সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ভারি কুয়াশা আর হিমালয় থেকে নেমে আসা হিম বাতাস পঞ্চগড়ের শীতার্ত মানুষের শীতের আমেজকে আরো কনকনে করে তুলেছে। অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহ জনজীবনে দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
টানা সপ্তাহজুড়ে তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে বিরাজ করছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আগামী সপ্তাহে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এক অঙ্কে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে হিমেল বাতাসে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষ। ভোরের হাড়কাঁপানো ঠান্ডা উপেক্ষা করে কাজে বের হওয়া ক্রমেই কষ্টকর হয়ে উঠছে। বিশেষ করে নদী-নির্ভর মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। নদীর ঠান্ডা পানিতে নামতে না পারায় পাথর সংগ্রহ বন্ধ হয়ে গেছে। তেঁতুলিয়া থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত মহানন্দা নদী থেকে পাথর সংগ্রহ করে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের জীবিকা চলে, যা শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বুধবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। গতকাল মঙ্গলবার একই সময়ে তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন ছিল। যদিও আজ ঘন কুয়াশা নেই, ভোরে হালকা কুয়াশা দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদ ওঠায় কিছুটা দুর্ভোগ কমে আসে। গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং তার আগের দিন ছিল ২৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগও। রাস্তাঘাট, বাড়ির সামনে, চা-স্টলের পাশে খড়কুটো জ্বালিয়ে অনেকে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষদের ঠান্ডা ও কুয়াশার সঙ্গে লড়াই করেই দিন কাটাতে হচ্ছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গবাদিপশুও আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে।
শহরের স্টেডিয়াম মার্কেটের সামনে পিঠার দোকানি কমলা বেগম বলেন, ‘ভোরে কাজে বের হতে গেলেই হাত-পা বরফের মতো ঠান্ডা লাগে। কাজেও ঠিকমতো মন বসে না।’
আলবাইক বেকারির শ্রমিক মেহেরুল হক সম্রাট বলেন, ‘সকালে কুয়াশার ভেতর কাজে আসতে খুব সমস্যা হয়। শীতে গা-হাত জমে আসে।’

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, গত ছয় দিন ধরে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ঘরে ঘোরাফেরা করছে। ডিসেম্বরের শুরুতেই এমন আবহাওয়া দেখা দেওয়ায় সামনের দিনগুলোতে শৈত্যপ্রবাহ আরো জোরদার হতে পারে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক কাজি সায়েমুজ্জামান জানান, ইতোমধ্যে জেলার শীতকবলিত মানুষের মাঝে ৩০ লাখ টাকার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে।


রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে সিইসি
কে কোন আসনে লড়বেন এনসিপির আলোচিত নেতারা