সৈয়দ মিজানুর রহমান
দেশের পোশাক খাতে বড় ধরনের নাশকতার ছক আঁকা হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় দাবি-দাওয়া বা তুচ্ছ ইস্যুকে সামনে এনে শ্রমিকদের উসকে দিতে কাজ করছে একটি মহল। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে একের পর এক কারখানায় শ্রমিক উসকে দেওয়ার নেপথ্যে কাজ করছে পোশাক খাতের অন্তত দেড় শতাধিক ট্রেড ইউনিয়ন।
ঢাকার আশুলিয়া, গাজীপুরের কোনাবাড়ী, শ্রীপুর ও নারায়ণগঞ্জকেন্দ্রিক এসব ট্রেড ইউনিয়নের কার্যক্রমকে পোশাকশিল্প ধ্বংসের চক্রান্ত হিসেবে দেখছেন উদ্যোক্তারা। তারা দাবি করছেন, সরকারের নমনীয় নীতির কারণে বিভিন্ন নামের নিবন্ধনহীন শ্রমিক ইউনিয়নগুলোকে অর্থের জোগান দিচ্ছেন আওয়ামী সমর্থক ঝুট ব্যবসায়ী ও বড় কয়েকটি গ্রুপের মালিকরা।
যেসব গ্রুপের মালিক গার্মেন্টস খাতে অস্থিরতার সুযোগ খুঁজছেন, তাদের কারখানাগুলো আগেই রুগ্ণ অবস্থায় ছিল। আবার কোনো কোনোটি বিগত সরকারের আমলেই ব্যবসা গুটিয়ে অর্থ পাচার করে ব্যাংকের ঋণ খেলাপি হয়ে আছে। মূলত রাজনৈতিক ফায়দা নিতেই এসব শ্রমিক সংগঠনের পেছনে অর্থ ঢালছেন জেলে থাকা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি।
পাঁচ মাসে ১৭০ কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত আগস্ট থেকে জানুয়ারির ২২ তারিখ পর্যন্ত পাঁচ মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ১৭০টি পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা যায়। শ্রমিকদের উসকে দিয়ে আন্দোলনের পর বন্ধ করে দেওয়া হয় ৩৩টি কারখানা। এসব কারখানার ৩১ হাজার ৩৫০ জন শ্রমিক এখন বেকার।
বিজিএমইএর তথ্য মতে, ঢাকার আশুলিয়া, গাজীপুরের কোনাবাড়ী, সাভার, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের কয়েকটি অঞ্চল এখন চরম অনিরাপদ। বিজিএমইএ নিয়মিত তাদের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিক অসন্তোষ বা কারখানার অন্য বিষয়গুলো মনিটরিং করে থাকে। এই মনিটরিং সেলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমার দেশকে বলেন, ৫ আগস্টের পর যেসব কারখানায় নিয়মিত শ্রমিক অসন্তোষ চলছে এগুলোর সবই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে।
তিনি কয়েকটি কারখানার নাম উল্লেখ করেন বলেন, যেমন হা-মীম গ্রুপ, মণ্ডল গ্রুপ, ন্যাচারাল ডেনিম, নাসা গ্রুপ, এনভয় গ্রুপ, ডেকো গ্রুপ, শারমিন গ্রুপ, স্টার্লিং গ্রুপের পোশাক কারখানাগুলোতেই শ্রমিক অসন্তোষ বেশি বলে জানান। তবে এসব কারখানার শ্রমিকদের দাবি-দাওয়ার বিষয়গুলো খুবই তুচ্ছ।
কী দাবি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ?
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) প্রেসিডেন্ট ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ আমার দেশকে জানান, ‘৫ আগস্টের পর পোশাক খাতে এক ধরনের উসকানিমূলক শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। এর কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ঢাকার আশুলিয়া। এখানে ১৩০টি শ্রমিক ইউনিয়ন সক্রিয়। এগুলোর একটিও বৈধ নয়। অথচ আমরা লক্ষ করছি এসব অবৈধ শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গেই সরকার সব সময় বৈঠক করে, আলোচনা করে এবং সিদ্ধান্ত নেয়।’
বিসিআই প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, অন্যায্য দাবি নিয়ে যখন আন্দোলন হয় তখন বুঝতে হবে এর প্রধান কারণ কী। কোন ধরনের অন্যায্য দাব করছেন শ্রমিকরা- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বর্তমান দাবিগুলোর অন্যতম হচ্ছে ৫০ ভাগ পুরুষ শ্রমিক আর ৫০ ভাগ নারী শ্রমিক হতে হবে প্রতিটি পোশাক কারখানায়। সেই সঙ্গে আরো অযৌক্তিক দাবি হচ্ছে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারকে বের করে দিতে হবে, প্রোডাকশন ম্যানেজার পছন্দ নয়- তাকে বের করে দিতে, কারখানার জিএম বদলাতে হবে। এমন আজগুবি দাবি। আর এসব দাবিকে কেন্দ্র করেই আন্দোলন চলছে।’
আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ৫ আগস্টের পর যতগুলো কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ হয়েছে, সবগুলোর শুরু দু-একটি অনৈতিক দাবির মাধ্যমে। পরে এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন ইস্যু। বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে পোশাক খাতে আন্দোলনের আরেকটি কারণ যোগ হয়েছে ঝুট ব্যবসা।
তিনি জানান, আশুলিয়ায় অবৈধ ট্রেড ইউনিয়নগুলোর নিয়ন্ত্রক ঝুট ব্যবসায়ীরা। তাদের বেশির ভাগই সাবেক সরকারের অনুসারী গুণ্ডাবাহিনীর সদস্য। সরকার পরিবর্তন হলেও এসব ঝুট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরাই শ্রমিকদের আর্থিকভাবে সহায়তা দিয়ে থাকে।
নিরীহ শ্রমিকদের মাঠে নামানোর অভিযোগ বিকেএমইএর
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, বেশ কিছু শ্রমিক, বিশেষত রাজনৈতিক দলের সমর্থকরা, শ্রমিকদের সংগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য তাদের আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করছে। তিনি বলেন, শ্রমিকদের অধিকাংশই নিরীহ এবং তারা সাধারণত কাজের মধ্যে থাকেন। তবে, কিছু শ্রমিক নেতার প্ররোচনায় তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। এ ক্ষেত্রে সরকারের উচিত শক্ত হাতে আইন প্রয়োগ করা এবং এ ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল আমার দেশকে বলেন, একাধিক কারখানার মালিক আর্থিক সংকট ও অন্যান্য কারণে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তবে, তিনি মনে করেন, কোনো একটি বা দুটি কারখানার সমস্যা যাতে পুরো শিল্পের ওপর প্রভাব না ফেলতে পারে, সেজন্য সক্রিয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
রাস্তায় বেক্সিমকোর শ্রমিক, সন্দেহের তীর সালমানের দিকে
গত ১৫ ডিসেম্বর বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬টি কারখানা লে অফ বা বন্ধ ঘোষণা করেছে বেক্সিমকো গ্রুপ। শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এই গ্রুপের মালিক। বিভিন্ন মামলায় আসামি হয়ে বর্তমানে জেলে আছেন তিনি। কারাগারে আটক আছেন হাসিনা আমলের মন্ত্রী ও শ্রমিক নেতা শাজাহান খান।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, কারাগারে আটক হওয়ার পর থেকে প্রায় এক মাস একই কক্ষে ছিলেন সালমান, শাজাহান খান ও আরেকটি বড় পোশাকশিল্প গ্রুপের মালিক। মূলত কারাগার থেকেই তারা শ্রমিক আন্দোলনের ছক কষেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সালমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের বন্ধ হওয়া কারখানাগুলোতে কাজ করেন প্রায় ৩০ হাজার পোশাকশ্রমিক। অন্যদিকে সালমান-শাজাহান খানের সঙ্গে জেলে ‘রুমমেট’ ওই সাবেক ব্যবসায়ী নেতার কারখানার শ্রমিক সংখ্যাও প্রায় ১২ হাজার।
গত বুধবার বেক্সিমকোর শ্রমিকদের বিক্ষোভের একপর্যায়ে গাজীপুরের চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। একটি মালভর্তি ট্রাক ও তিনটি বাসেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। তেঁতুইবাড়িতে ‘গ্রামীণ ফেব্রিকস’ নামে একটি কারখানার পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে তিন সংবাদকর্মী আহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই জানিয়েছেন শ্রমিকদের আন্দোলনে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীদেরও দেখা গেছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানতে পারেনি আমার দেশ।
কী বলছে সরকার?
সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষ ও বেক্সিমকো গ্রুপের কারখানাগুলোর শ্রমিকদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিয়ে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি বৈঠক করেছে। বৈঠক শেষে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বেক্সিমকোর কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিক ও দেশবাসীর অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে মোট ৩২টি কারখানার মধ্যে ১৬টির কোনো অস্তিত্ব নেই। এই ১৬ কোম্পানির বিপরীতেই ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। আর ১২টি কারখানা লে অফ করা হয়েছে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে, সরকারের সিদ্ধান্তে নয়।’
শ্রমিক নেতারা যা বলছেন
শ্রমিক নেতাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী কারা, কেন একের পর এক কারখানায় অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে তাদের মন্তব্য, সরকারের ‘নমনীয়’ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে একটি মহল।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, সংকট নিরসনে নেওয়া পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে শ্রমিকদের যথাযথ অবহিত করায় ঘাটতি আছে। একই সঙ্গে পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে কোনো একটি পক্ষ চাচ্ছে না যে পরিস্থিতি শান্ত হোক। এতে রাজনৈতিক মোটিভও থাকতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
অন্যদিকে এতদিন গাজীপুর আশুলিয়া এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভ বা এ ধরনের পরিস্থিতিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ মূল ভূমিকা রাখত। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর পুলিশের পুরো কাঠামোই ভেঙে পড়ায় গত এক মাস ধরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না বলেও জানান শ্রমিক নেতারা।
আন্দোলন বাংলাদেশে, লাভ ভারতের
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের অস্থিরতা নিয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য ইকোনমিস্ট। তাদের খবরে বলা হয়, ১৯৭৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার এক কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে প্রথম রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা স্থাপন করে বাংলাদেশ। এরপর পোশাক রপ্তানি বাংলাদেশের অর্থনীতির শক্তিকেন্দ্রে পরিণত হয়। দেশটির তৈরি পোশাক খাতে এখন ৪০ লাখের বেশি মানুষ কাজ করছে। দেশের জিডিপিতে এই খাতের অবদান ১০ শতাংশ। গত বছর বাংলাদেশ ৫৪ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এ ক্ষেত্রে চীনের পরেই তার অবস্থান।
সম্প্রতি বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে অস্থিরতা চলছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন—এই সময়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। তবে ওই সরকারের পতনের মাসাধিককাল পরেও অস্থিরতা থামেনি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বলীয়ান হয়ে পোশাক খাতের শ্রমিকসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী নতুন সরকারের কাছে দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছে। সেই সঙ্গে চলছে বিদ্যুৎবিভ্রাট। চলতি বছর গ্যাস সংকটের কারণে এমনিতেই শিল্পোৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ইকোনমিস্ট মনে করছে, সামগ্রিকভাবে চলতি বছর পোশাক রপ্তানি ১০ থেকে ২০ শতাংশ কমবে।
এই পরিস্থিতিতে অন্যান্য দেশ সেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে ভারতের কথা বলা হয়েছে। সুতা উৎপাদনে এই দেশটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হলেও তৈরি পোশাক উৎপাদনে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে। অর্থমূল্যের দিক থেকে ২০২৩ সালে ভারত বাংলাদেশের এক-চতুর্থাংশ পরিমাণ পোশাক রপ্তানি করেছে।
তবে সম্প্রতি ভারতের তামিলনাড়ুর ত্রিপুর শহরভিত্তিক পোশাক উৎপাদনকারীরা ৫৪ মিলিয়ন বা ৫ কোটি ৪০ লাখ ডলারের নতুন পোশাক উৎপাদনের কার্যাদেশ পেয়েছে। এর কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশের পোশাক খাতে অস্থিরতা তৈরি হওয়ায় এসব কাজ তাদের কাছে চলে এসেছে। পার্শ্ববর্তী এলাকার এক পোশাক উৎপাদনকারী গোষ্ঠী বলেছে, আগস্টে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড জারার কাছ থেকে তারা ১৫ শতাংশ বেশি কার্যাদেশ পেয়েছে।
এমবি
দেশের পোশাক খাতে বড় ধরনের নাশকতার ছক আঁকা হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় দাবি-দাওয়া বা তুচ্ছ ইস্যুকে সামনে এনে শ্রমিকদের উসকে দিতে কাজ করছে একটি মহল। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে একের পর এক কারখানায় শ্রমিক উসকে দেওয়ার নেপথ্যে কাজ করছে পোশাক খাতের অন্তত দেড় শতাধিক ট্রেড ইউনিয়ন।
ঢাকার আশুলিয়া, গাজীপুরের কোনাবাড়ী, শ্রীপুর ও নারায়ণগঞ্জকেন্দ্রিক এসব ট্রেড ইউনিয়নের কার্যক্রমকে পোশাকশিল্প ধ্বংসের চক্রান্ত হিসেবে দেখছেন উদ্যোক্তারা। তারা দাবি করছেন, সরকারের নমনীয় নীতির কারণে বিভিন্ন নামের নিবন্ধনহীন শ্রমিক ইউনিয়নগুলোকে অর্থের জোগান দিচ্ছেন আওয়ামী সমর্থক ঝুট ব্যবসায়ী ও বড় কয়েকটি গ্রুপের মালিকরা।
যেসব গ্রুপের মালিক গার্মেন্টস খাতে অস্থিরতার সুযোগ খুঁজছেন, তাদের কারখানাগুলো আগেই রুগ্ণ অবস্থায় ছিল। আবার কোনো কোনোটি বিগত সরকারের আমলেই ব্যবসা গুটিয়ে অর্থ পাচার করে ব্যাংকের ঋণ খেলাপি হয়ে আছে। মূলত রাজনৈতিক ফায়দা নিতেই এসব শ্রমিক সংগঠনের পেছনে অর্থ ঢালছেন জেলে থাকা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি।
পাঁচ মাসে ১৭০ কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত আগস্ট থেকে জানুয়ারির ২২ তারিখ পর্যন্ত পাঁচ মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ১৭০টি পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা যায়। শ্রমিকদের উসকে দিয়ে আন্দোলনের পর বন্ধ করে দেওয়া হয় ৩৩টি কারখানা। এসব কারখানার ৩১ হাজার ৩৫০ জন শ্রমিক এখন বেকার।
বিজিএমইএর তথ্য মতে, ঢাকার আশুলিয়া, গাজীপুরের কোনাবাড়ী, সাভার, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের কয়েকটি অঞ্চল এখন চরম অনিরাপদ। বিজিএমইএ নিয়মিত তাদের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিক অসন্তোষ বা কারখানার অন্য বিষয়গুলো মনিটরিং করে থাকে। এই মনিটরিং সেলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমার দেশকে বলেন, ৫ আগস্টের পর যেসব কারখানায় নিয়মিত শ্রমিক অসন্তোষ চলছে এগুলোর সবই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে।
তিনি কয়েকটি কারখানার নাম উল্লেখ করেন বলেন, যেমন হা-মীম গ্রুপ, মণ্ডল গ্রুপ, ন্যাচারাল ডেনিম, নাসা গ্রুপ, এনভয় গ্রুপ, ডেকো গ্রুপ, শারমিন গ্রুপ, স্টার্লিং গ্রুপের পোশাক কারখানাগুলোতেই শ্রমিক অসন্তোষ বেশি বলে জানান। তবে এসব কারখানার শ্রমিকদের দাবি-দাওয়ার বিষয়গুলো খুবই তুচ্ছ।
কী দাবি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ?
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) প্রেসিডেন্ট ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ আমার দেশকে জানান, ‘৫ আগস্টের পর পোশাক খাতে এক ধরনের উসকানিমূলক শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। এর কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ঢাকার আশুলিয়া। এখানে ১৩০টি শ্রমিক ইউনিয়ন সক্রিয়। এগুলোর একটিও বৈধ নয়। অথচ আমরা লক্ষ করছি এসব অবৈধ শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গেই সরকার সব সময় বৈঠক করে, আলোচনা করে এবং সিদ্ধান্ত নেয়।’
বিসিআই প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, অন্যায্য দাবি নিয়ে যখন আন্দোলন হয় তখন বুঝতে হবে এর প্রধান কারণ কী। কোন ধরনের অন্যায্য দাব করছেন শ্রমিকরা- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বর্তমান দাবিগুলোর অন্যতম হচ্ছে ৫০ ভাগ পুরুষ শ্রমিক আর ৫০ ভাগ নারী শ্রমিক হতে হবে প্রতিটি পোশাক কারখানায়। সেই সঙ্গে আরো অযৌক্তিক দাবি হচ্ছে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারকে বের করে দিতে হবে, প্রোডাকশন ম্যানেজার পছন্দ নয়- তাকে বের করে দিতে, কারখানার জিএম বদলাতে হবে। এমন আজগুবি দাবি। আর এসব দাবিকে কেন্দ্র করেই আন্দোলন চলছে।’
আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ৫ আগস্টের পর যতগুলো কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ হয়েছে, সবগুলোর শুরু দু-একটি অনৈতিক দাবির মাধ্যমে। পরে এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন ইস্যু। বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে পোশাক খাতে আন্দোলনের আরেকটি কারণ যোগ হয়েছে ঝুট ব্যবসা।
তিনি জানান, আশুলিয়ায় অবৈধ ট্রেড ইউনিয়নগুলোর নিয়ন্ত্রক ঝুট ব্যবসায়ীরা। তাদের বেশির ভাগই সাবেক সরকারের অনুসারী গুণ্ডাবাহিনীর সদস্য। সরকার পরিবর্তন হলেও এসব ঝুট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরাই শ্রমিকদের আর্থিকভাবে সহায়তা দিয়ে থাকে।
নিরীহ শ্রমিকদের মাঠে নামানোর অভিযোগ বিকেএমইএর
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, বেশ কিছু শ্রমিক, বিশেষত রাজনৈতিক দলের সমর্থকরা, শ্রমিকদের সংগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য তাদের আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করছে। তিনি বলেন, শ্রমিকদের অধিকাংশই নিরীহ এবং তারা সাধারণত কাজের মধ্যে থাকেন। তবে, কিছু শ্রমিক নেতার প্ররোচনায় তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। এ ক্ষেত্রে সরকারের উচিত শক্ত হাতে আইন প্রয়োগ করা এবং এ ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল আমার দেশকে বলেন, একাধিক কারখানার মালিক আর্থিক সংকট ও অন্যান্য কারণে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তবে, তিনি মনে করেন, কোনো একটি বা দুটি কারখানার সমস্যা যাতে পুরো শিল্পের ওপর প্রভাব না ফেলতে পারে, সেজন্য সক্রিয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
রাস্তায় বেক্সিমকোর শ্রমিক, সন্দেহের তীর সালমানের দিকে
গত ১৫ ডিসেম্বর বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬টি কারখানা লে অফ বা বন্ধ ঘোষণা করেছে বেক্সিমকো গ্রুপ। শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এই গ্রুপের মালিক। বিভিন্ন মামলায় আসামি হয়ে বর্তমানে জেলে আছেন তিনি। কারাগারে আটক আছেন হাসিনা আমলের মন্ত্রী ও শ্রমিক নেতা শাজাহান খান।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, কারাগারে আটক হওয়ার পর থেকে প্রায় এক মাস একই কক্ষে ছিলেন সালমান, শাজাহান খান ও আরেকটি বড় পোশাকশিল্প গ্রুপের মালিক। মূলত কারাগার থেকেই তারা শ্রমিক আন্দোলনের ছক কষেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সালমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের বন্ধ হওয়া কারখানাগুলোতে কাজ করেন প্রায় ৩০ হাজার পোশাকশ্রমিক। অন্যদিকে সালমান-শাজাহান খানের সঙ্গে জেলে ‘রুমমেট’ ওই সাবেক ব্যবসায়ী নেতার কারখানার শ্রমিক সংখ্যাও প্রায় ১২ হাজার।
গত বুধবার বেক্সিমকোর শ্রমিকদের বিক্ষোভের একপর্যায়ে গাজীপুরের চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। একটি মালভর্তি ট্রাক ও তিনটি বাসেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। তেঁতুইবাড়িতে ‘গ্রামীণ ফেব্রিকস’ নামে একটি কারখানার পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে তিন সংবাদকর্মী আহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই জানিয়েছেন শ্রমিকদের আন্দোলনে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীদেরও দেখা গেছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানতে পারেনি আমার দেশ।
কী বলছে সরকার?
সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষ ও বেক্সিমকো গ্রুপের কারখানাগুলোর শ্রমিকদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিয়ে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি বৈঠক করেছে। বৈঠক শেষে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বেক্সিমকোর কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিক ও দেশবাসীর অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে মোট ৩২টি কারখানার মধ্যে ১৬টির কোনো অস্তিত্ব নেই। এই ১৬ কোম্পানির বিপরীতেই ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। আর ১২টি কারখানা লে অফ করা হয়েছে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে, সরকারের সিদ্ধান্তে নয়।’
শ্রমিক নেতারা যা বলছেন
শ্রমিক নেতাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী কারা, কেন একের পর এক কারখানায় অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে তাদের মন্তব্য, সরকারের ‘নমনীয়’ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে একটি মহল।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, সংকট নিরসনে নেওয়া পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে শ্রমিকদের যথাযথ অবহিত করায় ঘাটতি আছে। একই সঙ্গে পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে কোনো একটি পক্ষ চাচ্ছে না যে পরিস্থিতি শান্ত হোক। এতে রাজনৈতিক মোটিভও থাকতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
অন্যদিকে এতদিন গাজীপুর আশুলিয়া এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভ বা এ ধরনের পরিস্থিতিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ মূল ভূমিকা রাখত। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর পুলিশের পুরো কাঠামোই ভেঙে পড়ায় গত এক মাস ধরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না বলেও জানান শ্রমিক নেতারা।
আন্দোলন বাংলাদেশে, লাভ ভারতের
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের অস্থিরতা নিয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য ইকোনমিস্ট। তাদের খবরে বলা হয়, ১৯৭৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার এক কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে প্রথম রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা স্থাপন করে বাংলাদেশ। এরপর পোশাক রপ্তানি বাংলাদেশের অর্থনীতির শক্তিকেন্দ্রে পরিণত হয়। দেশটির তৈরি পোশাক খাতে এখন ৪০ লাখের বেশি মানুষ কাজ করছে। দেশের জিডিপিতে এই খাতের অবদান ১০ শতাংশ। গত বছর বাংলাদেশ ৫৪ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এ ক্ষেত্রে চীনের পরেই তার অবস্থান।
সম্প্রতি বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে অস্থিরতা চলছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন—এই সময়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। তবে ওই সরকারের পতনের মাসাধিককাল পরেও অস্থিরতা থামেনি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বলীয়ান হয়ে পোশাক খাতের শ্রমিকসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী নতুন সরকারের কাছে দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছে। সেই সঙ্গে চলছে বিদ্যুৎবিভ্রাট। চলতি বছর গ্যাস সংকটের কারণে এমনিতেই শিল্পোৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ইকোনমিস্ট মনে করছে, সামগ্রিকভাবে চলতি বছর পোশাক রপ্তানি ১০ থেকে ২০ শতাংশ কমবে।
এই পরিস্থিতিতে অন্যান্য দেশ সেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে ভারতের কথা বলা হয়েছে। সুতা উৎপাদনে এই দেশটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হলেও তৈরি পোশাক উৎপাদনে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে। অর্থমূল্যের দিক থেকে ২০২৩ সালে ভারত বাংলাদেশের এক-চতুর্থাংশ পরিমাণ পোশাক রপ্তানি করেছে।
তবে সম্প্রতি ভারতের তামিলনাড়ুর ত্রিপুর শহরভিত্তিক পোশাক উৎপাদনকারীরা ৫৪ মিলিয়ন বা ৫ কোটি ৪০ লাখ ডলারের নতুন পোশাক উৎপাদনের কার্যাদেশ পেয়েছে। এর কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশের পোশাক খাতে অস্থিরতা তৈরি হওয়ায় এসব কাজ তাদের কাছে চলে এসেছে। পার্শ্ববর্তী এলাকার এক পোশাক উৎপাদনকারী গোষ্ঠী বলেছে, আগস্টে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড জারার কাছ থেকে তারা ১৫ শতাংশ বেশি কার্যাদেশ পেয়েছে।
এমবি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে বিভিন্ন মেরূকরণ। এ নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসবে, কোন দল কার সঙ্গে সমঝোতা বা জোট করে ভোট করবেÑএসব বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তৎপরতাও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেনীলের দেশখ্যাত নীলফামারী দীর্ঘদিন শোষণ করেছিল ইংরেজরা। তাদের স্থানীয় নিপীড়ক নীলকরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন উত্তরের এই জেলার চাষিরা। ২০০ বছর পর সেই নিষ্ঠুর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেন আওয়ামী ‘কসাই’খ্যাত আসাদুজ্জামান নূর।
৮ ঘণ্টা আগেআগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় জেলা প্রশাসকদেরই (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ হিসেবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার দুজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন ডিসিসহ ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
১ দিন আগেবছরের প্রায় ১০ মাস পার হলেও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ শুরু হয়নি। এমনকি পাঠ্যবইয়ের কনটেন্টও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি; এখনো চলছে পরিবর্তন-পরিমার্জনের কাজ। এছাড়া ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনও মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে