আ.লীগ নেতার অব্যাহত হয়রানি থেকে বাঁচতে চান প্রবাসী দম্পতি

উপজেলা প্রতিনিধি, সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ২০: ০৯

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা নাজিম উদ্দিনের নির্যাতন ও হয়রানি থেকে

মুক্তি চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইতালি প্রবাসী সাহাবুদ্দিন সরকার ও মারজিয়া খাতুন দম্পতি। বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

অভিযুক্ত এই আওয়ামী লীগ নেতার নির্যাতন থেকে রেহাই চেয়ে এই দম্পতি নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। ইতালি প্রবাসী দম্পতি সাহাবুদ্দিন সরকার ও মারজিয়া খাতুন ২৩ বছর প্রবাস জীবনের উপার্জনে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ৬ শতাংশ জমি ক্রয় করে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন ২০১৭ সালে। তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী চাঁদপুর-২ আসনের সাবেক এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ঘনিষ্ঠজন নাজিম উদ্দিন দলীয় প্রভাব বিস্তার করেই ইতালি প্রবাসীর বহুতল ভবনের ঠিকাদারি কাজ গ্রহণ করেন। নিম্নমানের সামগ্রী আর অধিক মূল্য নেয়ায় নাজিম উদ্দিনের মাধ্যমে বাড়ির নির্মাণকাজ না করিয়ে নিজেরাই নির্মাণ করতে চায়। এটাই কাল হয়ে দাঁড়ালো এই প্রবাসী দম্পতির।

প্রবাসী এই দম্পতি জানায়, নাজিম উদ্দিনের কাছ থেকে নির্মাণকাজের দায়িত্ব ফেরত নেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে নাজিম উদ্দিন এই দম্পতিকে শুরু করেন নানা ধরনের হয়রানি, মিথ্যা মামলা, কাজ বন্ধ রাখা, মিথ্যা সংবাদ প্রচারসহ হুমকি-ধমকির মতো অসংখ্য অপকর্ম। ইন্টারনেট-বিদ্যুতের লাইন কেটে দেয়া, পানির পাম্প বসাতে বাধা, বাড়ির আঙিনায় অগ্নিসংযোগ, পিলার ভেঙে ফেলতে বাধ্য করা, পাইলিংয়ের রড কেটে নিয়ে যাওয়া, মিথ্যা সংবাদ প্রচার ও মিথ্যা মামলা দিয়ে বিদেশ যেতে বাধা প্রদানের চেষ্টাসহ ৮ বছর হয়রানিমূলক ঘটনা ঘটিয়েছে নাজিম উদ্দিন।

এই দম্পতির অভিযোগ, নাজিম উদ্দিনের এসব হয়রানি থেকে বাঁচতে অসংখ্যবার সংশ্লিষ্ট থানায় গিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। একাধিকবার সামাজিকভাবে বিচার-সালিশ হলেও কোনো লাভ হয়নি। একসময় হতাশা হয়ে পড়েন এই প্রবাসী দম্পতি। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর স্বস্তির নিশ্বাস নেন সাহাবুদ্দিন সরকার ও মারজিয়া খাতুন। ভেবেছিলেন এবার হয়তো নাজিম উদ্দিনের হয়রানি থেকে মুক্তি মিলবে তাদের। কিন্তু নাজিম উদ্দিন তার হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করেনি।

এই দম্পতি জানান, নাজিম উদ্দিন তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে তাদের বাসায় চুরি ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেয়ায় সাহাবুদ্দিন সরকারকে ফোন করে ইতালি থেকে দেশে আসার পর আর বিদেশে যেতে দেবেন না এবং তাকে গুম করার

হুমকিও দেন নাজিম উদ্দিন।

মারজিয়া খাতুন বলেন, আমরা প্রবাসে পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করি। সেই টাকা দেশে পাঠাই। আমরা দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধা। দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছি। তাহলে আমরা কেন নিজ দেশের মানুষের হয়রানির শিকার হবো? আমারা তো কারো ক্ষতি করছি না। আমরা কি শান্তিতে দেশে এসে বসবাস করতে পারবো না?

সাহাবুদ্দিন সরকার বলেন, আমরা নাজিম উদ্দিনের হয়রানি থেকে রেহাই পেতে অসংখ্যবার থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। পুলিশ আমাদের কোনো সহযোগিতা করেনি। কারণ নাজিম উদ্দিন আ.লীগ নেতা ছিলেন। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ঘনিষ্ঠ হওয়ায় পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। প্রভাব খাটিয়ে সে আমাদের ওপর ৮ বছর নির্যাতন চালিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও সে আমাদের হয়রানি করেই যাচ্ছে। আমরা সরকার এবং রাষ্ট্রের কাছে এর প্রতিকার চাই।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত