ইমদাদ হোসাইন
স্বল্পোন্নত থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে এসেছে। গত ১৫ বছর এমন ফাঁকা বুলি শোনানো হয়েছিল। কিন্তু প্রকৃত চিত্র তার উল্টো; দীর্ঘদিনের উচ্চ মূল্যস্ফীতির মূল্য দিতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষকে।
প্রায় অর্ধেক নাগরিক নিজের আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। পরিবারগুলোর গড় সদস্যসংখ্যা চারজন। এর মধ্যে ৮২ শতাংশ পরিবারই পুরুষের আয়ের ওপর নির্ভরশীল। নতুন বাংলাদেশের সরকারি হিসাবে উন্মোচন হয়েছে এ বাস্তবতা।
সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সিটিজেন পারসেপশন সার্ভেতে (সিপিএস-২০২৫) এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, তিন বছরের বেশি সময় উচ্চ মূল্যস্ফীতির ধকলে থাকায় ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবার বলেছে, মাসের নির্ধারিত আয়ে তাদের সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।
জরিপে দেশের পরিবারগুলোর বিভিন্ন চরিত্র তুলে আনা হয়েছে। এতে দেখা যায়, ২০২৫ সালে এসে পরিবারগুলোর গড় সদস্য চারজন। তবে শহরের তুলনায় গ্রামে সদস্যসংখ্যা বেশি। সেখানে এক পরিবারের গড় সদস্য ৪ দশমিক শূন্য ৫, অন্যদিকে শহরে চারজনের নিচে তথা ৩ দশমিক ৯।
দেশে পুরুষের ওপর নির্ভরশীল পরিবারের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। ৮১ দশমিক ৯৭ শতাংশ পরিবারই পুরুষ শাসিত বা পুরুষের আয়ের ওপর নির্ভরশীল। আর ১৮ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ পরিবার নারী শাসিত বা নারীর আয়ের ওপর নির্ভরশীল।
জরিপে অংশগ্রহণ করা ২৮ দশমিক ৮১ শতাংশ পরিবার জানায়, তারা নিজেদের আয়ে সংসার চালাতে কিছু জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছে। ১৪ দশমিক ০৪ শতাংশ সংসার চালাতে নানা ধরনের জটিলতায় ভুগছে। ৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ জানায়, তারা বড় ধরনের জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে।
জরিপের প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশের নাগরিকদের অর্ধেকই নিজের আয়ে চলতে পারছে না। এতে আয়বৈষম্য ও ভোগবৈষম্যও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে।
সিপিএস জরিপের তথ্যানুসারে, আয়ে সংসার চালাতে কোনো সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন নাÑএমন জনগোষ্ঠীও কম নয়। ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ মত দিয়েছে, তাদের আয়ে সংসার খুব ভালোভাবেই চালাতে পারছেন। আবার ১৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ বলছে, খুব সহজে না হলেও তাদের খুব বেশি সমস্যা হচ্ছে না। ২৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ জানিয়েছে, তাদের আয় দিয়ে সংসার চালাতে মোটামুটিভাবে চালিয়ে নিতে পারে। জরিপে শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশ এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেয়নি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত খানা আয়-ব্যয় জরিপ ২০২২-এর তথ্যানুযায়ী, দেশের আয়বৈষম্য বেড়েছে। এই সূচক দশমিক ৪৯ শতাংশে অবস্থান করছে। দশমিক ৫ শতাংশ হলে সেটিকে চরম আয় বৈষম্য হিসেবে ধরা হয়।
একই জরিপের তথ্যে বলা হয়েছে, দেশের মানুষের গড় আয় ৩২ হাজার ৪২২ টাকা আর গড় ব্যয় ৩০ হাজার ৬০৩ টাকা। অর্থাৎ গড় আয়ের সঙ্গে গড় ব্যয়ের ব্যবধানে এক হাজার ৮১৯ টাকা। ব্যয়ের মধ্যে মানুষের খাবারের জন্যই খরচ করে ১৪ হাজার তিন টাকা।
বাংলাদেশে গত তিন বছরের বেশি সময় গড় মজুরির চেয়ে গড় আয় কম। অর্থাৎ আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। বিবিএসের ভোক্তা মূল্যসূচক বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে। মূল্যস্ফীতির তুলনায় গড় মজুরির হার কম হলে দেশের অর্থনীতির খারাপ পরিস্থিতি নির্দেশ করে।
বিবিএসের তথ্য বলছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ, একই সময়ে গড় মজুরি ছিল ৫ দশমিক ৯২। অর্থাৎ এ মাসে গড় আয়ের তুলনায় গড় ব্যয় ছিল কিছুটা কম। মুখোমুখি হলেও এটি ইতিবাচক হিসেবেই ধরা যায়। কিন্তু ফেব্রুয়ারির মূল্যস্ফীতি গড় মজুরিকে ছাড়িয়ে যায়। ফেব্রুয়ারিতে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ, কিন্তু গড় মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক শূন্য ৩। সর্বশেষ মে মাসের মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, গড় মজুরি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ২১ শতাংশ। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে মজুরির ব্যবধান এখনো শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ।
মজুরির চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি হলে কী ঘটে?
মজুরির চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি হলে অর্থনীতির পরিভাষায় নাগরিক জীবনে তখন কী ঘটেÑএমন প্রশ্নের জবাবে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান আমার দেশকে বলেন, মজুরি মূল্যস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে না। এর অর্থ হলো আমাদের যারা মজুরির ওপর নির্ভরশীল তাদের ক্রয়ক্ষমতার অবনমন হয়েছে। যেটি ঘটেছে গত ৪০ মাস।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এমনিতেই আয়বৈষম্য, ভোগবৈষম্য, সম্পদ বৈষম্য ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এ কারণে যারা দিন এনে দিন খায় তাদের অবস্থার অবনতি ঘটেছে, ক্রয়ক্ষমতার অবনতি ঘটেছে। এটা অন্তর্বর্তীমূলক অর্থনীতিতে অবশ্যই কাম্য নয়।
ড. মোস্তাফিজুর আরো বলেন, বিবিএসের জরিপে সংসার চালানো নিয়ে নাগরিকরা যে তথ্য দিয়েছেন, তার পেছনে রয়েছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। এ কারণে তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া সাধারণভাবে আমাদের দেশে যে ধরনের আয়, তাতে সাধারণ সময়েও অনেক নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা তাদের সংসারের খরচ, ছেলেমেয়ের চিকিৎসা, পড়াশোনা চালাতে কষ্ট হয়। আবার ২০২২ সালের পর এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মূল্যস্ফীতি, যা তিন বছরে ৩২ শতাংশের মতো বেড়েছে। বিবিএসের এ জরিপ বাস্তবতারই প্রতিফলন।
মানুষের শোভন আয় বাড়াতে সরকারের করণীয় কী হতে পারেÑ এমন প্রশ্নের জবাবে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, সরকারের করণীয় অনেক। অনেক বেশি শোভন কর্মসংস্থান তৈরি করা। যারা জরিপে মত দিয়েছে, তাদের অনেকের চাকরি নেই। তারা যে আয় করে সেটি শোভন আয় নয়, তার ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ। সরকারের কয়েক ধরনের কাজ করতে হবে। যারা খুব বেশি চাপের মধ্যে রয়েছে, তাদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা শক্তিশালী করা, এর ভিত্তি ও প্রাপ্তি স্থায়িত্ব বাড়ানো।
সাধারণ মানুষের খরচ কমানোর আরেকটি উপায় আছে উল্লেখ করে ড. মোস্তাফিজুর বলেন, সরকারের যেসব জনসেবা আছে যেমনÑস্বাস্থ্যসেবা, অন্যান্য সেবা যদি আমরা বাড়াতে পারি, তাহলে মানুষের নিজের পকেটের কিছু খরচ কমবে, তাদের চাপও কমবে। দেশের ৭০ শতাংশ স্বাস্থ্য খরচ পকেটের বাইরে। এটি দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ। এর অর্থ হলোÑ সরকারি স্বাস্থ্যসেবা থেকে ব্যয় নির্বাহ করে গড়ে ৩০ শতাংশ, বাকি ৭০ শতাংশ নিজের থেকে দিতে হয়। এখন মানুষের খরচ যদি কমানো যেত, সরকারের খরচ যদি বাড়ানো যেত, তাহলে তার চাপ কিছুটা কমত।
স্বল্পোন্নত থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে এসেছে। গত ১৫ বছর এমন ফাঁকা বুলি শোনানো হয়েছিল। কিন্তু প্রকৃত চিত্র তার উল্টো; দীর্ঘদিনের উচ্চ মূল্যস্ফীতির মূল্য দিতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষকে।
প্রায় অর্ধেক নাগরিক নিজের আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। পরিবারগুলোর গড় সদস্যসংখ্যা চারজন। এর মধ্যে ৮২ শতাংশ পরিবারই পুরুষের আয়ের ওপর নির্ভরশীল। নতুন বাংলাদেশের সরকারি হিসাবে উন্মোচন হয়েছে এ বাস্তবতা।
সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সিটিজেন পারসেপশন সার্ভেতে (সিপিএস-২০২৫) এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, তিন বছরের বেশি সময় উচ্চ মূল্যস্ফীতির ধকলে থাকায় ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবার বলেছে, মাসের নির্ধারিত আয়ে তাদের সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।
জরিপে দেশের পরিবারগুলোর বিভিন্ন চরিত্র তুলে আনা হয়েছে। এতে দেখা যায়, ২০২৫ সালে এসে পরিবারগুলোর গড় সদস্য চারজন। তবে শহরের তুলনায় গ্রামে সদস্যসংখ্যা বেশি। সেখানে এক পরিবারের গড় সদস্য ৪ দশমিক শূন্য ৫, অন্যদিকে শহরে চারজনের নিচে তথা ৩ দশমিক ৯।
দেশে পুরুষের ওপর নির্ভরশীল পরিবারের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। ৮১ দশমিক ৯৭ শতাংশ পরিবারই পুরুষ শাসিত বা পুরুষের আয়ের ওপর নির্ভরশীল। আর ১৮ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ পরিবার নারী শাসিত বা নারীর আয়ের ওপর নির্ভরশীল।
জরিপে অংশগ্রহণ করা ২৮ দশমিক ৮১ শতাংশ পরিবার জানায়, তারা নিজেদের আয়ে সংসার চালাতে কিছু জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছে। ১৪ দশমিক ০৪ শতাংশ সংসার চালাতে নানা ধরনের জটিলতায় ভুগছে। ৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ জানায়, তারা বড় ধরনের জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে।
জরিপের প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশের নাগরিকদের অর্ধেকই নিজের আয়ে চলতে পারছে না। এতে আয়বৈষম্য ও ভোগবৈষম্যও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে।
সিপিএস জরিপের তথ্যানুসারে, আয়ে সংসার চালাতে কোনো সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন নাÑএমন জনগোষ্ঠীও কম নয়। ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ মত দিয়েছে, তাদের আয়ে সংসার খুব ভালোভাবেই চালাতে পারছেন। আবার ১৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ বলছে, খুব সহজে না হলেও তাদের খুব বেশি সমস্যা হচ্ছে না। ২৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ জানিয়েছে, তাদের আয় দিয়ে সংসার চালাতে মোটামুটিভাবে চালিয়ে নিতে পারে। জরিপে শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশ এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেয়নি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত খানা আয়-ব্যয় জরিপ ২০২২-এর তথ্যানুযায়ী, দেশের আয়বৈষম্য বেড়েছে। এই সূচক দশমিক ৪৯ শতাংশে অবস্থান করছে। দশমিক ৫ শতাংশ হলে সেটিকে চরম আয় বৈষম্য হিসেবে ধরা হয়।
একই জরিপের তথ্যে বলা হয়েছে, দেশের মানুষের গড় আয় ৩২ হাজার ৪২২ টাকা আর গড় ব্যয় ৩০ হাজার ৬০৩ টাকা। অর্থাৎ গড় আয়ের সঙ্গে গড় ব্যয়ের ব্যবধানে এক হাজার ৮১৯ টাকা। ব্যয়ের মধ্যে মানুষের খাবারের জন্যই খরচ করে ১৪ হাজার তিন টাকা।
বাংলাদেশে গত তিন বছরের বেশি সময় গড় মজুরির চেয়ে গড় আয় কম। অর্থাৎ আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। বিবিএসের ভোক্তা মূল্যসূচক বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে। মূল্যস্ফীতির তুলনায় গড় মজুরির হার কম হলে দেশের অর্থনীতির খারাপ পরিস্থিতি নির্দেশ করে।
বিবিএসের তথ্য বলছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ, একই সময়ে গড় মজুরি ছিল ৫ দশমিক ৯২। অর্থাৎ এ মাসে গড় আয়ের তুলনায় গড় ব্যয় ছিল কিছুটা কম। মুখোমুখি হলেও এটি ইতিবাচক হিসেবেই ধরা যায়। কিন্তু ফেব্রুয়ারির মূল্যস্ফীতি গড় মজুরিকে ছাড়িয়ে যায়। ফেব্রুয়ারিতে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ, কিন্তু গড় মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক শূন্য ৩। সর্বশেষ মে মাসের মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, গড় মজুরি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ২১ শতাংশ। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে মজুরির ব্যবধান এখনো শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ।
মজুরির চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি হলে কী ঘটে?
মজুরির চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি হলে অর্থনীতির পরিভাষায় নাগরিক জীবনে তখন কী ঘটেÑএমন প্রশ্নের জবাবে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান আমার দেশকে বলেন, মজুরি মূল্যস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে না। এর অর্থ হলো আমাদের যারা মজুরির ওপর নির্ভরশীল তাদের ক্রয়ক্ষমতার অবনমন হয়েছে। যেটি ঘটেছে গত ৪০ মাস।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এমনিতেই আয়বৈষম্য, ভোগবৈষম্য, সম্পদ বৈষম্য ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এ কারণে যারা দিন এনে দিন খায় তাদের অবস্থার অবনতি ঘটেছে, ক্রয়ক্ষমতার অবনতি ঘটেছে। এটা অন্তর্বর্তীমূলক অর্থনীতিতে অবশ্যই কাম্য নয়।
ড. মোস্তাফিজুর আরো বলেন, বিবিএসের জরিপে সংসার চালানো নিয়ে নাগরিকরা যে তথ্য দিয়েছেন, তার পেছনে রয়েছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। এ কারণে তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া সাধারণভাবে আমাদের দেশে যে ধরনের আয়, তাতে সাধারণ সময়েও অনেক নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা তাদের সংসারের খরচ, ছেলেমেয়ের চিকিৎসা, পড়াশোনা চালাতে কষ্ট হয়। আবার ২০২২ সালের পর এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মূল্যস্ফীতি, যা তিন বছরে ৩২ শতাংশের মতো বেড়েছে। বিবিএসের এ জরিপ বাস্তবতারই প্রতিফলন।
মানুষের শোভন আয় বাড়াতে সরকারের করণীয় কী হতে পারেÑ এমন প্রশ্নের জবাবে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, সরকারের করণীয় অনেক। অনেক বেশি শোভন কর্মসংস্থান তৈরি করা। যারা জরিপে মত দিয়েছে, তাদের অনেকের চাকরি নেই। তারা যে আয় করে সেটি শোভন আয় নয়, তার ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ। সরকারের কয়েক ধরনের কাজ করতে হবে। যারা খুব বেশি চাপের মধ্যে রয়েছে, তাদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা শক্তিশালী করা, এর ভিত্তি ও প্রাপ্তি স্থায়িত্ব বাড়ানো।
সাধারণ মানুষের খরচ কমানোর আরেকটি উপায় আছে উল্লেখ করে ড. মোস্তাফিজুর বলেন, সরকারের যেসব জনসেবা আছে যেমনÑস্বাস্থ্যসেবা, অন্যান্য সেবা যদি আমরা বাড়াতে পারি, তাহলে মানুষের নিজের পকেটের কিছু খরচ কমবে, তাদের চাপও কমবে। দেশের ৭০ শতাংশ স্বাস্থ্য খরচ পকেটের বাইরে। এটি দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ। এর অর্থ হলোÑ সরকারি স্বাস্থ্যসেবা থেকে ব্যয় নির্বাহ করে গড়ে ৩০ শতাংশ, বাকি ৭০ শতাংশ নিজের থেকে দিতে হয়। এখন মানুষের খরচ যদি কমানো যেত, সরকারের খরচ যদি বাড়ানো যেত, তাহলে তার চাপ কিছুটা কমত।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে বিভিন্ন মেরূকরণ। এ নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসবে, কোন দল কার সঙ্গে সমঝোতা বা জোট করে ভোট করবেÑএসব বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তৎপরতাও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেনীলের দেশখ্যাত নীলফামারী দীর্ঘদিন শোষণ করেছিল ইংরেজরা। তাদের স্থানীয় নিপীড়ক নীলকরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন উত্তরের এই জেলার চাষিরা। ২০০ বছর পর সেই নিষ্ঠুর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেন আওয়ামী ‘কসাই’খ্যাত আসাদুজ্জামান নূর।
১১ ঘণ্টা আগেআগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় জেলা প্রশাসকদেরই (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ হিসেবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার দুজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন ডিসিসহ ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
১ দিন আগেবছরের প্রায় ১০ মাস পার হলেও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ শুরু হয়নি। এমনকি পাঠ্যবইয়ের কনটেন্টও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি; এখনো চলছে পরিবর্তন-পরিমার্জনের কাজ। এছাড়া ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনও মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে