সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ

কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে এক বছরে ঝরেছে ৪০ প্রাণ

এম হাসান, কুমিল্লা
প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১১: ২৪

কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় সড়কটিতে ঝরছে প্রাণ। আহত হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে অনেকে। মহাসড়কের ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট থেকে কালামুড়া ব্রিজ পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ অংশে গত এক বছরে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৪০ জন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো শতাধিক যাত্রী। যাদের মধ্যে অনেকেই চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা যায়, দুই লেনবিশিষ্ট মহাসড়কটি সরু ও আঁকাবাঁকা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অতিরিক্ত গাড়ির চাপ, অদক্ষ চালক ও গাড়ির বেপরোয়া গতি। এছাড়া নেই আইনের যথেষ্ট প্রয়োগ। এসব কারণেই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অন্যতম ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটিতে প্রতিদিন হাজারো মানুষ যাতায়াত করেন। রাজধানীর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপনকারী এ রাস্তাটি শুধু কুমিল্লা বা সিলেট নয়, আশপাশের একাধিক জেলার মানুষের জীবন-জীবিকার অন্যতম ভরসা। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আজ মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সিলেট যেতে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ধরে যেতে হয়, যা দুই লেনবিশিষ্ট মহাসড়ক এবং ৪ লেনে উন্নীত করার চেষ্টা চলছে। এই প্রকল্পের মূল অংশ ময়নামতি সেনানিবাস থেকে ধরখার পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার সড়ক ৪ লেনে উন্নীত করার কথা থাকলেও প্রকল্পটি বাতিল হয়ে যায়।

ারতের সঙ্গে চুক্তি বাতিল হওয়ার কারণে এ প্রকল্পটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। নতুন করে কখন প্রকল্প নেওয়া হবে তা বলতে পারছে না সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। তবে নতুন করে সড়কটিকে ৪ লেনে উন্নীত করার একটি প্রকল্প করা হলে তার আনুমানিক ব্যয় হবে প্রায় ৭ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। আজ বুধবার স্থানীয়রা মহাসড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করার জন্য মানববন্ধনের আয়োজন করেছে।

শাহজালাল আল-নাগর নামে এক সমাজকর্মী বলেন, ক্যান্টনমেন্ট থেকে কংশনগর বাজার পর্যন্ত ময়নামতি, দেবপুর, রামপুর, পারুয়ারা, পশ্চিম সিংহ ও কংশনগর এবং জাফরগঞ্জ জায়গাগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অদক্ষ এবং লাইসেন্সবিহীন চালকদের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে মনে করেন তিনি।

বুড়িচং উপজেলা দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহীদুল্লাহ প্রধান আমার দেশকে বলেন, রাস্তাটি এত পরিমাণে সরু যে দুটি বাস একসঙ্গে ক্রসিং করতে পারে না। মূলত ওভারটেকিংয়ের সময় দুর্ঘটনাগুলো ঘটে।

ময়নামতি হাইওয়ে থানার ইনচার্জ ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, দুই লেনের রাস্তা হওয়ায় দুর্ঘটনার পরিমাণ বেশি। 

কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, রোডটি ৪ লেনে উন্নীত করার জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চলছে।

সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, হঠাৎ করে মানববন্ধন করলে জনগণের ভোগান্তি হবে। ভারতের সঙ্গে প্রকল্প বাতিল হয়েছে, তাতে সমস্যা নেই। আমরা দাতা সংস্থা খুঁজছি। না পেলে সরকারি অর্থায়নে করা হবে। তিনি আরো বলেন, এখন বর্ষাকাল হওয়ায় কাজ ভালো হবে না। দুই মাস পরে কাজ করা হবে, তবে এখন সংস্কার হবে বলে জানান তিনি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত