স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত

হাতিকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আহত ১৫ বনকর্মী-চিকিৎসক

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার
প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০২৫, ০০: ৩৪
আপডেট : ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১২: ৩২

পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মায়ানমারের স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হাতিকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন বাংলাদেশি চিকিৎসকসহ বন বিভাগের ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আহতদের মধ্যে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন হাতেম সাজ্জাদ জুলকারনাইন ও গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মো. মোস্তাফিজুর রহমান রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

গুরুতর আহতদের মধ্যে হাতেম সাজ্জাদ জুলকারনাইন ও মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে, রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অন্যরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কক্সবাজারের রামু উপজেলার রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ জানান, পার্বত্য উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়ির বন রেঞ্জ থেকে খবর আসে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হাতিটি বর্তমানে রামু উপজেলার দারিয়ারদীঘি সংরক্ষিত বনে অবস্থান করছে। সেই খবরের প্রেক্ষিতে শুক্রবার একদল চিকিৎসকসহ বন বিভাগের ১৫ সদস্যের একটি দল নিয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ দারিয়ারদীঘি সংরক্ষিত গভীর বনে যান।

তিনি জানান, ওই সময় কিছু বুঝে উঠার আগে হঠাৎ পেছন থেকে সবার ওপর আক্রমণ করে আহত হাতিটি। এতে ১৫ জন সবাই আহত হন।

রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ বলেন, হাতিটি আক্রমণ করে একটি বন্দুকও কেড়ে নিয়ে বনের ভেতর ফেলে দিয়েছিল। পরে অনেক খুঁজাখুঁজি করে বন্দুকটি উদ্ধার করতে পেরেছি।

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি আহত হাতিটি যাতে সুচিকিৎসা পায়। চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে বনকর্মীরা আহত হলেও এখন হাতিটির গতিবিধি আমরা লক্ষ্য রাখছি।

আহত বন কর্মীদের কয়েকজন জানান, মাইন বিস্ফোরণে হাতিটির সামনের ডান পা প্রায় অবশ হয়ে পড়েছে। ওই পায়ের তলা ও নখ উড়ে গেছে। বাকি তিনটি পায়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হচ্ছে।

তাদের মতে, পায়ের ক্ষতের যন্ত্রণা নিয়ে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠছে হাতিটি।

গত রোববার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে হাতিটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, রক্ত ও পানিশূন্যতায় হাতিটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। হাতিটির দীর্ঘমেয়াদে নিবিড় পরিচর্যা দরকার।

বন বিভাগের নাইক্ষ্যংছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক সরকার সাংবাদিকদের বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের মিয়ানমারের অংশে পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে হাতিটি আহত হয়। আহত অবস্থায় সেটি রোববার রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের জারুলিয়াছড়ি ও আশারতলির মাঝামাঝি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত