মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মান্নান মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে মুন্সিবাজার এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং এলাকার সার্বিক উন্নয়ন ও জনকল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
গণসংযোগকালে আব্দুল মান্নান বলেন, “আল্লাহ আমাকে যদি এ আসনের দায়িত্ব দান করেন, তবে মৌলভীবাজারের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা অবকাঠামো, কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে পরিকল্পিত উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।”
তিনি জানান, জেলার প্রধান ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি চিকিৎসক সংকট ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে মানসম্মত সেবা দিতে পারছে না। তাই নির্বাচিত হলে হাসপাতালটিকে সর্বাধুনিক সুবিধা-সম্পন্ন চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
অভিবাসী-শ্রমিকদের সমস্যা তুলে ধরে তিনি বলেন, এলাকার বহু তরুণ বিদেশে গেলেও দক্ষতার অভাবে তাদেরকে স্বল্প-দক্ষ শ্রমে নিয়োজিত থাকতে হয়। এজন্য তিনি রাজনগর ও মৌলভীবাজার অঞ্চলে আধুনিক কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন এবং বিদেশগামী কর্মীদের আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার পরিকল্পনার কথা জানান। পাশাপাশি তিনি বিশেষায়িত একটি টেকনিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের কথাও উল্লেখ করেন।
অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে জাকাতভিত্তিক সামাজিক নিরাপত্তা উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন আব্দুল মান্নান। বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, দেশে প্রতিবছর প্রায় দশ হাজার কোটি টাকার জাকাত আদায়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এই অর্থ সুশৃঙ্খলভাবে ব্যবহৃত হলে দরিদ্র পরিবার, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, নারী শ্রমিক, শিক্ষার্থী ও চিকিৎসাসহ বিভিন্ন খাতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
তিনি উদাহরণ হিসেবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পুঁজি সহায়তা, নারীদের সেলাই মেশিন বিতরণ, গবাদিপশু সরবরাহ, পরিবহনমুখী ক্ষুদ্র ব্যবসায় উপকরণ প্রদান এবং অসহায় রোগীদের চিকিৎসা সহায়তার মতো উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।
দুর্নীতি প্রতিরোধের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “দুর্নীতি বন্ধ করা গেলে দেশের অবকাঠামো, গ্রামীণ উন্নয়ন ও জনসেবার মান দ্রুত উন্নত করা সম্ভব।” তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, জনগণ তাকে নির্বাচিত করলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দ্রুতই দৃশ্যমান হবে।
গণসংযোগ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজনগর উপজেলা জামায়াতের আমির আবু রাইয়ান শাহিন, সেক্রেটারি মিজবাউদ্দিন, উপজেলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দ এবং মুন্সিবাজার ইউনিয়ন জামায়াতের দায়িত্বশীলরা। পাশাপাশি শিবিরের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের প্রতিনিধি ও স্থানীয় জামায়াত–সমর্থকরাও অংশ নেন।
এ সময় উপস্থিত বহু স্থানীয় সমর্থক ও বাজার ব্যবসায়ীরা আগামী নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার আশা ব্যক্ত করেন।

