কাউখালীতে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে দেশি মাছ নিধনের হাতিয়ার

উপজেলা প্রতিনিধি, কাউখালী (পিরোজপুর)
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৫, ২৩: ২০

বর্ষায় নতুন পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে খাল-বিল, নদ-নদীতে দেখা মেলে নানা প্রজাতির দেশীয় মাছের আনাগোনা। আর এসব মাছ ধরতে ব্যবহার হয় 'চাই' বা 'দুয়ারি' অথবা 'খাদোইন'।

বিজ্ঞাপন

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা দক্ষিণ বাজারে জমে উঠেছে এসব মাছ ধরার চাইয়ের হাট। সপ্তাহে দুদিন এ বাজারে হাজার হাজার মাছ ধরার চাই খুচরা ও পাইকারি দরে বিক্রি হয়।

জানা যায়, কাউখালী উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার বহু পরিবার চাই ও দুয়ারি তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। বর্ষা মৌসুমের ছয় মাস তারা মাছ ধরার ফাঁদ তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকেন।

বিভিন্ন জাতের বাঁশ দিয়ে এগুলো তৈরি করা হয়। একটি বাঁশ দিয়ে সাত থেকে আটটি চাই তৈরি করা যায়। তবে একজন কারিগর দিনে পাঁচ থেকে ছয়টির বেশি চাই তৈরি করতে পারে না। প্রতি সোম ও শুক্রবার কাউখালী সদরের দক্ষিণ বাজারে মাছ ধরার চাই বিক্রি হয়।

প্রকারভেদে বাজারে এক কুড়ি চাই দুই হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। এক পিস চাই ১২০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এসব চাই তৈরির একটি বাঁশ কিনতে লাগে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। এতে ছোট মাছসহ বেশির ভাগ চিংড়ি মাছ আটকা পড়ে।

চাই তৈরির কারিগর আব্দুর রশিদ জানান, তার পরিবারের সবাই মিলে বর্ষা মৌসুমের ছয় মাস চাই তৈরির কাজ করেন। বাঁশ কেনা থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ চাই তৈরি করতে যে কষ্ট আর খরচ হয়, সে তুলনায় লাভ বেশি হয় না। তবে এ শিল্প এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।

এ ব্যাপারে কাউখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান জানান, মে মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত প্রতিটি মাছের পেটেই ডিম থাকে। এই মা মাছ না ধরার জন্য জেলেদের নানা ধরনের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান- সেইসঙ্গে সরকারিভাবে প্রণোদনাও দেওয়া হয়।

মাছ শিকারে জেলেরা বিভিন্ন ধরনের অবৈধ ফাঁদ বা জাল ব্যবহার করেন। এগুলো দমনে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মাঝেমধ্যেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। অবৈধ জাল দিয়ে মাছ শিকারের কারণে দেশীয় মাছ বিলুপ্তির পথে।

কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল মোল্লা বলেন, 'আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। অবৈধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।'

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত