর, বরিশাল, চাঁদপুর ও ময়মনসিংহে। আর ২০০১-এর আদলে ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ পৃথক দুটি আসন হতে পারে। এটা হলে একটি আসন বাড়বে ঢাকা জেলায়।
নবম জাতীয় সংসদ (২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর) নির্বাচনের আগে সংসদীয় আসনের আসনবিন্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছিল এক-এগারো সেনাসমর্থিত সরকারের সাবেক সিইসি ড. শামসুল হুদা কমিশন। স্বাধীনতার পর এমন পরিবর্তন আর হয়নি। ভিন্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আসনবিন্যাস করায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ-অসন্তোষ ছিল সংক্ষুব্ধ আসনের মানুষের।
সূত্রমতে, সে সময়ের বিন্যাস হওয়া ওই আসনগুলোর ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো কী ছিল; বিন্যাসের যৌক্তিকতা কতটুকু ছিল এবং আদৌ প্রয়োজন ছিল কী না; কিংবা রাজনৈতিক ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল কী না- এসব নানা ভাবনা সামনে রেখে বর্তমানে কাজ করছে কেএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন। আসনবিন্যাস নিয়ে সভা করছেন ইসির অতিরিক্ত সচিব এবং মনিটরিং করছেন কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম।
সে সময়ে বিন্যাস হওয়া আসনে নানা অসংগতি ছিল, তা বর্তমান কমিশনের পর্যালোচনায় উঠে এসেছে বলে জানা গেছে। প্রাথমিক একটি ধারণাপত্র তৈরি করা হয়েছে, বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কমিশনের সঙ্গে আলাপে এমন তথ্য পেয়েছে আমার দেশ। আলাপের তথ্যসূত্র বলছে, কমিশন এই উদ্যোগে সফল হলে কয়েকটি জেলার আসন বাড়বে এবং কয়েকটি জেলায় কমতে পারে।
এদিকে, ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা বিন্যাসের লক্ষ্যে ইসিতে আসন পুনর্বিন্যাস চেয়ে জমা হচ্ছে অভিযোগের স্তূপ। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬৩টি আসন থেকে অভিযোগ এসেছে কমিশনে। এখনও অনেক জেলা থেকে আবেদন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। এমনই একটি জেলা যশোর-৪ আসন। অথচ এখনও আবেদন চেয়ে কমিশন থেকে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। বিনা নোটিসে আবেদন এলেও বর্তমান কমিশন সেগুলো আমলে নিয়ে তালিকা প্রণয়ন করে পর্যালোচনা করার চিন্তা-ভাবনা করছে। খবর : নির্ভরযোগ্য সূত্র
এক-এগারো সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্বে এসে কমিশন পুনর্গঠন করে। পুরোনো কমিশন বদলে ড. শামসুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং কমিশনার হিসেবে সাবেক বিচারক ছহুল হুসাইন ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে তিন সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়।
দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচনি আইন সংস্কার, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সংসদীয় আসনের সীমানা বিন্যাস করা হয়। এ কমিশনের সময় প্রথম ঘরে বসে জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) পদ্ধতিতে সীমানা বিন্যাস শুরু হয়। জনশ্রুতি রয়েছে, এই আসন বিন্যাসের টার্গেট ছিল বিএনপি-জামায়াতের ভোট ব্যাংক আসনগুলো ভেঙে চুরমার করা।
সে সময় ১৩০টি আসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। এর ফলে স্বাধীনতার পর থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এলাকার মানুষ যেভাবে ভোট দিয়ে অভ্যস্ত ছিলেন, নবম সংসদের আগে আসনবিন্যাসে ফলে ভিন্ন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন তারা। এই আসনবিন্যাস সমুন্নত রাখতে রাতের ভোটের তকমা পাওয়া কেএম নুরুল হুদার কমিশন বিতর্কিত ধারা যুক্ত করে দেয়। জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১-এর ৮(৩)-এর উপধারা (১)-এর অধীন উল্লিখিত নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক নির্বাচনি এলাকাগুলোর আয়তন, অবস্থান প্রভৃতি হুবহু ঠিক রেখে কেবল প্রশাসনিক পরিবর্তনগুলো, যদি থাকে, অন্তর্ভুক্ত করে আঞ্চলিক নির্বাচনি এলাকাগুলোর তালিকা সরাসরি গেজেটে প্রকাশ করবে।
বর্তমান কমিশন বিতর্কিত এই ধারার বিকল্প পথ কী রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে। এর বিকল্প কিছু পেলে যতদূর সম্ভব ২০০১ সালের সীমানায় ফিরে যেতে পারবেন- আমার দেশকে এমনটাই জানিয়েছেন ইসির একাধিক কর্মকর্তা।
সীমানা-সংক্রান্ত কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। আমার দেশ-এর পক্ষ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা জিআইএস পদ্ধতিতে এবার সীমানা বিন্যাস করব। এর জন্য বিবিএস থেকে আদমশুমারির সর্বশেষ জনসংখ্যানের তথ্য সংগ্রহ করছি। কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জেনেছি, কোন সময় কীভাবে সীমানাবিন্যাস হয়েছিল।
তারা আমাদের জানিয়েছেন, ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের আগে আসনবিন্যাসে আমূল পরিবর্তন আনা হয়। এর আগে, অর্থাৎ ২০০১ সাল পর্যন্ত সংসদীয় আসনগুলো সঠিক ছিল। অসংগতি দূর করার জন্য পুরোনো সীমানায় ফেরার সম্ভাবনা কতটুকু জানতে চাইলে এই কমিশনার বলেন, আইনে একটি বাধা (বার) রেখে গেছে কেএম নুরুল হুদা কমিশন। সেখানে আঞ্চলিক নির্বাচনি এলাকাগুলোর আয়তন, অবস্থান প্রভৃতি হুবহু ঠিক রেখে কেবল প্রশাসনিক পরিবর্তনগুলো আনার কথা বলা হয়েছে। পুরোনো সীমানায় ফেরার ক্ষেত্রে এটা আমাদের জন্য সীমাবদ্ধতা।
অভিযোগ রয়েছে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিশেষ সুবিধা দিতে সারা দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৩০টিতে ব্যাপক রদবদল হয়। অভিযোগ উঠেছিল, বিগত সেনাসমর্থিত ওই কমিশন বেছে বেছে বিএনপির আসনগুলো পুনর্বিন্যাস করে। সে সময়ে ঢাকায় আওয়ামী লীগকে বাড়তি সুবিধা দিতে কুমিল্লাসহ ১২ জেলার ১০টি সংসদীয় আসন কর্তন করেছিল কমিশন। ঢাকা জেলায় ১৩টি থেকে সংসদীয় আসন করা হয় ২০টি। যে ১২টি জেলা থেকে আসন কর্তন করা হয়, তার মধ্যে ১০টি জেলা ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির দখলে ছিল।
একটি জামায়াতের, আর অন্যটি ছিল আওয়ামী লীগের। এটিএম শামসুল হুদার আমলে আসন অবিকল বহাল রেখে টুকটাক বিন্যাস করে দায়িত্ব শেষ করে গেছে বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনকারী কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কেএম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। নতুন কমিশন গঠনের পর বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ২০০৮ সালের আগের সীমানা ফেরত দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছে। পুরোনো সীমানায় ফিরতে অভিযোগও আসছে ইসিতে।
ইসির সূত্রমতে, যৌক্তিক উপায়ে সীমানা বিন্যাস হলে অনেক জেলার আসন বাড়তে পারে, কমতে পারে কিছু জেলার আসনও। ২০০১ সালের বিন্যস্ত আসনে ফিরতে বর্তমান কমিশন কাজ করছে বলে জানা গেছে।
দেখা যায়, ২০০১ সাল পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় আসন ছিল পাঁচটি, এখানে একটি কমিয়ে চারটি করা হয়। এই জেলার শ্যামনগর উপজেলা অখণ্ড রেখে কালিগঞ্জের আটটি ইউনিয়ন যুক্ত করে ২০০৮ সালে বর্তমান সাতক্ষীরা-৪ সংসদীয় আসন করা হয়। আগে দেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা ছিল শ্যামনগর। এ উপজেলায় একক একটি সংসদীয় আসন করা হলে পূর্বের ন্যায় এখানে একটি আসন বাড়তে পারে।
একইভাবে ২০০১ সালে সিরাজগঞ্জ জেলায় আসন ছিল সাতটি, পরবর্তী সংসদের আগে সীমানা বিন্যাস করে একটি কমিয়ে ছয়টি করা হয় এবং কমানো আসনটি রাজশাহী জেলায় বাড়িয়ে ছয়টি করা হয়। পুরোনো সীমানায় ফিরলে সিরাজগঞ্জের একটি আসন বাড়তে পারে। কমবে রাজশাহীকে বর্ধিত করা আসনটি। জনশ্রুতি রয়েছে, বিএনপির ইকবাল মাহমুদ টুকুর একক আধিপত্য ও ভোটব্যাংক নস্যাৎ করতে তৎকালীন কমিশন জেলার আসনটি কমিয়েছিল। অনুরূপভাবে বরগুনার তিনটি আসন থেকে একটি কমিয়ে ঢাকায় আসন বৃদ্ধি করা হয়।
এ জেলার আসনটি আগের মতো ফিরিয়ে তিনটি করার চিন্তা করছে কমিশন। এ জেলায় বিএনপির অবস্থান সৃদৃঢ় ছিল ২০০১ সাল পর্যন্ত। আর কুমিল্লায় অষ্টম সংসদ পর্যন্ত আসন ছিল ১২টি; এখানে একটি কমিয়ে ১১টি করা হয়। কমানো আসনটি চট্টগ্রাম জেলার আসনের সঙ্গে যুক্ত করায় ওই জেলার আসন দাঁড়ায় ১৬টি। এ আসটিও পুরোনো কুমিল্লা জেলায় যুক্ত করা হলে পূর্বের ন্যায় সংশ্লিষ্ট জেলার আসন হবে ১২টি। ২০০১ সাল পর্যন্ত ঢাকা জেলার আসন ছিল ১৩টি।
২০০৮ সালে সীমানা বিন্যাস করে সাতক্ষীরা, বরিশাল, ফরিদপুর, বরগুনা, ময়মনসিংহ এবং ঢাকা জেলার কয়েকটি একক সংসদীয় আসনকে (দোহার ও নবাবগঞ্জ আলাদা আসন ছিল) যুক্ত করে মোট ১৩ থেকে ২০টি আসনে পরিণত করা হয়। আর গাজীপুরের আসন একটি কমবে; সেটি ঢাকা মহানগরীর সঙ্গে যুক্ত করা হবে।
বর্তমান কমিশনের এখন পর্যন্ত বিশ্লেষণে জেলার অখণ্ডতা সমুন্নত রাখার স্বার্থে শুধু বরিশাল, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহ আসন অপরিবর্তিত রেখে সাতক্ষীরা, কুমিল্লা, বরগুনা, সিরাজগঞ্জ ও ঢাকার দোহার এবং নবাবগঞ্জকে আলাদা আসন করে ঢাকা মহানগরের আসন ১০টি করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে বলে ইসির সূত্র নিশ্চিত করেছে। এক্ষেত্রে গাজীপুরে বাড়ানো একটি আসনও কমানো হতে পারে। তবে এখনও সবকিছু পর্যালোচনার মধ্যে রয়েছে- এমনটাই জানিয়েছে কমিশন।
বিনা নোটিসে ২০০১ সালের সীমানায় ফিরতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬৩ অভিযোগ জমা
ঢাকা জেলার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলাকে পূর্বের ন্যায় ২০০১ সালের আদলে স্বতন্ত্র আসন দাবিতে ইসিতে আবেদন করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার একাধিক নাগরিক। সালাউদ্দিন মোল্লা নামে এক বাসিন্দা তাদের যাতায়াতের অসুবিধার কথা উল্লেখ করে আগের মতো ঢাকা-১ দোহার উপজেলাকে একক আসন করার দাবি জানিয়েছেন।
একইভাবে নবাবগঞ্জকে আগের মতো স্বতন্ত্র উপজেলা হিসেবে ঢাকা-২ আসন চেয়ে মো. হুমায়ুন কবীর গং আবেদন করেছেন। বরগুনা জেলার আসন ২০০১ সালের আদলে তিনটি করার দাবি জানিয়ে পৃথক আবেদন করেছেন মো. নুরুল আমিন, সাবেক বিএনপির এমপি নুরুল ইসলাম মনি, ওমর আব্দুল্লাহ শাহীন ও আলহাজ অধ্যাপক আবদুল মজিদ মল্লিক। পিরোজপুর-২ একাদশ জাতীয় সংসদের ন্যায় ভাণ্ডরিয়া, কাউখালী ও ইন্দুরকানী নিয়ে পিরোজপুর-২ আসন করার আবেদন জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আসনের ১০ বাসিন্দা।
তারা হলেন মো. মেজবাউদ্দিন, মশিউর রহমান, মাহিবুল হোসেন গং। মানিকগঞ্জ জেলার একটি কমিয়ে তিনটি করা হয়; আগের মতো চারটি আসন পুনর্বহালের দাবিতে ২০ জন নাগরিক আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাড. আমজাদ হোসেন, মোকছেদুর রহমান, সত্যেন কান্ত পণ্ডিত ও ফজলুল হক গং। আগের মতো সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলাকে একক সংসদীয় আসন করার দাবি জানিয়ে আবদুল ওয়াহেদ নামে একজন আবেদন করেছেন। এছাড়া আবেদন জমা পড়েছে ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, কেরানীগঞ্জ, সাভার ও পিরোজপুর-সংশ্লিষ্ট জেলা থেকেও।
আবেদন জমা পড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ আমার দেশকে বলেন, আমরা সীমানা পুনর্বিন্যাস করার জন্য এখনও কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি করিনি। এরপরও এখন পর্যন্ত ৬৩টি বিভিন্ন আসন থেকে সংক্ষুব্ধরা আবেদন জানিয়েছেন। আমরা তাদের আবেদনগুলো শাখাকে কম্পাইল করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। এই আবেদনগুলোর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেগুলোও সময় সময় পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
এটিএম শামসুল হুদার পথ অনুসরণ করে ২০১৩ সালে এসে ৫০টি আসনে, ২০১৮ সালে ২৫টি আসনে, সর্বশেষ ২০২৩ সালে ১০টি আসনে পরিবর্তন এনেছিল আওয়ামী লীগ আমলে গঠিত কমিশনগুলো। এসব আসনবিন্যাসের ক্ষেত্রে ব্যক্তিবিশেষকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন করে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের আলোচনা সামনে এসেছে। বিএনপি বলেছে, ১৯৮৪ সালে গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ করে ৮৬, ৯১, ৯৬, ২০০১ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেটাই ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে দলটি।
সংসদীয় আসনগুলো ২০০১ সালের সীমানায় ফিরেছে। এর ফলে কয়েকটি জেলার আসন বাড়ছে এবং কয়েকটি জেলায় কমছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় আসন নির্দিষ্ট করা হবে; এর সংখ্যা সর্বোচ্চ ১০টি হতে পারে। বাড়তে পারে ঢাকা জেলায় ন্যূনতম একটি আসন।
সূত্রমতে, সাতক্ষীরা, বরগুনা, সিরাজগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলায় আসন বাড়তে পারে। কমতে পারে ঢাকা মহানগরী, গাজীপুর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম জেলায়। আসন অপরিবর্তিত থাকতে পারে ফরিদপুর, বরিশাল, চাঁদপুর ও ময়মনসিংহে। আর ২০০১-এর আদলে ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ পৃথক দুটি আসন হতে পারে। এটা হলে একটি আসন বাড়বে ঢাকা জেলায়।
নবম জাতীয় সংসদ (২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর) নির্বাচনের আগে সংসদীয় আসনের আসনবিন্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছিল এক-এগারো সেনাসমর্থিত সরকারের সাবেক সিইসি ড. শামসুল হুদা কমিশন। স্বাধীনতার পর এমন পরিবর্তন আর হয়নি। ভিন্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আসনবিন্যাস করায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ-অসন্তোষ ছিল সংক্ষুব্ধ আসনের মানুষের।
সূত্রমতে, সে সময়ের বিন্যাস হওয়া ওই আসনগুলোর ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো কী ছিল; বিন্যাসের যৌক্তিকতা কতটুকু ছিল এবং আদৌ প্রয়োজন ছিল কী না; কিংবা রাজনৈতিক ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল কী না- এসব নানা ভাবনা সামনে রেখে বর্তমানে কাজ করছে কেএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন। আসনবিন্যাস নিয়ে সভা করছেন ইসির অতিরিক্ত সচিব এবং মনিটরিং করছেন কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম।
সে সময়ে বিন্যাস হওয়া আসনে নানা অসংগতি ছিল, তা বর্তমান কমিশনের পর্যালোচনায় উঠে এসেছে বলে জানা গেছে। প্রাথমিক একটি ধারণাপত্র তৈরি করা হয়েছে, বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কমিশনের সঙ্গে আলাপে এমন তথ্য পেয়েছে আমার দেশ। আলাপের তথ্যসূত্র বলছে, কমিশন এই উদ্যোগে সফল হলে কয়েকটি জেলার আসন বাড়বে এবং কয়েকটি জেলায় কমতে পারে।
এদিকে, ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা বিন্যাসের লক্ষ্যে ইসিতে আসন পুনর্বিন্যাস চেয়ে জমা হচ্ছে অভিযোগের স্তূপ। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬৩টি আসন থেকে অভিযোগ এসেছে কমিশনে। এখনও অনেক জেলা থেকে আবেদন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। এমনই একটি জেলা যশোর-৪ আসন। অথচ এখনও আবেদন চেয়ে কমিশন থেকে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। বিনা নোটিসে আবেদন এলেও বর্তমান কমিশন সেগুলো আমলে নিয়ে তালিকা প্রণয়ন করে পর্যালোচনা করার চিন্তা-ভাবনা করছে। খবর : নির্ভরযোগ্য সূত্র
এক-এগারো সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্বে এসে কমিশন পুনর্গঠন করে। পুরোনো কমিশন বদলে ড. শামসুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং কমিশনার হিসেবে সাবেক বিচারক ছহুল হুসাইন ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে তিন সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়।
দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচনি আইন সংস্কার, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সংসদীয় আসনের সীমানা বিন্যাস করা হয়। এ কমিশনের সময় প্রথম ঘরে বসে জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) পদ্ধতিতে সীমানা বিন্যাস শুরু হয়। জনশ্রুতি রয়েছে, এই আসন বিন্যাসের টার্গেট ছিল বিএনপি-জামায়াতের ভোট ব্যাংক আসনগুলো ভেঙে চুরমার করা।
সে সময় ১৩০টি আসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। এর ফলে স্বাধীনতার পর থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এলাকার মানুষ যেভাবে ভোট দিয়ে অভ্যস্ত ছিলেন, নবম সংসদের আগে আসনবিন্যাসে ফলে ভিন্ন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন তারা। এই আসনবিন্যাস সমুন্নত রাখতে রাতের ভোটের তকমা পাওয়া কেএম নুরুল হুদার কমিশন বিতর্কিত ধারা যুক্ত করে দেয়। জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১-এর ৮(৩)-এর উপধারা (১)-এর অধীন উল্লিখিত নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক নির্বাচনি এলাকাগুলোর আয়তন, অবস্থান প্রভৃতি হুবহু ঠিক রেখে কেবল প্রশাসনিক পরিবর্তনগুলো, যদি থাকে, অন্তর্ভুক্ত করে আঞ্চলিক নির্বাচনি এলাকাগুলোর তালিকা সরাসরি গেজেটে প্রকাশ করবে।
বর্তমান কমিশন বিতর্কিত এই ধারার বিকল্প পথ কী রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে। এর বিকল্প কিছু পেলে যতদূর সম্ভব ২০০১ সালের সীমানায় ফিরে যেতে পারবেন- আমার দেশকে এমনটাই জানিয়েছেন ইসির একাধিক কর্মকর্তা।
সীমানা-সংক্রান্ত কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। আমার দেশ-এর পক্ষ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা জিআইএস পদ্ধতিতে এবার সীমানা বিন্যাস করব। এর জন্য বিবিএস থেকে আদমশুমারির সর্বশেষ জনসংখ্যানের তথ্য সংগ্রহ করছি। কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জেনেছি, কোন সময় কীভাবে সীমানাবিন্যাস হয়েছিল।
তারা আমাদের জানিয়েছেন, ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের আগে আসনবিন্যাসে আমূল পরিবর্তন আনা হয়। এর আগে, অর্থাৎ ২০০১ সাল পর্যন্ত সংসদীয় আসনগুলো সঠিক ছিল। অসংগতি দূর করার জন্য পুরোনো সীমানায় ফেরার সম্ভাবনা কতটুকু জানতে চাইলে এই কমিশনার বলেন, আইনে একটি বাধা (বার) রেখে গেছে কেএম নুরুল হুদা কমিশন। সেখানে আঞ্চলিক নির্বাচনি এলাকাগুলোর আয়তন, অবস্থান প্রভৃতি হুবহু ঠিক রেখে কেবল প্রশাসনিক পরিবর্তনগুলো আনার কথা বলা হয়েছে। পুরোনো সীমানায় ফেরার ক্ষেত্রে এটা আমাদের জন্য সীমাবদ্ধতা।
অভিযোগ রয়েছে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিশেষ সুবিধা দিতে সারা দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৩০টিতে ব্যাপক রদবদল হয়। অভিযোগ উঠেছিল, বিগত সেনাসমর্থিত ওই কমিশন বেছে বেছে বিএনপির আসনগুলো পুনর্বিন্যাস করে। সে সময়ে ঢাকায় আওয়ামী লীগকে বাড়তি সুবিধা দিতে কুমিল্লাসহ ১২ জেলার ১০টি সংসদীয় আসন কর্তন করেছিল কমিশন। ঢাকা জেলায় ১৩টি থেকে সংসদীয় আসন করা হয় ২০টি। যে ১২টি জেলা থেকে আসন কর্তন করা হয়, তার মধ্যে ১০টি জেলা ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির দখলে ছিল।
একটি জামায়াতের, আর অন্যটি ছিল আওয়ামী লীগের। এটিএম শামসুল হুদার আমলে আসন অবিকল বহাল রেখে টুকটাক বিন্যাস করে দায়িত্ব শেষ করে গেছে বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনকারী কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কেএম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। নতুন কমিশন গঠনের পর বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ২০০৮ সালের আগের সীমানা ফেরত দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছে। পুরোনো সীমানায় ফিরতে অভিযোগও আসছে ইসিতে।
ইসির সূত্রমতে, যৌক্তিক উপায়ে সীমানা বিন্যাস হলে অনেক জেলার আসন বাড়তে পারে, কমতে পারে কিছু জেলার আসনও। ২০০১ সালের বিন্যস্ত আসনে ফিরতে বর্তমান কমিশন কাজ করছে বলে জানা গেছে।
দেখা যায়, ২০০১ সাল পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় আসন ছিল পাঁচটি, এখানে একটি কমিয়ে চারটি করা হয়। এই জেলার শ্যামনগর উপজেলা অখণ্ড রেখে কালিগঞ্জের আটটি ইউনিয়ন যুক্ত করে ২০০৮ সালে বর্তমান সাতক্ষীরা-৪ সংসদীয় আসন করা হয়। আগে দেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা ছিল শ্যামনগর। এ উপজেলায় একক একটি সংসদীয় আসন করা হলে পূর্বের ন্যায় এখানে একটি আসন বাড়তে পারে।
একইভাবে ২০০১ সালে সিরাজগঞ্জ জেলায় আসন ছিল সাতটি, পরবর্তী সংসদের আগে সীমানা বিন্যাস করে একটি কমিয়ে ছয়টি করা হয় এবং কমানো আসনটি রাজশাহী জেলায় বাড়িয়ে ছয়টি করা হয়। পুরোনো সীমানায় ফিরলে সিরাজগঞ্জের একটি আসন বাড়তে পারে। কমবে রাজশাহীকে বর্ধিত করা আসনটি। জনশ্রুতি রয়েছে, বিএনপির ইকবাল মাহমুদ টুকুর একক আধিপত্য ও ভোটব্যাংক নস্যাৎ করতে তৎকালীন কমিশন জেলার আসনটি কমিয়েছিল। অনুরূপভাবে বরগুনার তিনটি আসন থেকে একটি কমিয়ে ঢাকায় আসন বৃদ্ধি করা হয়।
এ জেলার আসনটি আগের মতো ফিরিয়ে তিনটি করার চিন্তা করছে কমিশন। এ জেলায় বিএনপির অবস্থান সৃদৃঢ় ছিল ২০০১ সাল পর্যন্ত। আর কুমিল্লায় অষ্টম সংসদ পর্যন্ত আসন ছিল ১২টি; এখানে একটি কমিয়ে ১১টি করা হয়। কমানো আসনটি চট্টগ্রাম জেলার আসনের সঙ্গে যুক্ত করায় ওই জেলার আসন দাঁড়ায় ১৬টি। এ আসটিও পুরোনো কুমিল্লা জেলায় যুক্ত করা হলে পূর্বের ন্যায় সংশ্লিষ্ট জেলার আসন হবে ১২টি। ২০০১ সাল পর্যন্ত ঢাকা জেলার আসন ছিল ১৩টি।
২০০৮ সালে সীমানা বিন্যাস করে সাতক্ষীরা, বরিশাল, ফরিদপুর, বরগুনা, ময়মনসিংহ এবং ঢাকা জেলার কয়েকটি একক সংসদীয় আসনকে (দোহার ও নবাবগঞ্জ আলাদা আসন ছিল) যুক্ত করে মোট ১৩ থেকে ২০টি আসনে পরিণত করা হয়। আর গাজীপুরের আসন একটি কমবে; সেটি ঢাকা মহানগরীর সঙ্গে যুক্ত করা হবে।
বর্তমান কমিশনের এখন পর্যন্ত বিশ্লেষণে জেলার অখণ্ডতা সমুন্নত রাখার স্বার্থে শুধু বরিশাল, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহ আসন অপরিবর্তিত রেখে সাতক্ষীরা, কুমিল্লা, বরগুনা, সিরাজগঞ্জ ও ঢাকার দোহার এবং নবাবগঞ্জকে আলাদা আসন করে ঢাকা মহানগরের আসন ১০টি করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে বলে ইসির সূত্র নিশ্চিত করেছে। এক্ষেত্রে গাজীপুরে বাড়ানো একটি আসনও কমানো হতে পারে। তবে এখনও সবকিছু পর্যালোচনার মধ্যে রয়েছে- এমনটাই জানিয়েছে কমিশন।
বিনা নোটিসে ২০০১ সালের সীমানায় ফিরতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬৩ অভিযোগ জমা
ঢাকা জেলার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলাকে পূর্বের ন্যায় ২০০১ সালের আদলে স্বতন্ত্র আসন দাবিতে ইসিতে আবেদন করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার একাধিক নাগরিক। সালাউদ্দিন মোল্লা নামে এক বাসিন্দা তাদের যাতায়াতের অসুবিধার কথা উল্লেখ করে আগের মতো ঢাকা-১ দোহার উপজেলাকে একক আসন করার দাবি জানিয়েছেন।
একইভাবে নবাবগঞ্জকে আগের মতো স্বতন্ত্র উপজেলা হিসেবে ঢাকা-২ আসন চেয়ে মো. হুমায়ুন কবীর গং আবেদন করেছেন। বরগুনা জেলার আসন ২০০১ সালের আদলে তিনটি করার দাবি জানিয়ে পৃথক আবেদন করেছেন মো. নুরুল আমিন, সাবেক বিএনপির এমপি নুরুল ইসলাম মনি, ওমর আব্দুল্লাহ শাহীন ও আলহাজ অধ্যাপক আবদুল মজিদ মল্লিক। পিরোজপুর-২ একাদশ জাতীয় সংসদের ন্যায় ভাণ্ডরিয়া, কাউখালী ও ইন্দুরকানী নিয়ে পিরোজপুর-২ আসন করার আবেদন জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আসনের ১০ বাসিন্দা।
তারা হলেন মো. মেজবাউদ্দিন, মশিউর রহমান, মাহিবুল হোসেন গং। মানিকগঞ্জ জেলার একটি কমিয়ে তিনটি করা হয়; আগের মতো চারটি আসন পুনর্বহালের দাবিতে ২০ জন নাগরিক আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাড. আমজাদ হোসেন, মোকছেদুর রহমান, সত্যেন কান্ত পণ্ডিত ও ফজলুল হক গং। আগের মতো সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলাকে একক সংসদীয় আসন করার দাবি জানিয়ে আবদুল ওয়াহেদ নামে একজন আবেদন করেছেন। এছাড়া আবেদন জমা পড়েছে ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, কেরানীগঞ্জ, সাভার ও পিরোজপুর-সংশ্লিষ্ট জেলা থেকেও।
আবেদন জমা পড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ আমার দেশকে বলেন, আমরা সীমানা পুনর্বিন্যাস করার জন্য এখনও কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি করিনি। এরপরও এখন পর্যন্ত ৬৩টি বিভিন্ন আসন থেকে সংক্ষুব্ধরা আবেদন জানিয়েছেন। আমরা তাদের আবেদনগুলো শাখাকে কম্পাইল করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। এই আবেদনগুলোর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেগুলোও সময় সময় পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
এটিএম শামসুল হুদার পথ অনুসরণ করে ২০১৩ সালে এসে ৫০টি আসনে, ২০১৮ সালে ২৫টি আসনে, সর্বশেষ ২০২৩ সালে ১০টি আসনে পরিবর্তন এনেছিল আওয়ামী লীগ আমলে গঠিত কমিশনগুলো। এসব আসনবিন্যাসের ক্ষেত্রে ব্যক্তিবিশেষকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন করে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের আলোচনা সামনে এসেছে। বিএনপি বলেছে, ১৯৮৪ সালে গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ করে ৮৬, ৯১, ৯৬, ২০০১ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেটাই ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে দলটি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে বিভিন্ন মেরূকরণ। এ নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসবে, কোন দল কার সঙ্গে সমঝোতা বা জোট করে ভোট করবেÑএসব বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তৎপরতাও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগেনীলের দেশখ্যাত নীলফামারী দীর্ঘদিন শোষণ করেছিল ইংরেজরা। তাদের স্থানীয় নিপীড়ক নীলকরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন উত্তরের এই জেলার চাষিরা। ২০০ বছর পর সেই নিষ্ঠুর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেন আওয়ামী ‘কসাই’খ্যাত আসাদুজ্জামান নূর।
১৭ ঘণ্টা আগেআগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় জেলা প্রশাসকদেরই (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ হিসেবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার দুজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন ডিসিসহ ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
২ দিন আগেবছরের প্রায় ১০ মাস পার হলেও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ শুরু হয়নি। এমনকি পাঠ্যবইয়ের কনটেন্টও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি; এখনো চলছে পরিবর্তন-পরিমার্জনের কাজ। এছাড়া ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনও মেলেনি এখনো।
২ দিন আগে