আজাদুল আদনান
পঞ্চাশ দিনের আরওয়া বিনতে বিল্লাল। জন্মের পর প্রথম টিকা পেলেও দ্বিতীয় দফায় টিকা নিতে গিয়ে দুই জেলা ঘুরেও মেলেনি। আরওয়া লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নের বাহরাইন প্রবাসী বিল্লাল হোসেনের একমাত্র মেয়ে। আরওয়ার চাচা মো. নাঈম কামাল আমার দেশকে জানান, ‘আরওয়ার জন্ম হয় চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার একটি হাসপাতালে। প্রথম টিকাও নেয় সেখানে। কিন্তু দ্বিতীয়বার টিকা দুই জেলার এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল, এমনকি কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়েও পাওয়া যায়নি। টিকা না আসায় তারা দিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।’
শিশুদের টিকা সংকটের এই চিত্র কেবল লক্ষ্মীপুর নয়, রাজধানীসহ দেশের প্রায় প্রতিটি শহর ও গ্রামের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় প্রতি বছর ৩৮ লাখ ডোজ টিকা দেয় সরকার। এসব টিকার অর্থায়নের বড় অংশ আসে বিশ্বব্যাংক ও ইউনিসেফসহ আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার মাধ্যমে। সরকারের অপারেশন প্লানের (ওপি) আওতায় এগুলো ব্যবহার করা হয়। কিন্তু গত বছরের জুনে সেটি বন্ধ হয়ে গেলে নতুন করে ওপি চালু হয়নি, যার মারাত্মক প্রভাব পড়ে শিশুদের টিকাদানে। এরপর থেকেই দুই-একটি ছাড়া অধিকাংশ টিকা আসা বন্ধ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে স্থানীয় পর্যায়ে।
ইপিআইয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন করে ওপি চালু না হওয়ায় এখন সরকারের নিজস্ব খরচে টিকা কিনতে হবে। যেখানে প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। ইতোমধ্যে ছয় মাসের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা ছাড় করেছে সরকার। টিকা পেতে ইউনিসেফকে পাঠানোও হয়েছে। জানুয়ারির শেষের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।
ইপিআই সূত্রে জানা গেছে, সংক্রামক ব্যাধি থেকে শিশুদের সুরক্ষায় সরকারের ইপিআইয়ের আওতায় জন্মের পরপরই যক্ষ্মার জন্য বিসিজি ও মুখে খাওয়ার পোলিও টিকা (ওপিভি) দেওয়া হয়। জন্মের ৬, ১০ ও ১৮ সপ্তাহে নিউমোনিয়ার জন্য পিসিভি ও ডিপথেরিয়ার, হুপিংকাশি, টিটেনাস, হেপাটাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জার সম্মিলিত টিকা ‘পেনটা’ ইনজেকশন দেওয়া হয়। ১৪ সপ্তাহে দিতে হয় পোলিও ইনজেকশন। হাম ও রুবেলার টিকা (এমআর ইনজেকশন) দেওয়া হয় পূর্ণ নয় মাস ও ১৫ মাস বয়সে।
পাঁচ বছরের ওপির মাধ্যমে এসব টিকা দিতে হয়। নিম্ন আয়ের দেশে এসব টিকার অর্থের অধিকাংশই আসে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য দাতা সংস্থার মাধ্যমে। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত হওয়ায় এই সহযোগিতা থেকে আর পাচ্ছে না। ফলে প্রতি বছর এখন টিকার পেছনে ব্যয়ের ৮০ ভাগই যাবে সরকারের নিজস্ব ভাণ্ডার থেকে। যেখানে পাঁচ বছরের জন্য প্রয়োজন হবে ৫ হাজার কোটি টাকা। এটি বন্ধ হওয়ায় মূলত গত বছরের জুন থেকে টিকা কেনা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ৪৬২ কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি ছয় মাসের জন্য একটি চালান আসার কথা রয়েছে।
তবে টিকা পেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অভিভাবকদের। সময়মতো টিকা দিতে না পারায় শিশুদের ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে উৎকণ্ঠায় অভিভাবকরা। রাজধানীর পশ্চিম রামপুরার বাসিন্দা ইকবাল মাহমুদ। তিন মাসের আরিয়ানকে টিকা দিতে একাধিকবার কেন্দ্রে নিয়ে গেলেও পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
টিকা সংকটের কথা জানিয়ে ওই কেন্দ্রের টিকাদানকারী তসলিমা আক্তার বলেন, ‘কয়েকটি টিকা পেতে সমস্যা হচ্ছে। তবে আস্তে আস্তে সংকট কেটে যাচ্ছে।’
অবস্থা সবচেয়ে বেশি শোচনীয় ঢাকার বাইরের জেলা ও উপজেলাগুলোতে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত বছরের নভেম্বর থেকে এই সংকট চলছে। মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, সময়মতো ভ্যাকসিন সরবরাহ না পেলে ভয়াবহতা নেমে আসতে পারে স্বাস্থ্য খাতে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি ভ্যাকসিন ও টিকার চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, যক্ষ্মা রোগের জন্য বিসিজি টিকার চাহিদা প্রায় ১ লাখ হলেও মজুত রয়েছে মাত্র ৮৮২টি। একইভাবে বিসিজি ডাইলুয়েন্ট পাউডারের চাহিদার ১ ভাগ, পোলিওর জন্য আইপিভি মজুত এক ভাগেরও কম। নিউমোনিয়ার জন্য পেন্টা ভ্যালেন্টের চাহিদা এক লাখ ৫০ হাজার হলেও রয়েছে আড়াই হাজার। নিউমোনিয়ার জন্য পিসিভি চাহিদা ৮১ হাজার, সেখানে একটিও মজুত নেই। এ ছাড়া ওপিভি ড্রপারের চাহিদা পৌনে ১ লাখ হলেও মজুত এক হাজারেরও কম। এমআরের চাহিদা রয়েছে ৬০ হাজার, কিন্তু আছে দেড় হাজারের মতো।
মাঠে কাজ করা স্বাস্থ্যকর্মী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ভ্যাকসিন ও টিকার জন্য প্রতিদিন শত শত রোগী স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ভিড় করছেন। কিন্তু মজুত না থাকায় সেবা দেওয়া যাচ্ছে না।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই সুপার মো. এহেতেশামুল হক বলেন, ‘উপজেলা ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ভ্যাকসিন ও টিকার জন্য কর্মীরা আসছেন। কিন্তু সংকট প্রকট হওয়ায় সরবরাহ করা যাচ্ছে না।’
আমার দেশ-এর প্রতিনিধিদের প্রাপ্ত খবরে একই চিত্র পাওয়া গেছে, হবিগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, কুমিল্লা, কুড়িগ্রামেও।
জানতে চাইলে ইপিআইয়ের লাইন ডিরেক্টর ডা. এস এম আব্দুল্লাহ আল মুরাদ আমার দেশকে বলেন, ‘প্রতি বছর ৩৮ লাখ টিকা দিতে হয়। অর্থায়ন হয় ওপির মাধ্যমে। কিন্তু সেটি গত বছরের জুনে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এরপর নতুন ওপি পাস না হওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়। ফলে রাজস্বই এখন ভরসা। সব জটিলতা কাটিয়ে সরকারের কাছে বরাদ্দ চাইলে সে অনুযায়ী দিয়েছে। আমরা ছয় মাসের জন্য সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা ইউনিসেফকে পাঠিয়েছি। আশা করি জানুয়ারির শেষের দিকে টিকা স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’
এদিকে ওপি বন্ধ হওয়ায় পিছিয়েছে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনও। প্রতি বছরের শুরু ও শেষের দিকে এই কর্মসূচি হলেও এবার তা হয়নি। ২০২৪ সালের শুরুতে হলেও ডিসেম্বরে আরেকটি হওয়ার কথা থাকলেও অর্থ সংকটে সেটি বার বার পিছিয়েছে। নতুন করে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি করার কথা ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে সেটিও নির্ভর করছে অর্থপ্রাপ্তির ওপর।
জানতে চাইলে জাতীয় পুষ্টিসেবার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. আনজুমান আরা সুলতানা আমার দেশকে বলেন, ‘টাকা সংকটে ডিসেম্বরে হওয়ার কথা থাকলেও সেটি পেছানো হয়। অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয় চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সে অনুযায়ী খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হতে পারে।’
সম্পাদনা: ইসমাঈল
পঞ্চাশ দিনের আরওয়া বিনতে বিল্লাল। জন্মের পর প্রথম টিকা পেলেও দ্বিতীয় দফায় টিকা নিতে গিয়ে দুই জেলা ঘুরেও মেলেনি। আরওয়া লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নের বাহরাইন প্রবাসী বিল্লাল হোসেনের একমাত্র মেয়ে। আরওয়ার চাচা মো. নাঈম কামাল আমার দেশকে জানান, ‘আরওয়ার জন্ম হয় চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার একটি হাসপাতালে। প্রথম টিকাও নেয় সেখানে। কিন্তু দ্বিতীয়বার টিকা দুই জেলার এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল, এমনকি কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়েও পাওয়া যায়নি। টিকা না আসায় তারা দিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।’
শিশুদের টিকা সংকটের এই চিত্র কেবল লক্ষ্মীপুর নয়, রাজধানীসহ দেশের প্রায় প্রতিটি শহর ও গ্রামের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় প্রতি বছর ৩৮ লাখ ডোজ টিকা দেয় সরকার। এসব টিকার অর্থায়নের বড় অংশ আসে বিশ্বব্যাংক ও ইউনিসেফসহ আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার মাধ্যমে। সরকারের অপারেশন প্লানের (ওপি) আওতায় এগুলো ব্যবহার করা হয়। কিন্তু গত বছরের জুনে সেটি বন্ধ হয়ে গেলে নতুন করে ওপি চালু হয়নি, যার মারাত্মক প্রভাব পড়ে শিশুদের টিকাদানে। এরপর থেকেই দুই-একটি ছাড়া অধিকাংশ টিকা আসা বন্ধ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে স্থানীয় পর্যায়ে।
ইপিআইয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন করে ওপি চালু না হওয়ায় এখন সরকারের নিজস্ব খরচে টিকা কিনতে হবে। যেখানে প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। ইতোমধ্যে ছয় মাসের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা ছাড় করেছে সরকার। টিকা পেতে ইউনিসেফকে পাঠানোও হয়েছে। জানুয়ারির শেষের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।
ইপিআই সূত্রে জানা গেছে, সংক্রামক ব্যাধি থেকে শিশুদের সুরক্ষায় সরকারের ইপিআইয়ের আওতায় জন্মের পরপরই যক্ষ্মার জন্য বিসিজি ও মুখে খাওয়ার পোলিও টিকা (ওপিভি) দেওয়া হয়। জন্মের ৬, ১০ ও ১৮ সপ্তাহে নিউমোনিয়ার জন্য পিসিভি ও ডিপথেরিয়ার, হুপিংকাশি, টিটেনাস, হেপাটাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জার সম্মিলিত টিকা ‘পেনটা’ ইনজেকশন দেওয়া হয়। ১৪ সপ্তাহে দিতে হয় পোলিও ইনজেকশন। হাম ও রুবেলার টিকা (এমআর ইনজেকশন) দেওয়া হয় পূর্ণ নয় মাস ও ১৫ মাস বয়সে।
পাঁচ বছরের ওপির মাধ্যমে এসব টিকা দিতে হয়। নিম্ন আয়ের দেশে এসব টিকার অর্থের অধিকাংশই আসে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য দাতা সংস্থার মাধ্যমে। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত হওয়ায় এই সহযোগিতা থেকে আর পাচ্ছে না। ফলে প্রতি বছর এখন টিকার পেছনে ব্যয়ের ৮০ ভাগই যাবে সরকারের নিজস্ব ভাণ্ডার থেকে। যেখানে পাঁচ বছরের জন্য প্রয়োজন হবে ৫ হাজার কোটি টাকা। এটি বন্ধ হওয়ায় মূলত গত বছরের জুন থেকে টিকা কেনা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ৪৬২ কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি ছয় মাসের জন্য একটি চালান আসার কথা রয়েছে।
তবে টিকা পেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অভিভাবকদের। সময়মতো টিকা দিতে না পারায় শিশুদের ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে উৎকণ্ঠায় অভিভাবকরা। রাজধানীর পশ্চিম রামপুরার বাসিন্দা ইকবাল মাহমুদ। তিন মাসের আরিয়ানকে টিকা দিতে একাধিকবার কেন্দ্রে নিয়ে গেলেও পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
টিকা সংকটের কথা জানিয়ে ওই কেন্দ্রের টিকাদানকারী তসলিমা আক্তার বলেন, ‘কয়েকটি টিকা পেতে সমস্যা হচ্ছে। তবে আস্তে আস্তে সংকট কেটে যাচ্ছে।’
অবস্থা সবচেয়ে বেশি শোচনীয় ঢাকার বাইরের জেলা ও উপজেলাগুলোতে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত বছরের নভেম্বর থেকে এই সংকট চলছে। মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, সময়মতো ভ্যাকসিন সরবরাহ না পেলে ভয়াবহতা নেমে আসতে পারে স্বাস্থ্য খাতে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি ভ্যাকসিন ও টিকার চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, যক্ষ্মা রোগের জন্য বিসিজি টিকার চাহিদা প্রায় ১ লাখ হলেও মজুত রয়েছে মাত্র ৮৮২টি। একইভাবে বিসিজি ডাইলুয়েন্ট পাউডারের চাহিদার ১ ভাগ, পোলিওর জন্য আইপিভি মজুত এক ভাগেরও কম। নিউমোনিয়ার জন্য পেন্টা ভ্যালেন্টের চাহিদা এক লাখ ৫০ হাজার হলেও রয়েছে আড়াই হাজার। নিউমোনিয়ার জন্য পিসিভি চাহিদা ৮১ হাজার, সেখানে একটিও মজুত নেই। এ ছাড়া ওপিভি ড্রপারের চাহিদা পৌনে ১ লাখ হলেও মজুত এক হাজারেরও কম। এমআরের চাহিদা রয়েছে ৬০ হাজার, কিন্তু আছে দেড় হাজারের মতো।
মাঠে কাজ করা স্বাস্থ্যকর্মী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ভ্যাকসিন ও টিকার জন্য প্রতিদিন শত শত রোগী স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ভিড় করছেন। কিন্তু মজুত না থাকায় সেবা দেওয়া যাচ্ছে না।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই সুপার মো. এহেতেশামুল হক বলেন, ‘উপজেলা ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ভ্যাকসিন ও টিকার জন্য কর্মীরা আসছেন। কিন্তু সংকট প্রকট হওয়ায় সরবরাহ করা যাচ্ছে না।’
আমার দেশ-এর প্রতিনিধিদের প্রাপ্ত খবরে একই চিত্র পাওয়া গেছে, হবিগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, কুমিল্লা, কুড়িগ্রামেও।
জানতে চাইলে ইপিআইয়ের লাইন ডিরেক্টর ডা. এস এম আব্দুল্লাহ আল মুরাদ আমার দেশকে বলেন, ‘প্রতি বছর ৩৮ লাখ টিকা দিতে হয়। অর্থায়ন হয় ওপির মাধ্যমে। কিন্তু সেটি গত বছরের জুনে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এরপর নতুন ওপি পাস না হওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়। ফলে রাজস্বই এখন ভরসা। সব জটিলতা কাটিয়ে সরকারের কাছে বরাদ্দ চাইলে সে অনুযায়ী দিয়েছে। আমরা ছয় মাসের জন্য সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা ইউনিসেফকে পাঠিয়েছি। আশা করি জানুয়ারির শেষের দিকে টিকা স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’
এদিকে ওপি বন্ধ হওয়ায় পিছিয়েছে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনও। প্রতি বছরের শুরু ও শেষের দিকে এই কর্মসূচি হলেও এবার তা হয়নি। ২০২৪ সালের শুরুতে হলেও ডিসেম্বরে আরেকটি হওয়ার কথা থাকলেও অর্থ সংকটে সেটি বার বার পিছিয়েছে। নতুন করে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি করার কথা ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে সেটিও নির্ভর করছে অর্থপ্রাপ্তির ওপর।
জানতে চাইলে জাতীয় পুষ্টিসেবার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. আনজুমান আরা সুলতানা আমার দেশকে বলেন, ‘টাকা সংকটে ডিসেম্বরে হওয়ার কথা থাকলেও সেটি পেছানো হয়। অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয় চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সে অনুযায়ী খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হতে পারে।’
সম্পাদনা: ইসমাঈল
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে বিভিন্ন মেরূকরণ। এ নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসবে, কোন দল কার সঙ্গে সমঝোতা বা জোট করে ভোট করবেÑএসব বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তৎপরতাও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেনীলের দেশখ্যাত নীলফামারী দীর্ঘদিন শোষণ করেছিল ইংরেজরা। তাদের স্থানীয় নিপীড়ক নীলকরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন উত্তরের এই জেলার চাষিরা। ২০০ বছর পর সেই নিষ্ঠুর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেন আওয়ামী ‘কসাই’খ্যাত আসাদুজ্জামান নূর।
১১ ঘণ্টা আগেআগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় জেলা প্রশাসকদেরই (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ হিসেবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার দুজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন ডিসিসহ ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
১ দিন আগেবছরের প্রায় ১০ মাস পার হলেও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ শুরু হয়নি। এমনকি পাঠ্যবইয়ের কনটেন্টও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি; এখনো চলছে পরিবর্তন-পরিমার্জনের কাজ। এছাড়া ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনও মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে