যুবদলকর্মীকে ৬ মিনিটেই হত্যা করে চলে যায় ছয় সন্ত্রাসী

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৫, ১৪: ১৭
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৫, ১৪: ১৭

অটোরিকশায় আসেন ৬ জন। তিনজনের পরনে ছিল বোরকা। বাকি তিনজনের মধ্যে দুজন টিশার্ট-জিন্স, অন্যজন শার্ট-জিন্স ও মাথায় ক্যাপ পরে আসেন। ৬ জনের মধ্যে ৪ জনের হাতে ছিল শর্টগান, বাকি দুজনের ছিল পিস্তল।

বিজ্ঞাপন

রাউজানে ইউনিয়ন পর্যায়ের যুবদল নেতা মুহাম্মদ সেলিমকে মাথায় গুলি করার আগে এভাবেই অস্ত্রসজ্জিত হয়ে আসেন সন্ত্রাসীরা। সিসিটিভি ফুটেজে এমনই দৃশ্য দেখা গেছে।

রোববার দুপুর দুইটার দিকে উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের ইশানভট্ট বাজারে ওই যুবদল নেতা হত্যার শিকার হন। নিহত সেলিম একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সমশেরপাড়া গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে।

পুলিশ জানিয়েছে, সেলিমের মুখে গুলি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে পুলিশ। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দুপুর ২টা ৪ মিনিটে একটি সিএনজি অটোরিকশা, যেটির সামনে হলুদ ও পেছনে সবুজ রঙ, এসে থামে। অটোরিকশা থেকে প্রথমে নামেন টিশার্ট জিন্স পরা এক ব্যক্তি। তার সঙ্গে ছিল একটি শর্টগান। তার সঙ্গে নামেন দুজন একজন বোরকা পরা, অপরজন নীল রঙের টিশার্ট পরা। নীল রঙের টিশার্ট পরা ব্যক্তির হাতে একটি পিস্তল দেখা গেছে। সিএনজির অপর অংশ থেকে নামেন আরও তিনজন।

এর মধ্যে দুজন বোরকা পরা, বাকিজন টিশার্ট, জিন্স ও ক্যাপ পরা। এর মধ্যে বোরকা পরা দুজনের কাছে পিস্তল ও গুলি রাখার ব্যাগ দেখা গেছে। বাকিজনের কাছে ছিল শর্টগান। তারা অবস্থান করে ৬ মিনিটের মতো। তারপর গুলি করে দ্রুত চলে যেতে দেখা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে মুহাম্মদ সেলিম তাঁর বাড়ির তিন কিলোমিটার দূরে ইশানভট্টের হাটে একটি দোকানের সামনে বসে ছিলেন। এ সময় হঠাৎ একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে ছয়জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে। এ সময় ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের পর অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে সন্ত্রাসীরা এলাকা ত্যাগ করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের এসপি মো. সাইফুল ইসলাম আমার দেশকে বলেন, রাউজানে হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূল হোতা রায়হান নামে এক সন্ত্রাসী। তিনি মূলত অস্ত্রের জোগানদাতা। আজকের হত্যায়ও তার জড়িত থাকার কথা বলেছেন হত্যার শিকার হওয়া যুবকের স্ত্রী। তাকে দেড় মাস ধরে আমরা অনুসরণ করছি। যখনই অভিযানে নামি তখনই পাহাড়ে গহিনে চলে যায় সে। পাহাড় তো আর আমাদের না। সেটি সেনাবাহিনীর অধীনে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনীতির হস্তক্ষেপে আমরা কান দিই না। আমরা আইন অনুযায়ী চলছি। সে অনুযায়ী আসামিদের গ্রেপ্তার করছি।

রাউজানে গত ৫ আগস্টের পর সহিংসতায় মোট ১৩টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ১০টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয় অন্তত শতাধিকবার। তিন শতাধিক মানুষ এসব ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত