ঈদের টানা ছুটিতে আমের বাজারে ধস, বিপাকে চাষি

মঈন উদ্দিন, রাজশাহী
প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৫, ০৯: ০৩

কোরবানির ঈদের ব্যস্ততা আর দীর্ঘ ছুটির প্রভাবে দরপতন ঘটতে শুরু করেছে আমের বাজারে। তাই ভরা মৌসুমে রাজশাহী অঞ্চলের আমচাষিরা পড়েছেন বিপাকে। ফলন ভালো হলেও ছুটির কারণে কুরিয়ার সার্ভিস বন্ধ থাকায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো যায়নি আম। এতে স্থানীয় বাজারেও কমছে দাম।

রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম সাধারণত মে মাসের শেষ সপ্তাহে গোপালভোগ জাতের আম দিয়ে শুরু হয় বেচাকেনা। এরপর জুনের প্রথম সপ্তাহে ক্ষীরসাপাত, দ্বিতীয় সপ্তাহে ল্যাংড়া আম আসে বাজারে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিমণ আমের দাম ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কমেছে জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, আম পরিবহন ও বাজারজাতের অন্যতম ব্যবস্থা কুরিয়ার সার্ভিস। ঈদ উপলক্ষে ৫ জুন থেকে ৯ জুন সব ধরনের সরবরাহ বন্ধ ছিল। ৪ জুন থেকে বন্ধ হয়ে যায় আমের বুকিং নেওয়া। এতে থমকে গেছে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো আমের বিশাল অনলাইন মার্কেটিং।

আমচাষি মনিরুল ইসলাম জানান, ২২ মে আম নামে বাজারে। গত ১ জুন থেকে এ অঞ্চলে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে আমবাজার জমে ওঠে। শুরুতে বাজারে ওঠে গোপালভোগ আম। বাজারদর ১৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা। এদিন ক্ষীরশাপাতি আমও আসে বাজারে। শুরুতেই ক্ষীরশাপাতি প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছিল ২০০০ টাকার ওপরে। দুদিন পর ৩ জুন বিক্রি হয় ২২০০ থেকে ২৮০০ টাকা মণ দরে। আর ল্যাংড়া বিক্রি হয় ১৪০০ থেকে ২৪০০ টাকা মণ।

তিনি আরো জানান, কোরবানির ঈদমুখী ব্যস্ততা ও অফিস-আদালতে দীর্ঘ ছুটির প্রভাবে আমের দাম কমে যায়। ৮ জুন বাজারে ক্ষীরশাপাতি ১৬০০ থেকে ২৪০০ টাকা মণ এবং ল্যাংড়া প্রতিমণ ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজশাহীর বাঘা এলাকার আমচাষি আসলাম আলী জানান, ক্ষিরসাপাতি, গোপালভোগ জাতের আমের এখন ভরা মৌসুম। পুরো গাছ পাকা আমে পরিপূর্ণ; কিন্তু ঈদের ছুটির কারণে পাড়তে পারিনি। মঙ্গলবার থেকে কুরিয়ার সার্ভিস চালু হওয়ার পর আম নামানো শুরু হয়েছে।

এ অঞ্চলের আমচাষিরা বলেন, আমের তো ছুটি হয় না, সময় হলে পেকে ঝরে পড়বে। আম, কৃষিপণ্য, কাঁচামাল পরিবহন ঈদের ছুটিতেও ডাক বিভাগের জরুরি পরিষেবার আওতায় বিশেষ ব্যবস্থায় চালু রাখা দরকার ছিল।

নগরীর আমের আড়তদার নাসির উদ্দিন বলেন, বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যা কম, বেচাবিক্রিও কম হচ্ছে। ঈদের আগে দুদিন এবং ঈদের পরে তিন দিনÑএই ৫-৭ দিন পর আবার বাজার ঠিক হয়ে যাবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, আম পরিপক্ব হলে বেশিদিন গাছেও রাখা যায় না, আবার সংরক্ষণও করা যায় না। এ কারণে ঈদের ছুটিতে কিছুটা বিপাকে পড়তে হচ্ছে চাষিদের। এ জন্য ছুটির সময়টায় গাছ থেকে আম না পাড়াই ভালো।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত