ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র গ্রহণে দেরি করা ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিএনপির প্রার্থীর সাথে ইউএনওর উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডার জের ধরে সোমবার বিকেলে পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
তবে সোমবার এ ঘটনার পর থেকেই উপজেলা নির্বাহী কর্মমকর্তার অপসারণ দাবি করছেন বিএনপির প্রার্থী নুর ইসলাম মনি । তবে ইউএনও ইসরাত জাহান স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন, তাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এ নিয়ে পুরো উপজেলা জুড়ে এখনো টান টান উত্তেজনা ও উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
ঘটনার সময় উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি জানান, বিএনপির প্রার্থী মনি মনোনয়নপত্র জমা না দিয়ে ভবনের নিচে পৌঁছানোর পর অপেক্ষমাণ নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ইউএনওর কক্ষে ঢুকে যান। তারা ইউএনওর চারপাশে অবস্থান নিয়ে তাকে ঘিরে রাখেন এবং নানান স্লোগান দেন। এ সময় তারা ইউএনওর সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করে তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে নৌবাহিনী ও অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। এদিকে বিক্ষোভ শেষে বিএনপি নেতাকর্মীরা উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে এক তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে আবারো ইউএনও ইশরাত জাহানের অপসারণ দাবি জানানো হয়।
এ বিষয়ে বরগুনা- ২ (পাথরঘাটা-বেতাগী- বামনা) আসনে বিএনপির প্রার্থী নুর ইসলাম মনি আমার দেশকে বলেন, ইউএনও শুরু থেকেই পক্ষপাতিত্ব আচড়ণ করছেন। গত ১৭ ডিসেম্বর জামায়াত উপজেলা লাগোয়া চৌরাস্তা এলাকায় লাঠি মিছিল ও সমাবেশ করে। দু’দিন পর আমার নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় এউএনও আমাকে ফোন করে বিক্ষোভ মিছিল বন্ধ করার জন্য বলেন। কিন্তু দুদিন আগে জামায়াত লাঠিমিছিল ও সমাবেশ করলো তা নিয়ে টু’শব্দ করলেন না ইউএনও।
তিনি বলেন, সোমবার বেলা আড়াইটায় মনোনয়নপত্র জমা দিতে ইউএনও দপ্তরে যান। এ সময় ইউএনও তার পার্সোনাল রুমে গিয়ে ত্রিশ মিনিটেরও বেশি সময় ব্যয় করেন। পরে তিনি বের হয়ে নির্ধারিত লোকের চেয়ে বেশি লোক ঢুকেছে দাবি করে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। এতে বিএনপির প্রার্থী নিজেকে অপমানিত বোধ করে মনোনয়ন জমা না দিয়েই নিচে নেমে যান। পরে তার সাথে থাকা বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা ইউএনওর অপসারণ দাবি করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তিনি নউপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পক্ষপাতদুষ্ঠ আখ্যায়িত করে তার মাধ্যমে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, সোমবার বিএনপির প্রার্থী তার মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার সময় তিনি চেয়ারেই বসা ছিলেন। তখন বিএনপির প্রার্থী শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে পরিষদ চত্বরে ঢোকেন। তাদেরকে অফিসের নিচতলায় রেখে ৭ থেকে ৮ জন সঙ্গে নিয়ে আমার কক্ষে আসেন। কিন্তু তার সঙ্গীরা মনোনয়নপত্র আনতে দেরি করায় তিনি অপেক্ষা করেন। তখন তার কক্ষে ৫ জনের অধিক না থাকার জন্য তাকে অনুরোধ করা হয়। এতে প্রার্থী মনি ক্ষিপ্ত হয়ে শত শত লোক দিয়ে সরকারি কাজে বিঘ্ন ঘটিয়েছেন। আমাকে লাঞ্ছিত করেছেন।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

