আগুনের কোনো চিহ্ন নেই, তবুও ঘর পোড়ানোর মামলা

উপজেলা প্রতিনিধি, হাতিয়া (নোয়াখালী)
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৭

আগুন লাগানোর কোন চিহ্ন নেই ঘরে। দেওয়া হয় ঘর পোড়ানোর মামলা। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে অন্য জায়গার আগুনের চিত্র দেখিয়ে করা হয় এ মামলা। তাতে আসামি করা হয় জমি নিয়ে বিরোধ থাকা প্রতিপক্ষকে। ঘটনাস্থলে না গিয়ে সত্য বলে প্রতিবেদন দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা। এতে মিথ্যা মামলায় অনেকটা বিপদে ব্যবসায়ীর পরিবার।

বিজ্ঞাপন

এ দিকে মিথ্যা মামলা থেকে প্রতিবেশিকে বাঁচাতে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে।

জানা যায়, গত ১১ আগস্ট নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নে ঘর পোড়ানোর অভিযোগ এনে একটি মামলা করা হয় হাতিয়া ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মজিবুল হকের স্ত্রী শিরীন আকতার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় ব্যবসায়ী বেলাল উদ্দিনসহ ১০ জনকে এতে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে। ইতিমধ্যে কর্মকর্তা তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে ঘটনা সত্য বলে প্রতিবেদন দেন।

এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে সমালোচনার ঝড় উঠে। ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে প্রতিবাদ করেন এলাকাবাসী। তারা মানববন্ধন করে এই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত ও মিথ্যা মামলা থেকে ব্যবসায়ী বেলালসহ আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানান।

শনিবার বিকালে প্রায় দুই শতাধিক স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে নিঝুমদ্বীপ হরিণ বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এই বিষয়ে মামলার বাদী শিরিন আক্তার বলেন, ছয় মাস আগে রাতে তাদের ঘরের দক্ষিন পাশে রান্নাঘরের ভেড়ায় আগুন লাগে। পরে প্রতিবেশিরা এসে নিভিয়ে ফেলে। তাতে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু কেউ লাগিয়েছে কিনা তা তিনি দেখেননি। কিন্তু পরে আগুনে ঘরপুড়ানোর মামলা কেন দিয়েছেন এই প্রশ্নে উত্তর দিতে পারেননি তিনি।

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লাকী আকতার জানান, ঘর পোড়ানোর মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য দিয়ে করা হয়েছে। এখানে আগুনে পুড়ানোর কোন ঘটনা ঘটেনি। ব্যবসায়ী বেলাল উদ্দিন স্থানীয়দের উপস্থিতিতে নুরবানু থেকে এই জমিটি ১৪ লাখ টাকায় ক্রয় করে। পরে নুরবানুর ছেলে এসে আপত্তি জানান। তাতে তাকেও দেওয়া হয় ৮ লাখ টাকা। এর পরে ও ছেলেটি বিভিন্ন ভাবে ব্যবসায়ী বেলাল উদ্দিনকে হয়রানি করে আসছে। এপর্যন্ত চারটি মামলা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ সে তার স্ত্রীকে দিয়ে ঘর পোড়ানোর মামলাটি দেয়। তাদের এই বিরোধ নিয়ে একাধিকবার ইউনিয়ন পরিষদে শালিশ বৈঠক হয়েছে। তাতে একবারও ছেলেটি উপস্থিত হননি।

এই বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার কাজী ইমরান হোসেন বলেন, মামলার বাদী ঘরে আগুন দেওয়ার ভিডিও ও ছবি এনে দিয়েছেন। তাতে আমার কাছে ঘঠনাটি সত্য বলে মনে হয়েছে। সে মোতাবেক আমি প্রতিবেদন দিয়েছি। আমার সাথে আসামিরা দেখা করেছে। তারা ঘটনাটি সত্য নয় বলে জানিয়েছে। আমি তাদেরকে পুন:তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করতে বলেছি।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত