চরফ্যাশনে শিক্ষক গেজেটভুক্তির দ্বন্দ্বে বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত

উপজেলা প্রতিনিধি, (চরফ্যাশন) ভোলা
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০২: ২৭

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মুজিবনগর ইউনিয়নের চরলিউলিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত একজন সহকারী শিক্ষককে বাদ দিয়ে চূড়ান্ত গেজেটে আরেকজনের নাম অন্তর্ভুক্ত চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে এক শিক্ষক গেজেটভুক্তির দ্বন্দ্বের কারণে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থী অভিভাবকরা চূড়ান্ত গেজেটে দীর্ঘ বছর কর্মরত শিক্ষক রফিকুল ইসলামের নাম অন্তর্ভুক্ত করে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন দূর করার দাবি জানিয়েছেন।

ওই বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক রেশমা বেগম ও মরিয়মসহ স্থানীয়রা জানান, ২০০৯ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। এর শিক্ষক খসড়া গেজেট হয় ২০১৭ সালে। খসড়া গেজেটে সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলামসহ বিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষকের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু ২০১১ সালে অব্যাহতি নেয়া শিক্ষক আমেনা বেগম গেজেট প্রকাশের আগে পদ দাবি করায় ২০১৮ সালে চূড়ান্ত গেজেটে প্রধান শিক্ষকসহ তিনজন শিক্ষক গেজেটভুক্ত হন। বাদ পড়েন রফিকুল ইসলাম। এতে রফিকুল ইসলাম হাইকোর্টে রিটপিটিশন দায়ের করেন।

বিজ্ঞাপন

রফিকুল ইসলামের অভিযোগ, হাইকোর্টে রিট পিটিশন চলমান অবস্থায় প্রধান শিক্ষকের যোগসাজশে ভোলা জেলা শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে একটি প্রতিবেদন দেন। এ কারণে গত ১১ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ভূপেষ রঞ্জন রায় সহকারী শিক্ষক দাবিদার আমেনা বেগমের চাকুরি গেজেটভুক্ত করণ এবং মামলার রায় বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামতসহ সুপারিশ প্রেরণের নির্দেশ দেন। রফিকুল ইসলাম বলেন, মামলা নিষ্পত্তি না হতে প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টরা অবৈধভাবে আমেনা বেগমের নাম চূড়ান্ত গেজেটে অর্ন্তভুক্তের পাঁয়তারা করছে। আমি এর প্রতিকার চাই।

আমেনা বেগম জানান, আমার অব্যাহতি নেয়ার অভিযোগটি সঠিক নয়।

বিদ্যালয়ের তৎকালীন সভাপতি আবদুল মালেক ব্যাপারী জানান, ২০১১ সালের ২৬ ডিসেম্বর আমেনা বেগম অব্যাহতি নেয়ার পর ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি রফিকুল ইসলামকে উক্ত পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমেনা বেগম এপদ দাবি করা অযৌক্তিক।

প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম জানান, আমেনা বেগমকে সহযোগিতার প্রশ্নই ওঠে না। রফিকুল ইসলাম হাইকোর্টে রিট করেছে। আমি আমেনার পক্ষে কোথাও কাগজপত্র দেইনি।

চরফ্যাশন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, আমার কাছে সার্টিফাইড কপি এবং ইনফরমেশন স্লিপ চেয়েছে। রফিকুল ইসলাম মামলা করেছে বিষয়টি আমি জানি। এগুলো পাঠানোর সময় আমি মামলার বিষয়টি উল্লেখ করে দিব।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি প্রতিবেদনে রফিকুল ইসলামের দায়ের করা মামলা চলমান আছে তা উল্লেখ করে দিবো। মামলা নিস্পুত্তি না হতে প্রতিবেদন দিতে পারেন কি না এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান এ কর্মকর্তা।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি এন্ড অপারেশন বিভাগ) ভূপেষ রঞ্জন রায় বলেন, রফিকুল ইসলামের হাইকোর্টে রিটের বিষয়টি আমি জানি না। এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উল্লেখ না করলে এর দায়ভার তার।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত