জবি ছাত্রী অবন্তিকার আত্মহত্যা

সহপাঠী আম্মানের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল

জেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৩: ৫৮

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ ওরফে অবন্তিকার আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। অভিযোগ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, গত রোববার দুপুরে কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে দায়ের করা মামলার চার্জশিট দাখিল করেছেন। অবন্তিকার মায়ের করা মামলায় দুজনকে আসামি করা হলেও তদন্তে জবির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ ২৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অবন্তিকার মোবাইল ফোন থেকে প্রাপ্ত ছবি, স্ক্রিনশট, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের ক্ষুদেবার্তা এবং ফেসবুকে দেওয়া ‘সুইসাইড নোট’ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্টে আম্মানের পাঠানো মানসিক হয়রানিমূলক বার্তার প্রমাণও মিলেছে, যা অবন্তিকাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে ।

বিজ্ঞাপন

সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে মামলা থেকে অব্যাহিত দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অবন্তিকার মা ও মামলার বাদী তাহমিনা বেগম শবনম। তিনি বলেন, মেয়ের মৃত্যুর নেপথ্যে জড়িতরা শাস্তি পাওয়া নিয়ে আগেই সংশয় প্রকাশ করেছিলাম। অবন্তিকা মৃত্যুর আগে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে দ্বীন ইসলামকে অভিযুক্ত করে গেছে। এরচেয়ে বড় সাক্ষী আর কী হতে পারে? তাহলে পুলিশের তদন্তে দ্বীন ইসলাম কীভাবে বাদ পড়ল?

গত বছরের ১৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন বাসায় ফ্যানের সঙ্গে অবন্তিকার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর আগে ফেসবুক পোস্টে আত্মহত্যার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে দায়ী করেন তিনি। তাদের বিরুদ্ধে হয়রানি ও উৎপীড়নের নানান অভিযোগ করে সুইসাইড নোট লিখে যান অবন্তিকা।

ঘটনার পরদিন ১৬ মার্চ রাতে অবন্তিকার মা তাহমিনা বেগম শবনম বাদী হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম এবং অবন্তিকার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ১৭ মার্চ তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করে কুমিল্লা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। গ্রেপ্তারের পর দুজনই পরবর্তীতে জামিনে মুক্ত হন।

এদিকে ওই সময় অবন্তিকাকে যৌন হয়রানি করা শিক্ষার্থীকে সহায়তা করায় দ্বীন ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত ও প্রক্টরিয়াল বডি থেকে অব্যাহতি দেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত